দেখা যায়, ৭৯.৫৫-র স্তরে চলে গিয়েছে রুপি (Rupee)। ডলারের মূল্যবৃদ্ধি, বাণিজ্যে ঘাটতি বৃদ্ধি, ফরেন এক্সচেঞ্জ রিজার্ভে পতন, ফরেন ইনস্টিটিউশনাল ইনভেস্টরস বা এফআইআই (FII)-এর বহির্গমন এবং বিশ্বব্যাপী জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধির কারণেই ভারতীয় টাকা বেশ চাপের মধ্যেই রয়েছে।
আরও পড়ুন- পেট্রোল-ডিজেলের নয়া রেট জারি, গাড়ির ট্যাঙ্ক ফুল করার আগে চেক করে নিন দাম
advertisement
আমেরিকান ডলার সূচক সোমবার বিগত ২০ বছরের সর্বোচ্চ ১০৮.০২-এর স্তরে পৌঁছে গিয়েছে। আর এই চলতি বছরে ডলার সূচকে ১২ শতাংশ উর্ধ্বগতি দেখা গিয়েছে, যা বিগত দু’দশকে সব থেকে বেশি।
ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ সুদের হার মারাত্মক ভাবে বাড়িয়ে দিয়েছে, যার ফলে গত এক মাসেই ডলার সূচক রেকর্ড সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছে গিয়েছে।
মেহতা ইক্যুইটিজ লিমিটেড (Mehta Equities Ltd)-এর ভিপি কমোডিটিজ রাহুল কালান্ত্রি (Rahul Kalantri) বলেন, আমাদের আশা এই সপ্তাহে ডলার সূচক বেশ পরিবর্তনশীল থাকবে এবং প্রতিদিন বন্ধ হওয়ার সময় তা ১০৬.৪০-এর স্তর বজায় রাখতে পারবে।
ভারতীয় টাকার দর পতনের জন্য দায়ী করা হচ্ছে ভারতের বাণিজ্য ঘাটতিকে। শুধু তা-ই নয়, বিদেশি বিনিয়োগকারী ক্রমাগত টাকা তুলে নিচ্ছেন, যার কারণেও টাকার দর পতন হচ্ছে।
আরও পড়ুন- বাড়ির প্রবীণ নাগরিকদের স্বাস্থ্য বিমা ক্লেম করার ক্ষেত্রে কী বেশি সময় লাগবে?
বাণিজ্য এবং শিল্প মন্ত্রকের তরফে প্রকাশিত একটি তথ্য বলছে, গত জুন মাসে ২৫.৬৩ বিলিয়ন ডলার পণ্যদ্রব্যের বাণিজ্য ঘাটতি দেখা গিয়েছে। যা রেকর্ড বলে মনে করা হচ্ছে। এখানেই শেষ নয়, ওই তথ্য থেকে আরও জানা গিয়েছে, চলতি বছরে ইক্যুইটি থেকে বিদেশি পোর্টফোলিও বিনিয়োগকারীরা প্রায় ২.২১ লক্ষ কোটি টাকা তুলে নিয়েছেন। ব্যবসায়ীরা এই সপ্তাহে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রকাশ করা মুদ্রাস্ফীতি সংক্রান্ত তথ্য অনুসরণ করবেন।
টাকার ক্ষেত্রে এর পর কী হবে?
বিশ্লেষকের বক্তব্য, ভারতীয় টাকা এর পর ৭৯.৮০-র স্তরে পৌঁছবে। তার পরে তা ৮০-র স্তরে পৌঁছে যাবে। রাহুল কালান্ত্রির বলেন যে, আমাদের আশা ভারতীয় টাকার ক্ষেত্রে অস্থিরতা দেখা যাবে। আর তা ৭৯.৮০ থেকে ৮০.৫০-এর স্তরের মধ্যেই থাকবে।
আইসিআইসিআই ডিরেক্ট রিসার্চ (ICICI Direct Research) একটি নোটে জানিয়েছে যে, ডলারের শক্তিশালী উত্থান এবং বিশ্বব্যাপী বাজারে দুর্বল প্রবণতার জেরে আজও ভারতীয় টাকার মূল্য হ্রাস হতে পারে।
তাছাড়া এই নিয়ে টানা তৃতীয় মাসেও ভারতের মুদ্রাস্ফীতি ৭ শতাংশের উপরেই থাকবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই প্রবাসী ভারতীয়দের অ্যাকাউন্টে ডলারের অবাধ প্রবাহ সক্ষম করতে ব্যবস্থা নিচ্ছে আরবিআই।
সেই সঙ্গে ভারতীয় টাকায় বাণিজ্যিক লেনদেন নিষ্পত্তির কৌশলও তৈরি করছে আরবিআই, যা দেশীয় মুদ্রাকে কিছুটা হলেও সাহায্য করতে পারবে বলে মনে করা হচ্ছে।
মোতিলাল ওসওয়াল ফিনান্সিয়াল সার্ভিস লিমিটেড-এর ফরেক্স এবং বুলিয়ন অ্যানালিস্ট গৌরাঙ্গ সোমাইয়া বলেন, ডলারের উত্থান যেহেতু ক্রমবর্ধমান, তাই ভারতীয় টাকা বেশ চাপেই রয়েছে।
গত সপ্তাহে আরবিআই-এর কৌশল সত্ত্বেও ভারতীয় টাকা সেই দুর্বলই রয়ে গিয়েছে। দেশীয় স্তরের এবং আমেরিকার মুদ্রাস্ফীতির সংখ্যা এই সপ্তাহেই প্রকাশ করা হবে। আশা করা হচ্ছে যে, মার্কিন ডলার এবং ভারতীয় টাকা ইতিবাচক স্তরেই বাণিজ্য করবে এবং স্বল্প মেয়াদে এর বাজারদর থাকবে ৭৯.০৫ থেকে ৭৯.৮০-র মধ্যে।