ডেরিভেটিভস পোর্টফোলিওতে গড়মিলের কথা স্বীকার করে নিয়েছে ইন্ডাসইন্ড ব্যাঙ্ক। তারপর একদিনেই ব্যাঙ্কের শেয়ার দর ২০ শতাংশ কমে যায়। অভ্যন্তরীণ পর্যালোচনায় উঠে এসেছে, ইন্ডাসইন্ড ব্যাঙ্ক বিদেশি মুদ্রা লেনদেনের (ফরেক্স) হেজিং খরচ কমিয়ে দেখিয়েছে। যার ফলে ১,৬০০ থেকে ২,০০০ কোটি টাকার প্রভব পড়তে পারে। ব্যাঙ্কের মোট সম্পদের হিসেবে এটি প্রায় ২.৩৫ শতাংশ ক্ষতি।
advertisement
আরও পড়ুন– ৩৮ বছর আগে…! প্রকাশ্যে এল সন্ত প্রেমানন্দ মহারাজের অনেক আগের কথা
হিসেবে গড়মিল সামনে আসতেই চাঞ্চল্য ছড়ায়। বিনিয়োগকারীরাও আস্থা হারান। বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, ব্যাঙ্কের দুর্বল শাসনব্যবস্থা এবং কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণ না থাকার কারণেই এমনটা ঘটেছে। এখন ব্যাঙ্কের উচিত, এই বিষয়ে প্রকাশ্যে কৈফিয়ত দেওয়া। নাহলে বিনিয়োগকারীদের আস্থা আরও কমতে পারে।
এই ঘটনার ফলে সবচেয়ে ক্ষতি হয়েছে ইন্ডাসইন্ড ব্যাঙ্ক এবং বিনিয়োগকারীদের। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত এক বছরে ব্যাঙ্কের শেয়ার ৪২ শতাংশের বেশি পড়েছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই গড়মিল কোনও গভীর সমস্যার ইঙ্গিত দিচ্ছে।
২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর নাগাদ নতুন ডেরিভেটিভস নির্দেশিকা জারি করে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। সেই সময়ই গড়মিল ধরা পড়ে। তবে ১০ মার্চ বোর্ড মিটিংয়ের পর এই বিষয়টা প্রকাশ্যে আনে ইন্ডাসইন্ড ব্যাঙ্ক। গত সোমবার ব্যাঙ্কের সিইও-এর মেয়াদ ৩ বছরের জায়গায় মাত্র ১ বছর বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয় আরবিআই। তারপর শেয়ারের দাম ৪ শতাংশ কমে যায়।
শুধু ইন্ডাসইন্ড ব্যাঙ্ক নয়। পুরো ব্যাঙ্কিং সেক্টরেই এর প্রভাব পড়েছে। নিফটি ব্যাঙ্ক সূচক ০.৭ শতাংশ পড়েছে। ব্রডার নিফটি ৫০ সূচকও ৫০ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। বাজার বিশ্লেষকরা মনে করছেন, পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।
ইন্ডাসইন্ড ব্যাঙ্কের শেয়ারে পতনের মধ্যে বিনিয়োগকারীদের ১৮ হাজার কোটি টাকার লোকসান হয়েছে। ব্যাঙ্কের বাজারমূল্য নেমে এসেছে মাঝারি আকারের রাষ্ট্রায়াত্ত ব্যাঙ্কের পর্যায়ে। শেয়ার ১২ মাসের ফরোয়ার্ড প্রাইস-টু-বুক অনুপাত মাত্র ০.৭১ গুণে লেনদেন হচ্ছে। ইন্ডাসইন্ড একমাত্র বেসরকারি ব্যাঙ্ক যার এই অনুপাত ১-এর নীচে নেমে গিয়েছে। তুলনায় ব্যাঙ্ক অফ বরোদা, পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক এবং ক্যানাড়া ব্যাঙ্কের শেয়ার বুক ভ্যালুর ০.৭৪ গুণ দামে কেনাবেচা হচ্ছে। আগামী দিনে পরিস্থিতির উন্নতি হয় কি না সেটাই দেখার।