কমোডিটি এক্সপার্ট এবং কেডিয়া অ্যাডভাইজরির ডিরেক্টর অজয় কেডিয়া বলছেন, "কয়েক বছরের ট্রেন্ড লক্ষ্য করলে দেখা যাবে যে, সোনা বার্ষিক প্রায় ১০ শতাংশ রিটার্ন দিয়েছে। অর্থাৎ যদি এক জন ১ লক্ষ টাকার সোনা কেনেন, তাহলে এক বছরে তাঁর রিটার্ন বেড়ে ১.১০ লক্ষ টাকা হয়ে যায়। পাঁচ বছরের পরিসংখ্যানে চোখ বোলালে দেখা যাবে, সোনায় বিনিয়োগকারী ব্যক্তি বছরে ৯.৫ শতাংশ রিটার্ন পেয়েছেন।"
advertisement
আরও পড়ুন: কিছু শহরে বাড়ল তো কিছু শহরে কমল! আপনার শহরে কত হল পেট্রোল ও ডিজেলের দাম
অর্থাৎ, এই পাঁচ বছরে যদি এক জন প্রতি বছর ১ লক্ষ টাকার সোনা কিনতেন, তাহলে তাঁর মোট বিনিয়োগ হত ৫ লক্ষ টাকা, যেখানে রিটার্ন ৬.৬২ লক্ষ টাকায় পৌঁছে যেত। গোল্ড গত পাঁচ বছরের মধ্যে চারটি ইতিবাচক রিটার্ন দিয়েছে।
তবে করোনার সময় সরবরাহে বাধার কারণে সোনার দাম পড়ে যায়। অন্য দিকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি-মার্চে রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সোনার বাজার চাপে ছিল। তা সত্ত্বেও, গত এক বছরের আয়ের দিকে তাকালে দেখা যাবে, বিনিয়োগকারীরা গত ধনতেরস বা দীপাবলিতে যে এক লক্ষ টাকার সোনা কিনেছেন, এই সময়ে তা প্রায় ৬ শতাংশ রিটার্ন দিয়েছে।
আরও পড়ুন: আরবিআই আনছে ডিজিটাল রুপি! ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট না থাকলেও চলবে, জেনে নিন
বাজারের দিকে চোখ রাখা যাক:
সোনার তুলনায় ইক্যুইটিতে বিনিয়োগে একই সময়ে বেশি রিটার্ন মিলেছে। নিফটি সূচক গত পাঁচ বছরে গড় বার্ষিক ১২ শতাংশ রিটার্ন দিয়েছে। অর্থাৎ, এই পাঁচ বছরে যদি কোনও বিনিয়োগকারী প্রতি বছর দীপাবলিতে ১ লক্ষ টাকা নিফটিতে বিনিয়োগ করে থাকেন, তবে এখনও পর্যন্ত তাঁর মোট বিনিয়োগের পরিমাণ ৫ লক্ষ টাকা হত, যেখানে মোট রিটার্ন ৭.১০ লক্ষ টাকায় পৌঁছে যেত। তথ্য বলছে, গত পাঁচ বছরে ইক্যুইটিগুলি সোনার তুলনায় ৫০ হাজার টাকা বেশি রিটার্ন দিয়েছে।
তবে ইক্যুইটিতে বেশি ঝুঁকি রয়েছে বলে মনে হলে সোনার পারফরমেন্সও ভালো। কিন্তু যদি বিনিয়োগের মেয়াদ বাড়িয়ে ১০ বছর করা হয়, তা-হলে স্বচ্ছন্দে জিতে যাবে ইক্যুইটিই। যে বিনিয়োগকারীরা গত ১০ বছরে ইক্যুইটিতে টাকা রেখেছেন, তাঁরা ১২ শতাংশ হারে রিটার্ন পেয়েছেন। সেখানে এই সময়ে সোনার গড় রিটার্ন ৭ শতাংশের আশপাশে।
আগামী দীপাবলিতে সোনার দাম কত হতে পারে:
কমোডিটি বিশ্লেষক যতীন ত্রিবেদী বলছেন, আগামী এক বছরে সোনা ভালো রিটার্ন দিতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। পরের বছর দীপাবলিতে প্রতি ১০ গ্রাম সোনার দাম ৫৪ থেকে ৫৬ হাজার টাকা পর্যন্ত যেতে পারে। বর্তমানে স্পট মূল্য প্রায় ৫১ হাজার। আর্থাৎ বিনিয়োগকারীরা আগামী দীপাবলি পর্যন্ত প্রতি ১০ গ্রামে প্রায় ৫ হাজার টাকা লাভ করতে পারেন।
বাজি ধরা উচিত:
আইআইএফএল সিকিউরিটিজের কমোডিটি রিসার্চের প্রধান অনুজ গুপ্ত বলেছেন, বর্তমানে সারা বিশ্বেই মুদ্রাস্ফীতি চরমে। এই আবহে প্রায় সব বিনিয়োগ মাধ্যমের রিটার্নই প্রভাবিত হবে। মন্দার আশঙ্কা বেড়ে যাওয়ায় ইক্যুইটি বাজারেও চাপ থাকবে বলা ধারণা করা হচ্ছে। এই সমস্ত কারণের দিকে তাকালে মনে হয়, সোনার আউটলুক ভাল। আগামী এক বছরেও ভাল পারফর্ম করতে পারে। বাজারের ক্রমবর্ধমান অনিশ্চয়তার পরিপ্রেক্ষিতে বিনিয়োগকারীদের নিরাপদ আশ্রয় হয়ে উঠতে পারে এই হলুদ ধাতুই।