কিডনি সাধারণত নীরবে কাজ করে—রক্ত পরিশোধন, দেহে তরলের ভারসাম্য রক্ষা আর দেহের ভিতরের রসায়ন সঠিক রাখাই কিডনির কাজ। হার্ট বা পাকস্থলীর মতো নয়, কিডনি সচরাচর কোনও বিপদের সংকেত স্পষ্ট করে দেয় না। তবে খুব সহজেই বোঝা যায় কিডনি ভাল আছে কী না
এর জন্য ল্যাব টেস্টই যে দরকার, এমন নয়। রোজের ছোট ছোট লক্ষণ, যা আমরা সাধারণত এড়িয়ে যায়, সেগুলিই জানান দেয়, কিডনি ভাল আছে। শরীরের কোন কোন লক্ষণ বলে দেয়, আপনার কিডনি সুস্থ?
সকালের শ্বাস সতেজ ও নির্মল থাকে — দুর্গন্ধযুক্ত শ্বাস সবসময় শুধু খারাপ মুখগহ্বর পরিচর্যা বা হজমজনিত সমস্যার ফল নয়। কিডনি রক্ত থেকে ইউরিয়া-সহ নানা বর্জ্য পদার্থ ছেঁকে ফেলার গুরুত্বপূর্ণ কাজটি করে। যখন কিডনির কার্যক্ষমতা কমে যায়, তখন শরীরে টক্সিন জমতে থাকে, ফলে শ্বাসে বিশেষ করে সকালের শ্বাসে মাছের গন্ধ বা অ্যামোনিয়ার মতো গন্ধ পাওয়া যায়। যদি ঘুম থেকে উঠে মুখে শুষ্কতা না থাকে, কোনও অস্বাভাবিক স্বাদ না লাগে এবং ব্রাশ করার আগেও শ্বাসে কোনও দুর্গন্ধ না থাকে—তবে সেটি নিঃশব্দে জানিয়ে দেয়, কিডনি ঠিকমতো কাজ করছে।
দিদিনভর শরীরে এনার্জি থাকে সমানভাবে–দিনভর স্থির ও শরীরে স্বাভাবিক এনার্জি থাকা, দুপুরে হঠাৎ ক্লান্তি বা সন্ধ্যাবেলার ঝিমুনি অনুভব না করার মতো লক্ষণ জানান দেয় কিডনি ও হরমোনের মধ্যে এক সুস্থ ভারসাম্য বজায় আছে।
বাড়তি কোনও ময়েশ্চারাইজার ছাড়াই যদি ত্বক ময়েশ্চারাইজড মনে হয়–দিনভর যদি ত্বক—বিশেষ করে হাত ও পায়ের পেছনের অংশ খসখসে না হয়ে নরম ও মসৃণ থাকে, তাহলে বুঝতে হবে কিডনি ভাল আছে।
ঘুম থেকে উঠে চোখ বা মুখের ফোলাভাব অনেক সময় ইঙ্গিত দেয় যে শরীরে জল জমে আছে—এবং এর কারণ হতে পারে কিডনি সঠিকভাবে তরলের ভারসাম্য বজায় রাখতে পারছে না। সকালে যদি মুখ সতেজ লাগে, কোনও ফোলাভাব না থাকে, তার মানে কিডনি ভাল আছে, রাতে ঠিকঠাক পরিমাণ তরল শরীর থেকে বার করে দিয়েছে।
যদি ঘুমের সময় বা ব্যায়ামের পরও পেশি রিল্যাক্সড থাকে, পেশিতে টান বা খিঁচুনি না ধরে, তার মানে দেহে খনিজের সঠিক ভারসাম্য বজায় রয়েছে এবং কিডনি সঠিকভাবে কাজ করছে।
কিডনি শরীর থেকে দূষিত পদার্থ বার করে দেয়। পাশাপাশি, শরীরের সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ফসফেটের মাত্রাও নিয়ন্ত্রণে রাখে। কিডনিতে সমস্যা থাকলে রোজের খাবারে সোডিয়াম, পটাশিয়াম ও ফসফরাসের মাত্রার উপর নজর রাখতে হবে।