সোনা বনাম রুপো:
ঐতিহ্যগত বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সোনা এবং রুপো দু’টোই অত্যন্ত কার্যকরী। কারণ এই দুটি ক্ষেত্রেই বিনিয়োগ খুবই সুরক্ষিত। বিভিন্ন ধরনের অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যেও সোনার উপর বিনিয়োগ নিরাপদ। কিন্তু বিগত ১ বছরের দিকে নজর দিলে দেখা যাবে, রুপোর পারফরমেন্স সোনার তুলনায় কিছুটা হলেও খারাপ। বিগত বছরের ধনতেরসে সোনার চাহিদা ৬% বেড়েছিল। আবার অন্য দিকে বিগত বছরের ধনতেরসে রুপোর চাহিদা ১৭ শতাংশ কমে গিয়েছিল। ২০২২ সালেও রুপোর পারফরমেন্স তেমন একটা ভালো নয়। ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় রুপোর চাহিদা ১৩ শতাংশ কমে গিয়েছে।
advertisement
আরও পড়ুন: মধ্যবিত্তের জন্য বড় খবর, কেননা দীপাবলিতে সোনার দামে হাজার হাজার টাকার পার্থক্য
মেহেতা ইক্যুইটি লিমিটেডের (Mehta Equities Limited) ভাইস প্রেসিডেন্ট রাহুল কালান্ত্রি (Rahul Kalantri) জানিয়েছেন যে, সোনার তুলনায় রুপোর দাম অনেকটাই কম হওয়ায়, এ ক্ষেত্রে অনেকেই বিনিয়োগ করতে সক্ষম। আগামী বছরে রুপোর জনপ্রিয়তা ৮০ শতাংশ বাড়তে পারে সোনার তুলনায়। সোনার উপর রেশিও অনুযায়ী এটি বাড়তে পারে। সোনার দাম ও রুপোর দামের উপর এই বিষয়টি নির্ভর করে। অর্থাৎ যাঁরা সোনায় বিনিয়োগ করতে অক্ষম, তাঁরা সোনার বদলে রুপোয় বিনিয়োগ করতে পারেন।
আরও পড়ুন: কালীপুজোয় মেয়ের জন্য ৪১৬ টাকা সঞ্চয় করুন পাবেন ২১ বছরে ৬৫ লক্ষ টাকা
রুপোর ভবিষ্যৎ:
রুপো হল ইন্ডাস্ট্রিয়াল মেটাল এবং গ্রিন টেকনোলজির অংশ। এর ফলে রুপোতেও বিনিয়োগ করা খুবই ভালো কৌশল। কারণ বিভিন্ন দেশ এখন ক্রমশ গ্রিন অর্থনীতির পথে হাঁটছে। এর ফলে বিভিন্ন দেশে ডিকার্বোনাইজেশন এবং ইলেকট্রিফিকেশন প্রজেক্টের উপর বেশি করে জোর দেওয়া হচ্ছে। যা আগামী কয়েক বছরে আরও বাড়তে চলেছে। অন্য দিকে ৫জি পরিকাঠামোর ক্ষেত্রেও রুপোর ব্যবহার বেশি করে হতে চলেছে। কালান্ত্রি জানিয়েছেন যে, এর ফলে বিভিন্ন পরিকাঠামোর উপর রুপোর ব্যবহার বেশি করে বাড়তে চলেছে। সুতরাং ২০২৩ সালে রুপোর চাহিদা ৫% বাড়তে পারে। এর ফলে ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে রুপোয় বিনিয়োগ করলে ভাল ফল পাওয়া যেতে পারে।
রুপো এবং সোনার দাম:
ভবিষ্যতে রুপোর দাম কিছুটা হসেও বাড়তে পারে। বর্তমানে ১ আউন্স রুপোর দাম প্রায় ২২.৪০ ডলার, যা বেড়ে হতে পারে ২৭.০০ ডলার। বর্তমানে ভারতে রুপোর দাম ৫১,৬০০ টাকা হলেও এটা বেড়ে হতে পারে ৭৫,০০০ টাকা। অন্য দিকে সোনার দাম ক্রমাগত হারে বেড়ে চলেছে। এই বছরের নভেম্বর এবং ডিসেম্বর মাসে হওয়া FOMC-এর বৈঠকে সোনার দাম ৭৫ বেসিস পয়েন্ট বাড়তে পারে। ২০০৮ সালের পর আমেরিকায় এটি ৪.২০ শতাংশ বেড়েছে।
বিনিয়োগ:
বিনিয়োগ করার ক্ষেত্রে প্রায় সকলেই বিভিন্ন ধরনের গবেষণা বা রিসার্চ করে থাকেন। বিশেষ সোনা ও রুপোয় বিনিয়োগ করার আগে সব কিছু ভাল করে দেখে নেওয়া প্রয়োজন। এর মাধ্যমে সোনা ও রুপোর ইটিএফ , মাইনিং স্টক, গোল্ড বন্ড, ডিজিটাল গোল্ড ইত্যাদিতে বিনিয়োগ করা যেতে পারে। বিনিয়োগকারী পূরবী শাহ (Purvi Shah) জানিয়েছেন যে, নতুন প্রজন্ম ফিজিক্যাল গোল্ড কিনতে তেমন আগ্রহী নয়। আবার ডিজিট্যাল গোল্ড সম্পর্কে ধারণাও তেমন স্পষ্ট নয়। তাই ডিজিট্যাল গোল্ড এবং তার সুবিধা সম্পর্কে মানুষকে ওয়াকিবহাল করা অত্যন্ত জরুরি।