ভক্তদের বিশ্বাস, এই পূজা করলে আধ্যাত্মিক কল্যাণ ঘটে এবং জীবনের বিভিন্ন বাধা দূর হয়। এটি বিশেষভাবে উপকারী তাদের জন্য, যাঁরা ব্যক্তিগত ও কর্মজীবনে নানা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন।
কখন এবং কীভাবে এই পূজা করা হয়? শ্রীকালহস্তী মন্দিরে প্রতিদিন সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত রাহু-কেতু পূজা করা হয়। ভক্তরা ৫০০ টাকা থেকে ৫,০০০ টাকা পর্যন্ত মূল্যের টিকিট কিনে এই পূজাতে অংশ নিতে পারেন। টিকিটের মূল্যের ভিত্তিতে ভক্তদের সংখ্যা নির্ধারিত হয় এবং যাঁরা ব্যক্তিগতভাবে পুরোহিতের সহায়তায় পূজা করতে চান, তাঁদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা রয়েছে।
advertisement
মন্দিরের টিকিট কাউন্টার থেকে সরাসরি টিকিট কেনা যায়। তবে ভক্তদের অবশ্যই ঐতিহ্যবাহী পোশাকে পূজায় অংশ নিতে হয়। পুরুষদের জন্য ধুতি বা কুর্তা-পাজামা এবং মহিলাদের জন্য শাড়ি বা পাঞ্জাবি পোশাক পরিধান বাধ্যতামূলক।
বিশেষ আকর্ষণ ও আধ্যাত্মিক গুরুত্ব – শ্রীকালহস্তী দেবস্থানম পূজার জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ প্রদান করে। বিশেষত চন্দ্র ও সূর্যগ্রহণের সময় এই মন্দিরে বিশেষ পূজা ও অভিষেক অনুষ্ঠিত হয় এবং মন্দির খোলা থাকে।
এই পূজা অন্যান্য শিব মন্দিরের তুলনায় একেবারেই অনন্য। পণ্ডিতদের মতে, শ্রীকালহস্তী মন্দিরে শ্রী বায়ু লিঙ্গেশ্বর স্বয়ং বিরাজমান আছেন, যা এক বিশেষ আধ্যাত্মিক শক্তির প্রতীক। এটি দক্ষিণ কাশী হিসেবে পরিচিত এবং এখানে পাঁচ উপাদানের মধ্যে বায়ুর প্রতীক হিসেবে মহাদেব বিরাজ করছেন। ভক্তদের ইচ্ছাপূরণে ভগবান শিব কোনও পরীক্ষা নেন না বলেই তাঁকে “ভোলা শংকর” বলা হয়।
শ্রীকালহস্তী মন্দিরের ইতিহাস – শ্রীকালহস্তী মন্দিরের ইতিহাস বহু শতাব্দী ধরে বিস্তৃত। পল্লব বংশের শাসনকালে এই মন্দির নির্মিত হয়েছিল বলে মনে করা হয়। মূল মন্দিরটি ৫ম শতকে স্থাপিত হয়েছিল, তবে বাইরের অংশ চোল ও বিজয়নগর শাসকদের আমলে, ১২শ শতকে নির্মিত হয়। এই মন্দির বহু রাজবংশের অধীনে সংস্কার ও সম্প্রসারণের মাধ্যমে তার ঐতিহ্য ধরে রেখেছে। মন্দিরের স্থাপত্য পল্লব, চোল ও বিজয়নগর স্থাপত্যশৈলীর সংমিশ্রণে তৈরি।
আজ, শ্রীকালহস্তী মন্দির ভারতের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ তীর্থস্থান। এটি বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে আসা ভক্তদের আকর্ষণ করে। রাহু-কেতু পূজার বিশেষ মাহাত্ম্য ও আধ্যাত্মিক শক্তি এই মন্দিরকে আরও বিশেষ করে তুলেছে। যাঁরা জীবনে বাধা-বিপত্তির সম্মুখীন হচ্ছেন, তাঁদের জন্য এই পূজা এক শুভ সুযোগ এনে দেয়, যা শান্তি ও ভারসাম্য ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে।