জ্যোতিষ দেবনাথ গড়ে তুলেছেন ‘মা অম্বিকা মসলিন জামদানি অ্যান্ড সমর্থ ট্রেনিং সেন্টার’। এখানেই শুরু হয়েছে পরিবর্তনের গল্প। প্রায় ৬০ জন গৃহবধূ এখানে শিখছেন জামদানি বোনার সূক্ষ্ম ও শিল্পসম্মত কাজ। কারও সংসার চলত স্বামীর অনিশ্চিত আয়ে, কেউবা অবহেলার ছায়ায় লড়াই করে বেঁচে ছিলেন। কিন্তু এখন তাঁরা নিজের পায়ে দাঁড়িয়েছেন। কেউ মাসে ৮ হাজার, কেউ ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত উপার্জন করছেন। দত্ত দাড়িয়াটন গ্রামের বাসিন্দা স্বপ্না দেবনাথ বলেন, ” জ্যোতিষ কাকার কাছেই আমরা জামদানি বোনা শিখেছি। এখন আমাদের উপার্জন হয় এবং সেই অর্থ সংসারের অনেক কাজে লাগে। আমরা সত্যিই খুবই উপকৃত হয়েছি। আর এই কাজ কাকার কাছে খুব অল্প সময়ে শিখতে পেরেছি। ট্রেনিং চলার সময় আমরা ৩০০ টাকা করে প্রতিদিন সাম্মানিক পেতাম।”
advertisement
ঘরের ভিতরে বন্দি থাকা মেয়েরাই আজ হয়ে উঠছেন পরিবারের প্রধান ভরসা। এই কাজ শুধু তাঁদের অর্থনৈতিক দিক থেকেই শক্তিশালী করেনি, আত্মমর্যাদাও ফিরিয়ে দিয়েছে। জ্যোতিষ দেবনাথ বলেন, ” বাংলার ঐতিহ্য জামদানি শিল্পকে টিকিয়ে রাখার জন্যই এই উদ্যোগ। আমাদের শিল্পটা হারানোর মুখে, কিন্তু আমি চাইছি না এই শিল্প হারিয়ে যাক। এই গ্রামে আমার পিসির বাড়ি। একদিন এসে দেখেছিলাম এখানকার মহিলাদের দুরবস্থা। তখনই প্রশিক্ষণ দেব বলে ঠিক করেছিলাম। এখন অনেকেই স্বনির্ভর, এর পর আরও প্রশিক্ষণ আমি দেব।”
একজন সত্যিকারের শিল্পী কেবল নিখুঁত নকশা আঁকেন না, গড়ে তোলেন ভবিষ্যৎ। জ্যোতিষ দেবনাথ আজ শুধু জামদানি শিল্পের কারিগর নন, তিনি পূর্ব বর্ধমানের কালনার বহু মহিলার জীবনে আশার আলো। জ্যোতিষ দেবনাথ দেখিয়ে দিয়েছেন, একটা সুতো দিয়েও জীবন বদলানো যায়।
বনোয়ারীলাল চৌধুরী