আরও পড়ুন: পুরনো গাড়ি অথবা ব্যবহৃত গাড়ির লোনের জন্য কী ভাবে আবেদন করতে হবে?
এ বার দেখে নেওয়া যাক, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার বৈশিষ্ট্য--
- এই প্রকল্পের আওতায় ভারতের গ্রাম এবং শহরের যে কোনও দুঃস্থ নাগরিক যদি প্রথম বারের জন্য বাড়ি কেনেন বা তৈরি করতে যান, তা হলে লোনের উপর ২.৬৭ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ভর্তুকি দেয় কেন্দ্র। পাশাপাশি লোন শোধ করার জন্য ২০ বছরের লম্বা সময় দেওয়া হয়, যাতে তাঁদের উপরে বাড়তি চাপ না-পড়ে।
- প্রবীণ নাগরিক এবং বিশেষ ভাবে সক্ষম ব্যক্তিদের প্রতি আলাদা নজর দেওয়া হয়েছে। ধরা যাক, পরিবারে এমন কেউ রয়েছেন, সে ক্ষেত্রে এই প্রকল্পে তৈরি বাড়িতে ওই সব মানুষদের যাতে নীচের তলার ঘরে রাখা হয়, সেটা নিশ্চিত করা হয়।
- বাড়ি নির্মাণে টেকসই এবং পরিবেশ বান্ধব আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করা হয়। যে কোনও প্রাকৃতিক দুর্যোগের হাত থেকে যাতে বাড়িকে রক্ষা করা যায়, সে দিকেও বিশেষ নজর দেওয়া হয়।
- এই প্রকল্পকে দু’টি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা (গ্রামীণ) এবং প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা (নগর)। প্রথমত, ২০১৬ সালের ২০ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা (গ্রামীণ)-এর সূচনা হয়। এখনও পর্যন্ত এই কর্মসূচির আওতায় ১ কোটি ২৬ লক্ষ বাড়ি নির্মিত হয়েছে। এমনকী স্বচ্ছ ভারত মিশনের আওতায় প্রতিটি বাড়িতে অতিরিক্ত ১২ হাজার টাকা সহায়তা দেওয়া হয়। দ্বিতীয়ত, যে সমস্ত বস্তি এলাকায় পর্যাপ্ত জায়গা, পানীয় জল এবং শৌচালয়ের অভাব রয়েছে, সেখানকার মানুষদের এবং শহরে বসবাসকারী দরিদ্রদের বাড়ির চাহিদা মেটাতে আনা হয়েছে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা (নগর)। এ ছাড়াও দেশের সমস্ত শহরে বিশেষ করে ৪০৪১ বিধিবদ্ধ (statutory) শহরে এই প্রকল্পের সুবিধা মেলে। শহর হোক বা গ্রাম, তিন দফায় বাড়ি তৈরির কাজ শেষ করা হয়।
advertisement
এ বার দেখে নেওয়া যাক, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার আওতায় কারা কী কী সুবিধা পাবেন--
আরও পড়ুন: বিভিন্ন রেকারিং ডিপোজিটে সুদের হার কত মিলছে? দেখে নিন এক নজরে...
অর্থনৈতিক ভাবে দুর্বল বা ইডব্লিউএস (EWS):
যাঁদের বার্ষিক আয় ৩ লক্ষ টাকা বা তার কম, তাঁদের অর্থনৈতিক ভাবে দুর্বল বা ইডব্লিউএস বিভাগে রাখা হয়েছে। এঁদের ৬ লক্ষ টাকার লোনে ৬.৫০ শতাংশ সুদে ভর্তুকির সুবিধা দেওয়া হয়।
নিম্ন আয় গোষ্ঠী বা এলআইজি (LIG):
যাঁদের বার্ষিক আয় ৩ লক্ষ থেকে ৬ লক্ষ টাকা পর্যন্ত, তাঁদের নিম্ন আয় গোষ্ঠী বা এলআইজি (LIG) বিভাগে রাখা হয়েছে। এঁদেরও ৬ লক্ষ টাকার লোনে ৬.৫০ শতাংশ সুদে ভর্তুকির সুবিধা দেওয়া হয়।
মধ্য আয় গোষ্ঠী ১ বা এমআইজি ১ (MIG I):
যাঁদের বার্ষিক আয় ৬ লক্ষ টাকা থেকে ১২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত, তাঁদের মধ্য আয় গোষ্ঠী ১ বা এমআইজি ১ (MIG I) বিভাগে রাখা হয়েছে। এঁদের ২০ বছরের জন্য ৯ লক্ষ টাকা লোনের সুদে ৪ শতাংশ সাবসিডি বা ভর্তুকি দেওয়া হয়। অর্থাৎ সুদের হার ৯ শতাংশ হলে গ্রাহককে ৫ শতাংশ হারে টাকা মেটাতে হবে। কারণ বাকি ৪ শতাংশ ভর্তুকি হিসেবে কেন্দ্র মেটাবে।
মধ্য আয় গোষ্ঠী ২ বা এমআইজি ২ (MIG II):
যাঁদের বার্ষিক আয় ১২ লক্ষ টাকা থেকে ১৮ লক্ষ টাকা পর্যন্ত, তাঁদের মধ্য আয় গোষ্ঠী ২ বা এমআইজি ২ (MIG II) বিভাগে রাখা হয়েছে। এঁদেরও ২০ বছরের জন্য ৯ লক্ষ টাকা লোনের সুদে ৪ শতাংশ সাবসিডি বা ভর্তুকি দেওয়া হয়। অর্থাৎ, সুদের হার ৯ শতাংশ হলে গ্রাহককে ৫ শতাংশ হারে টাকা মেটাতে হবে। কারণ বাকি ৪ শতাংশ ভর্তুকি হিসেবে মেটাবে কেন্দ্র।
আরও পড়ুন: কোন ব্যাঙ্কের সেভিংস অ্যাকাউন্ট থেকে কত টাকা তুলতে পারবেন এবং মোট কত লেনদেন করা যাবে?
এছাড়াও এসসি (SC), এসটি (ST) এবং ওবিসি (OBC) শ্রেণির মানুষজন এবং ইডব্লিউএস (EWS) এবং এলআইজি (LIG)-র অন্তর্ভুক্ত মহিলারাও প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার আওতায় সুবিধা পাবেন।
তবে মনে রাখতে হবে, ১। প্রধানত অর্থনৈতিক ভাবে দুর্বল বা ইডব্লিউএস, নিম্ন আয় গোষ্ঠী বা এলআইজি এবং মধ্য আয় গোষ্ঠী ১ বা এমআইজি ১ এই প্রকল্পের সুবিধে পেয়ে থাকেন। ২। এই প্রকল্পের অধীনে অর্থনৈতিক ভাবে দুর্বল বা ইডব্লিউএস বিভাগ সম্পূর্ণ সাহায্য পায়। নিম্ন আয় গোষ্ঠী বা এলআইজি বিভাগে শুধুমাত্র লিঙ্ক সাবসিডি স্কিমের সুবিধে মেলে। ৩। অর্থনৈতিক ভাবে দুর্বল বা ইডব্লিউএস, নিম্ন আয় গোষ্ঠী বা এলআইজি স্কিমের সুবিধে পেতে হলে বার্ষিক আয়ের প্রমাণপত্র বা হলফনামা জমা দিতে হবে। আবেদনের সময় পরিচয় পত্র এবং ঠিকানার প্রমাণও জমা দিতে হবে।