তবে, অনেকেই এটা জানেন না যে শেয়ার বাজারে পতন দেখা দিলে কিন্তু আবার সোনার দাম বৃদ্ধি পায়। বিশ্বে যখনই শেয়ার বাজারের পতন হয়েছে, সোনা সর্বদা নিরাপদ বিনিয়োগ মাধ্যম হিসেবে ভাল পারফর্ম করেছে। গত ২৫ বছরের তথ্য থেকে দেখা যায় যে যখনই S&P500 সূচকে ২০%-এর বেশি বড় পতন ঘটেছে, তখনই সোনার দামে তীব্র উত্থান দেখা গিয়েছে। ২০০৮ সালের বৈশ্বিক আর্থিক সংকটে, S&P500 -৫৭.৬৯% কমেছিল যেখানে সোনার দাম +৩৯.৫৬% বেড়েছিল। ডট-কম ক্র্যাশেও (২০০০-২০০২), S&P500 ৪৯.২% কমেছিল, যেখানে সোনা ২১.৬৫% বেড়েছিল।
advertisement
আবার, কোভিড সংকটে (২০২০ সাল), শেয়ার বাজার ৩৫.৭১% কমেছিল, সোনা ৩২.৪৮% বেড়েছিল। সাম্প্রতিক শুল্ক যুদ্ধে (২০২৫ সাল) S&P500 ২১.৮৭% কমেছে এবং সোনা ২১.১৫% বেড়েছে। যখনই ইক্যুইটি বাজারে ত্রৈমাসিকের ভিত্তিতে ২০%-এর বেশি পতন ঘটেছে, তখনই সোনার দাম তীব্রভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
আরও পড়ুন: বড় সুখবর, সোনার দামে বড় পতন ! দেখে নিন ১ গ্রামের দাম
এই বিষয়টি মাথায় রেখেই কেডিয়া কমোডিটির এমডি অজয় কেডিয়া বলেছেন যে আগামী ৩-৬ মাসের মধ্যে আন্তর্জাতিক বাজারে সোনার দাম ৩২০০-৩৩৪০ ডলারে পৌঁছবে বলে আশা করা হচ্ছে। এর ফলে, এখন দাম কম হলেও, ভারতে সোনার দাম প্রতি ১০ গ্রামে ৯৪,০০০-৯৫,০০০ টাকা পর্যন্ত যেতে পারে।
সোনার দাম কেন বাড়ছে? ভূ-রাজনৈতিক উদ্বেগ, ডলারের মূল্য হ্রাস, কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের সোনা কেনাঙ্ক এবং ইটিএফ-এ বিনিয়োগের প্রবণতা বৃদ্ধি, শেয়ার বাজারে পতন এবং মুদ্রাস্ফীতি ও মন্দার ভয় বিনিয়োগকারীদের সোনা কিনতে বাধ্য করছে।
আরও পড়ুন: কেন পড়ল সোনার দাম? আর কোন কারণেই বা মানুষ সোনা বিক্রি করে দিচ্ছে? জেনে নিন বিশদে
তা, এখন না হয় দাম কম, কিন্তু এর পর কী হবে? কেডিয়া ব্যাখ্যা করে বলেন যে নিকট ভবিষ্যতে (স্বল্পমেয়াদী) সোনায় কিছু দরপতন হতে পারে। কিন্তু ৩-৬ মাসের মধ্যে, সোনার দর আবার বৃদ্ধি পেতে পারে। দীর্ঘমেয়াদে তাই বিনিয়োগকারীরা ধাপে ধাপে (Phased Accumulation) সোনায় বিনিয়োগ করতে পারেন।
সামগ্রিকভাবে দেখলে ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় যে সংকটের সময়ে সোনাই সবচেয়ে নিরাপদ এবং সর্বোত্তম রিটার্ন প্রদানকারী হাতিয়ার হয়ে ওঠে। চলমান শুল্ক যুদ্ধ, মন্দার আশঙ্কা এবং বিশ্বব্যাপী অনিশ্চয়তার পরিপ্রেক্ষিতে তাই সোনায় বিনিয়োগ করা একটি বুদ্ধিমানের পদক্ষেপ হতে পারে। এখন দাম কম যাচ্ছে, তার সুযোগ নেওয়াই উচিত হবে!