তাই কেউ যদি যৌবনেই জীবন উপভোগ করতে চান তাহলে তাঁকে রোজগারের পিছনে ছোটা বন্ধ করতে হবে।
এটা কি আদৌ সম্ভব!
সম্ভব। যদি কোনও ব্যক্তি একেবারে প্রথম থেকেই সঞ্চয় করতে শুরু করেন। ভাল অর্থ সঞ্চয়ের পর তিনি অল্প বয়সেই অবসর নিতে পারেন। এমনই এক অদ্ভুত কাহিনি ড্যানিয়েল জর্জের।
আরও পড়ুন– শত শত বছরের পুরনো এক সুড়ঙ্গ; ভিতরে ঢুকতেই এ কী দেখলেন ভূবিজ্ঞানী !
advertisement
আইআইটি বোম্বে থেকে পাস করা ড্যানিয়েল মাত্র ২৫ বছর বয়সে চাকরি পেয়েছিলেন। আর অবসর নিয়েছেন মাত্র ২৯ বছর বয়সে। মাত্র চার বছরে তিনি এত টাকা সঞ্চয় করেছেন যে বাকি জীবনটা অনায়াসে কাটিয়ে দিতে পারেন পায়ের উপর পা তুলে।
এই কাহিনি নাড়িয়ে দিতে পারে যেকোনও মানুষকে।
ড্যানিয়েলের কর্মজীবন শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তিনি হিসেব কষে ফেলেছিলেন বহু বছর চাকরি তিনি করবেন না। সেই মতো নিজের লক্ষ্য স্থির করে ফেলেন। অর্থ অপচয় না করে তিনি অর্থ সঞ্চয়ের দিকেই বেশি জোর দেন।
ড্যানিয়েল জর্জ যখন আইআইটি বোম্বেতে পড়াশোনা করতেন তখন থেকেই অবসরের পরিকল্পনা করে রাখতেন। ২০১৫ সালে ২৪ বছর বয়সে ইঞ্জিনিয়ারিং ফিজিক্সে স্নাতক হন। ২০১৮ সালে Google থেকে আসে চাকরির অফার, বেতন ২,৬৫,০০০ ডলার বা ২.২ কোটি টাকা। AI ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কাজে যোগ দেন।
ড্যানিয়েল বলেন ‘Google-এর সঙ্গে কাজ করা আমার কাছে স্বপ্নের মতো ছিল। আমি বেশ ভাল টাকা রোজগার করছিলাম, কিন্তু প্রায় ৫০ শতাংশ অর্থই খরচ হচ্ছিল আয়কর দিতে।’
তখনই তিনি অবসর তহবিলে অর্থ জমানোর কথা ভাবেন। বলেন, ‘আমার উপার্জনের ১০ শতাংশেরও কম খরচ করতাম। বাইকে বা পায়ে হেঁটে কাজে যেতাম। কখনো গাড়ি কিনিনি। দিনে তিনবেলা খাবার খেতাম শুধুমাত্র Google-এ। বন্ধুদের সঙ্গে একটি অ্যাপার্টমেন্টে থাকতাম কম ভাড়ায়। বাইরে খাওয়া ছাড়া আর কোনও খরচ ছিল না। কখনও মনে হয়নি খারাপ আছি।’
আরও পড়ুন- চলন্ত ট্রেনে শৌচাগার ব্যবহার করতে হলে লোকো পাইলটরা কোথায় যান ? ভেবে দেখেছেন কি কখনও?
ড্যানিয়েল প্রতি বছর ট্যাক্স সেভিংস অ্যাকাউন্টে প্রায় ৬২,০০,০০০ টাকা জমা করেন। ২০২০ সালে অবসর নিয়ে ভারতে ফিরে আসতে পারতেন। কিন্তু ফেরেননি, কারণ ততদিনে তাঁর জীবনে এসেছেন আরও এক AI বিজ্ঞানী। Google-এ কর্মরত তাঁর ভাবী স্ত্রী।
২০২০ সালের জুনে, তিনি আমেরিকান ইনভেস্টমেন্ট ব্যাঙ্ক JP Morgan-এ AI প্রকল্পের বড় দায়িত্ব পান। আরও বেশি আয়। কিন্তু বদলায়নি জীবনযাপনের মান। জামাকাপড়, বিছানা এবং একটি ৫৬ ইঞ্চি টিভি—এই ছিল তাঁর সম্পত্তি।
মাত্র ২৭ বছরেই তিনি মিলিয়ন ডলারের অধিকারী হন। ২০২৩ সালের অগাস্টে ২৯ বছর বয়সী ড্যানিয়েল চাকরি ছেড়ে শুরু করেন নিজের ব্যবসা। বন্ধুদের সঙ্গে মিলে শুরু করেন স্টার্টআপ ThirdEar AI।
ড্যানিয়েল বলেন, আমার স্ত্রী, সন্তান রয়েছে তবু এই ঝুঁকিটা নিতে পেরেছি। কারণ আমি নিশ্চিন্ত, আমারই করা বিনিয়োগ আমাকে রক্ষা করবে।