যুদ্ধ লাগলে সবার আগে বন্ধ হয়ে যাবে লোহিত সাগরের শিপিং রুট। মালবাহী জাহাজকে যেতে হবে ঘুর পথে। ফলে জিনিসপত্রের দাম বাড়বে। অপরিশোধিত তেলের দাম আকাশছোঁয়া হতে পারে। তেল এবং গ্যাসের অধিকাংশটাই আমদানি করে ভারত। ফলে উচ্চ মূল্য এবং মুদ্রাস্ফীতির প্রভাব পড়বে ভারতের অর্থনীতি এবং বাণিজ্যে।
লেবাননে স্থল অভিযান শুরু করেছে ইজরায়েল। তারপরই মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নেতানিয়াহুর দেশে মিসাইল হামলা শুরু করে ইরান। ক্ষয়ক্ষতি বিশেষ হয়নি। তবে ইজরায়েল হাত গুটিয়ে বসে থাকবে না। ইরানকে পাল্টা জবাব দেবে।
advertisement
আরও পড়ুন: জেলে কী এমন করছেন সন্দীপ ঘোষ! গেল সিবিআই, আরজি কর কাণ্ডে এবার বড় মোড়?
ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর গলাতেও প্রতিশোধের সুর শোনা গিয়েছে। তিনি বলেছেন, “নিজেদের রক্ষার জন্য আমরা কী করতে পারি, ইরানের ধারণা নেই। ইজরায়েল অগ্রসর হচ্ছে। ইরানের অশুভ শক্তি পিছু হঠছে।’’
রাশিয়া থেকে তেল আমদানি পরিমাণ বাড়লেও, ভারত এখনও গ্যাস এবং জ্বালানির জন্য মধ্যপ্রাচ্যের উপর অনেকাংশেই নির্ভরশীল। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, জুলাই মাসে ভারত মোট তেলের ৪৪ শতাংশ রাশিয়া থেকে আমদানি করেছিল। ৪৪.৬ শতাংশ তেল আমদানি করা হয় মধ্যপ্রাচ্য থেকে। মূলত ইরাক, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি এবং কুয়েত থেকেই তেল আমদানি করে ভারত। এলএনজি আসে কাতার থেকে। ফেব্রুয়ারিতে এই নিয়ে ৭৮ বিলিয়ন ডলারের চুক্তিও হয়েছে।
আরও পড়ুন: দাম বেড়েছে মদের, এবার পুজোয় কতদিন বন্ধ মদের দোকান? শুনে কিন্তু চমকে যাবেন
রাশিয়ার তেল লোহিত সাগরের উপর দিয়ে ভারতে ঢোকে। যুদ্ধ লাগলে এই পথে জাহাজ চলাচল বন্ধ হয়ে যাবে। তখন কেপ অফ গুড হোপ দিয়ে আমদানি করতে হবে। তাছাড়া হরমুজ প্রণালীও বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এই পথেই কাতারের থেকে এলএনজি এবং ইরাক ও সৌদি আরবের তেল আসে ভারতে। ওমান এবং ইরানের মাঝে অবস্থিত হরমুজ প্রণালী বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অয়েল চেকপয়েন্ট। এই পথেই চিন, ভারত, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া সহ এশিয়ার বিভিন্ন দেশ তেল আমদানি করে।
ভারতের আশার কথা হল, মধ্যপ্রআচ্যের সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি, কাতার এবং কুয়েতের মতো দেশগুলো নিরপেক্ষ। ইরান-ইজরায়েল দ্বন্দ্ব বা প্রক্সি ওয়ারে তারা যোগ দেয়নি। গ্লোবাল ট্রেড রিসার্চ ইনিশিয়েটিভের প্রতিবেদন অনুযায়ী, জিসিসি দেশগুলির সঙ্গে ভারতের বাণিজ্য গত বছরের তুলনায় ১৭.৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। রফতানিও বৃদ্ধি পেয়েছে ১৫.২ শতাংশ।
মরগ্যান স্ট্যানলির প্রতিবেদন অনুযায়ী, সংঘাত তীব্রতর হলে অপরিশোধিত তেলের দাম ব্যরেল প্রতি ১০ ডলার বাড়তে পারে। যার মাশুল গুণতে হবে আমজনতাকে। শুধু তাই নয়, ভারত-মধ্যপ্রাচ্য-ইউরোপ করিডোরের উপরেও এর প্রভাব পড়তে পারে। গত বছর নয়াদিল্লিতে জি২০ বৈঠকে এই করিডোরের ঘোষণা করা হয়েছিল।