দেশের সবচেয়ে বড় বেসরকারি ব্যাঙ্কের পাসবুকে এমনই স্ট্যাম্প পড়ে যাচ্ছে। গ্রাহকদের কী জানাতে চাইছে ব্যাঙ্ক? বলা হচ্ছে, ডিআইসিজিসি নিয়মে ব্যাঙ্ক লিকুইডেশনে গেলে লিকুইডেটরের মাধ্যমে টাকা পাবেন গ্রাহক। আবেদনের ২ মাসের মধ্যে এক লক্ষ টাকা পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ মিলবে
অর্থাৎ এক লক্ষ টাকার বেশি আমানতের ক্ষেত্রে টাকা ফেরত পাওয়ার কোনও নিশ্চয়তা নেই। ব্যাঙ্কের বক্তব্য, আরবিআইয়ের নির্দেশ মেনেই গ্রাহক সচেতনতায় এই পদক্ষেপ।
advertisement
এফআরডিআই বিলেও একই সুপারিশ ছিল। সেই বিল পাস হয়নি। তা হলে কীভাবে আম আদমির খাটনির টাকার দায় অস্বীকার করতে পারে ব্যাঙ্ক? ব্যাঙ্কের হাতিয়ার ২০১৭ সালে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের অধীনস্থ বিমা সংস্থার নির্দেশিকা। যেখানে জানানো হয়,
১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আমানতে ক্ষতিপূরণ দেবে ডিপোজিট ইনসিওরেন্স ও ক্রেডিট গ্যারান্টি কর্পোরেশন
দাবি করার ২ মাসের মধ্যে ক্ষতিপূরণ মিলবে
লিকুইডেটরের মাধ্যমে বাকি টাকা পাওয়ার প্রক্রিয়া চলবে
যে বেসরকারি ব্যাঙ্কের এই কাজ, তাদের যুক্তি,
রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ২০১৭ সালের নির্দেশিকা অনুযায়ী বিমার ব্যাপারে গ্রাহকদের জানানো হচ্ছে। সব বাণিজ্যিক ব্যাঙ্ক, স্মল ফিনান্স ব্যাঙ্ক ও পেমেন্ট ব্যাঙ্কের গ্রাহকরা এর আওতায় আসছেন
ব্যাঙ্কের ঝাঁপ বন্ধ হলে গ্রাহকদের টাকা ফেরাতে লিকুইডেটর নিয়োগ করে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। তারাই সম্পদের মূল্যায়ন করে টাকা ফেরনোর কাজ করে।
ব্যাঙ্কের মোট মূলধনের একটি অংশ আরবিআইয়ের কাছে জমা রাখতে হয়
এই তহবিল থেকেও ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়
আমানতের একটি অংশের বিমা করা হয়
এই বিমাতেই ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ মেলে
কিন্তু প্রশ্ন, ২০১৭ সালের নির্দেশিকার কথা ২০১৯ এর অক্টোবরে স্ট্যাম্প মেরে জানানোর প্রয়োজন পড়ল কেন? অন্যান্য ব্যাঙ্কও কী এভাবেই আমানত নিয়ে দায় ঝেড়ে ফেলবে? পিএমসি ব্যাঙ্ক কেলেঙ্কারিতে অনিশ্চয়তার মুখে লক্ষ লক্ষ আমানতকারী। সঙ্গে আর্থিক মন্দা। তার মধ্যে ব্যাঙ্ক আমানত নিয়ে উদ্বেগ। সাধারণ মানুষের সামনে উপায়ই বা কী?
ব্যাঙ্কিং ক্ষেত্রে গ্রাহক নিরাপত্তা এখনও পর্যন্ত যথেষ্টই আঁটোসাঁটো। গত ৪০ বছরে ব্যাঙ্কে টাকা রেখে কাউকে টাকা খোয়াতে হয়নি। কো-অপারেটিভ ও গ্রামীণ ব্যাঙ্কে তালা পড়েছে। তবে পুরো ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন গ্রাহক। ভবিষ্যতে সেই সুরক্ষাকবচ থাকছে কিনা, তা নিয়েই প্রবল সংশয়।