

করোনাভাইরাসের (Coronavirus) জন্য অনেক সংস্থাই ওয়ার্ক ফ্রম হোম (Work From Home) বা বাড়িতে থেকে কাজের সুবিধে করে দিয়েছে। এতে পরিযায়ী কর্মীরা বাড়ি ফিরে কাজ করতে পারছেন। ফলে, বাড়ির পরিবেশে আরামে কাজ করা যাচ্ছে, যাতায়াতের সমস্যা নেই বা ফরম্যাল ড্রেসে সারাক্ষণ নিজেকে প্রেজেন্টেবল রাখার ঝামেলাও সহ্য করতে হচ্ছে না। ফলে ওয়ার্ক ফ্রম শুনেই অনেকেই খুশি।


তবে, বাড়িতে থেকে কাজ শুরু করার পর কিন্তু তাঁদের মধ্যে বেশিরভাগ জনই একাধিক সমস্যায় পড়েছেন। তার মধ্যে সব চেয়ে বড় সমস্যা ওয়ার্ক লাইফ ব্যালেন্স (Work Life Balance) করা। বাড়িতে সব কাজ সামলে, সবার মাঝে অফিস করা বা অফিসের কাজে মনোনিবেশ করাটা সমস্যার বলেই মনে করছেন অনেকেই।


বেশ কয়েকটি সমীক্ষা বলছে, বাড়িতে বসে কাজ শুরু করার পর অনেকেরই মানসিক সমস্যা বেড়েছে। একদিকে কাজের চাপ, অন্য দিকে পরিবার ও কাজের মধ্যে আলাদা সময় বের করতে না পারার জন্য এটা হয়েছে। পাশাপাশি যাঁরা একটি ঘরেই একসঙ্গে থাকেন, কাজ করেন, তাঁদের সমস্যা হচ্ছে আরও বেশি।


সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, সমস্ত সেক্টরের কাজেই চাপ বেড়েছে এবং তা নিয়ে সকলেই রয়েছেন সমস্যা। এ ক্ষেত্রে আলাদা করে পরিবার ও কাজের মধ্যে ব্যালেন্স করাটায় সমস্যা হচ্ছে। যাঁরা একা থাকেন বা সিঙ্গল, তাঁদের ক্ষেত্রে সমস্যা কম। কিন্তু যাঁরা পরিবারের সঙ্গে থাকেন বা বিবাহিত, তাঁদের সমস্যা বেশি। বিশেষ করে যাঁদের ছোট বাচ্চা রয়েছে, তাঁদের কাজ করতে আরও বেশি চাপ হয় বা সমস্যার মুখে পড়তে হয়।


প্রত্যেকের বাড়ির পরিবেশ আলাদা আলাদা হয়। প্রত্যেকেরই পরিস্থিতি আলাদা হয়। ফলে কাজ করার অভিজ্ঞতাও আলাদা। তবে, ওয়ার্ক লাইফ ব্যালেন্স (Work Life Balance)-এ সমস্যা হলে এগুলি মেনে চলা যেতে পারে!


চাপ কমানো - সব কাজ একদম সঠিক ভাবে হবে এবং কোনও কাজে ভুল থাকবে না, এমন অনেকেই চান। কিন্তু এটা খুবই সত্যি যে ভুল হতেই পারে। তাই সেই নিয়ে খুব বেশি চাপ না নেওয়া ভালো। পাশাপাশি বাড়িতে বসে কাজ করলে প্রিন্টার বা অন্য়ান্য দরকারি জিনিস না-ও থাকতে পারে, সেই নিয়েও চাপ নেওয়া উচিৎ হবে না। মনে রাখতে হবে, যা আছে তা দিয়েই মানিয়ে নিতে হবে।


অফলাইন হয়ে যাওয়া - অফিসে থাকলে সমস্ত কাজ সামনাসামনি হয়, ফলে অনলাইন থাকার তেমন একটা দরকার পড়ে না। কিন্তু বাড়িতে থেকে কাজ করলে অনলাইন থাকতে হয় প্রায় সব সময়ে। যার ফলে পরিবারের বাকিরা বিরক্তবোধ করতে পারেন। তাই অফিসের কাজ ও পরিবারের সময় আলাদা করা প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে কাজ শেষ হওয়ার পরেই অফলাইন হয়ে গেলে এই সমস্যা কম হতে পারে।


বাড়ি ও কাজের মধ্যে দূরত্ব - বাড়ি থেকে অফিস যাওয়া ও অফিস থেকে বাড়ি ফেরা, এই দুইয়ের মাঝে বাসে-ট্রামে যাওয়া বা গাড়িতে-মেট্রোয় যাতায়াত হয়। তাতে রিফ্রেশ হওয়ার জায়গা থাকে। অনেকের সঙ্গে কথা হতে পারে, গান শোনা বা নিজেকে সময় দেওয়ার জায়গা থাকে। কিন্তু সবটাই যখন বাড়িতে হয়, এই সময়টা নিজের জন্য পাওয়া যায় না। ফলে বিরক্ত বা একঘেয়েমি লাগতে পারে। ফলে কাজ শেষ হওয়ার পর একটু হেঁটে আসা বা কারও সঙ্গে গল্প করা এই একঘেয়েমি কাটাতে পারে।


অতিরিক্ত সময়ে কাজ - অফিসে কাজ করলে একটা বাঁধাধরা সময় থাকে। নির্দিষ্ট সময়ে বাড়ি ফেরা বা কাজ শেষ করার তাড়াও থাকে। কিন্তু বাড়ি থেকে কাজ করলে অনেকেই সেই সব নিয়ে ভাবেন না। তাই সারা দিনই কাজের মধ্যে থাকেন। এতে মানসিক সমস্যা হতে পারে। তাই বাড়ি থেকে কাজ করলেও মাথায় রাখা উচিৎ, অফিস টাইমেই কাজ শেষ করতে হবে।