বিটিএম-কে বিটকয়েন এটিএম নামেও ডাকা হয়। বিটকয়েন টেলার মেশিন (বিটিএম) হল একটি সেলফ-সার্ভিস কিয়স্ক। এখানে ব্যবহারকারীরা নগদ অথবা ক্রেডিট এবং ডেবিট কার্ড ব্যবহার করে বিটকয়েন কেনাবেচা করতে পারবেন। প্রচলিত এটিএম থেকে সাধারণত নগদ টাকা বেরিয়ে আসে। তবে বিটকয়েন এটিএম কিন্তু এমনটা নয়। বরং এটার মাধ্যমে ক্রিপ্টোকারেন্সি লেনদেন করা সম্ভব।
আরও পড়ুন: একাধিক Credit Card ব্যবহার করছেন? জানেন কত বড় সমস্যায় পড়তে পারেন
advertisement
কীভাবে কাজ করে বিটকয়েন এটিএম?
বিটকয়েন এটিএম-এর কাজ করার ধরন বেশ সহজ এবং সাধারণ। যদিও প্রস্তুতকারী কিংবা পরিষেবা প্রদানকারী এবং নির্দিষ্ট মডেলের উপর ভিত্তি করে এই যন্ত্রের কাজের ধরন ভিন্ন হতে পারে। রইল কয়েকটি ধাপ।
অথেন্টিকেশন:
মোবাইল ওয়ালেটের মাধ্যমে অথবা কিউআর কোড স্ক্যান করে ব্যবহারকারীরা অথেন্টিকেট করতে পারবেন।
ট্রানজ্যাকশন সিলেকশন:
ব্যবহারকারী কত পরিমাণ বিটকয়েন কেনা-বেচা করতে চাইছেন, সেটা বেছে নিতে হবে।
পেমেন্ট:
বিটকয়েন কেনার জন্য ব্যবহারকারীকে ওই যন্ত্রের মধ্যে নগদ টাকা দিতে হবে। কিংবা পেমেন্টের জন্য তিনি ক্রেডিট অথবা ডেবিট কার্ডও ব্যবহার করতে পারেন। আর বিটকয়েন বিক্রি করার ক্ষেত্রে ব্যবহারকারীকে যন্ত্রের মধ্যে ক্রিপ্টোকারেন্সি পাঠানোর জন্য নিজের মোবাইল ওয়ালেট থেকে একটি কিউআর কোড স্ক্যান করতে হবে।
আরও পড়ুন: সেভিংস অ্যাকাউন্টধারীদের জন্য দারুণ সুখবর; এই ব্যাঙ্কে মিলবে ৭.৫ শতাংশ পর্যন্ত সুদ
কনফার্মেশন:
পেমেন্ট অথবা ট্রান্সফার হয়ে গেলে লেনদেনের একটি ফিজিক্যাল কিংবা ডিজিটাল রিসিট দেবে বিটিএম।
বিটকয়েন মেশিনের উন্মাদনা কমছে কেন?
আজকাল খুব কম মানুষই ক্রিপ্টোকারেন্সির বিষয়ে কথা বলছে। আসলে বিশ্ব জুড়ে ক্রিপ্টোকারেন্সি নিয়ে কড়া আইন প্রণয়ন করা হয়েছে এবং এই বিষয়ে কঠোর সমালোচনাও হয়েছে। যার ফলস্বরূপ বিভিন্ন কয়েনের মূল্যের পতন দেখা গিয়েছে। যদিও চলতি বছরে সবথেকে বড় এবং প্রধান ক্রিপ্টোকারেন্সি বিটকয়েনের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। মাত্র এক বছরের মধ্যে বিটকয়েনের কয়েন প্রতি মূল্য ১৩ লক্ষ টাকা থেকে গত শুক্রবার (২০ অক্টোবর) বেড়ে হয়েছে কয়েন প্রতি ২৪ লক্ষ টাকা। ফলে বোঝাই যাচ্ছে যে, বিটকয়েনের মূল্যের ক্ষেত্রে উর্ধ্বগতি দেখা যাচ্ছে। কিন্তু বিটকয়েনের ক্ষেত্রে সব কিছু কিন্তু ঠিক নেই।
কারণ ইতিমধ্যেই বিটকয়েন নিয়ে একটা খারাপ খবর এসেছে। আর সেটা হল – বিটকয়েন এটিএম একে একে বন্ধ হচ্ছে। অল্টইন্ডেক্স ডেটা অনুযায়ী, গত ২ বছরের তুলনায় চলতি মাসে বিশ্ব জুড়ে বিটকয়েন এটিএম ইনস্টলেশনের কাজ সবথেকে কম মাত্রায় হয়েছে। গত বছরের একেবারে শেষের দিকে এটিএম ইনস্টলেশনের সংখ্যা নেমে ৭০০০-এ গিয়ে ঠেকেছে। অর্থাৎ এটা ১৭ শতাংশ কমেছে। এই সময়ে মোট ৩২৫০০টি এটিএম ইনস্টল করা হয়েছে।
এখনও পর্যন্ত বেশিরভাগ মেশিন আমেরিকাতেই ইনস্টল করা হয়েছিল। কিন্তু এখন সেক্ষেত্রে সবথেকে বড় পতন দেখা দিচ্ছে। বর্তমানে আমেরিকায় মোট ২৬৭০০টি মেশিন রয়েছে। আমেরিকাতেই এখনও পর্যন্ত গোটা ইউরোপের তুলনায় ১৮ গুণ বেশি মেশিন রয়েছে। কারণ ইউরোপ জুড়ে এখনও পর্যন্ত মাত্র ১৫০০টি মেশিন রয়েছে।
কেন এমনটা হচ্ছে?
এর কারণ সম্পর্কে আলোচনা করেছে অল্টইনডেক্স। অপরাধমূলক কাজে বিটকয়েনের ব্যবহারের কারণেই সম্ভবত পড়ছে এর জনপ্রিয়তা। আসলে স্ক্যামাররা ই-কমার্স সাইটে পণ্য বিক্রয়ের জন্য এটি ব্যবহার করছে এবং ক্রেতাদের নির্দিষ্ট ধরনের কয়েনে অর্থ জমা করার নির্দেশ দিচ্ছে। এরপরেই সেই অর্থ উধাও হয়ে যাচ্ছে।