ডাক্তারের কাছে গেলে প্রথমেই তিনি জিভ দেখতে চান। কেন জানেন? আপনার শরীর খারাপ কী না? কতটা খারাপ? এর লক্ষণ ফুটে ওঠে জিভে-ই। জিভের স্বাভাবিক লালচে গোলাপি রং বদলে যাওয়া মানেই তা রোগের লক্ষণ!
অনেক সময়ে জিভের উপর সাদা আস্তরণ পড়া। এই সাদা আস্তরণ কেন পড়ে জানেন? কোন রোগের ইঙ্গিত দেয় এই সাদা আস্তরণ?
জিভে সাদা আস্তরণ পড়া মানে শরীরে ব্যাক্টেরিয়া বা ছত্রাকের আক্রমণ হয়েছে। মুখ নিয়মিত পরিষ্কার না করলেও জিভে সাদা আস্তরণ পড়তে পারে। পাশাপাশি, ডিহাইড্রেশনের সমস্যা হলেও জিভ সাদা হয়ে যায়। সাদা জিভ কোন কোন রোগের জানান দেয়?
লিউকোপ্লাকিয়া (Leukoplakia): এই অবস্থায় গালের ভিতরের অংশে, মাড়ির ধারে এবং কখনও কখনও জিভে সাদা দাগ দেখা দেয়। ধূমপান বা তামাক চিবালে লিউকোপ্লাকিয়া হতে পারে। অতিরিক্ত মদ্যপানও এর নেপথ্যের আরেকটি কারণ। সাধারণত এই সাদা দাগগুলো ক্ষতিকর নয়। তবে কিছু ক্ষেত্রে লিউকোপ্লাকিয়া মুখের ক্যানসারে পরিণত হতে পারে
ওরাল লাইখেন প্লানাস (Oral lichen planus): এই অবস্থায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার সমস্যার কারণে মুখ ও জিভে সাদা দাগ দেখা দেয়। সাদা জিভের পাশাপাশি মাড়িতেও ব্যথা হতে পারে। মুখের ভিতরের আস্তরণে ঘা হতে পারে।
ওরাল থ্রাশ (Oral thrush): মুখের ভিতরে ক্যান্ডিডা ইস্ট নামে এক ধরনের ছত্রাক থাকে। এই ছত্রাক মাত্রাতিরিক্ত হারে বেড়ে গেলে জিভে সাদা আস্তরণ তৈরি হয়। বিজ্ঞানের ভাষায় একে ওরাল থ্রাশ বলে। ডায়াবেটিস রোগীদের মধ্যে ওরাল থজরাস দেখা যায়।
সিফিলিস (Syphilis): সাধারণথ অসুরক্ষিত যৌন মিলনের মাধ্যমে এই রোগের ব্যাক্টেরিয়া শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। এই যৌনবাহিত রোগে মুখে ঘা হতে পারে। সিফিলিসের চিকিৎসা না করালে জিভে সিফিলিটিক লিউকোপ্লাকিয়া নামে সাদা দাগ তৈরি হতে পারে।
এছাড়াও অনেকের মধ্যে দেখা যায় ‘স্ট্রবেরি’ জিভ। অর্থাৎ জিভের উপর স্ট্রবেরির মতো লালচে কাঁটা কাঁটা ফুটে ওঠা। এর অর্থ, শরীরে ভিটামিনের ঘাটতি হয়েছে, বিশেষ করে ভিটামিন বি। ডাক্তারি পরিভাষায় একে বলে কাওয়াসাকি ডিজিজ, বাচ্চারা এই রোগে বেশি আক্রান্ত হয়।
নীল বা বেগুনি জিভ– এই রং-এর জিভ মানে রক্তে অক্সিজেনের ঘাটতি হয়েছে। শ্বাসযন্ত্র কিংবা কার্ডিয়োভাসকুলার কোনও সমস্যা থাকলেও জিভের রং নীল হয়ে যেতে পারে। নীল বা বেগুনি জিভ ‘সায়ানোসিস’-এর লক্ষণ-ও হতে পারে। এই ক্ষেত্রেও রক্তে অক্সিজেন-এর মাত্রা কমে যায়।