Tilak Varma: ‘ব্যাট-বল নিয়েই ঘুমোতে যেতেন’, সেঞ্চুরিয়ানের নায়ক তিলক ভার্মার ছোটবেলার গল্প শোনালেন ইলেকট্রিক মিস্ত্রি বাবা

Last Updated:
সেঞ্চুরিয়ানের বাইশ গজ মঞ্চ সাজিয়ে প্রস্তুত ছিল। তিলক ভার্মা এলেন, দেখলেন এবং জয় করলেন।
1/8
হায়দরাবাদি ঘরানার ব্যাটসম্যান তিনি। মহম্মদ আজহারউদ্দিন, ভিভিএস লক্ষণদের যোগ্য উত্তরসূরী। সেই সূক্ষ কবজির মোচড়, ব্যাকফুটে দৃষ্টিনন্দন কভার ড্রাইভ, গোটা মাঠ জুড়ে শটের ফুলঝুরি - সবই রয়েছে তাঁর ব্যাটে। এতদিন সেঞ্চুরি ছিল না। এবার সেটাও হয়ে গেল। সেঞ্চুরিয়ানের বাইশ গজ মঞ্চ সাজিয়ে প্রস্তুত ছিল। তিলক ভার্মা এলেন, দেখলেন এবং জয় করলেন। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ৫৬ বল খেলে করলেন ১০৭ রান। ইনিংসে ৮টি চার, ৭টি ছক্কা। টি২০-তে যেমন চাই, তেমনই মারকাটারি ব্যাটিং করলেন। Photo: AFP
হায়দরাবাদি ঘরানার ব্যাটসম্যান তিনি। মহম্মদ আজহারউদ্দিন, ভিভিএস লক্ষণদের যোগ্য উত্তরসূরী। সেই সূক্ষ কবজির মোচড়, ব্যাকফুটে দৃষ্টিনন্দন কভার ড্রাইভ, গোটা মাঠ জুড়ে শটের ফুলঝুরি - সবই রয়েছে তাঁর ব্যাটে। এতদিন সেঞ্চুরি ছিল না। এবার সেটাও হয়ে গেল।
সেঞ্চুরিয়ানের বাইশ গজ মঞ্চ সাজিয়ে প্রস্তুত ছিল। তিলক ভার্মা এলেন, দেখলেন এবং জয় করলেন। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ৫৬ বল খেলে করলেন ১০৭ রান। ইনিংসে ৮টি চার, ৭টি ছক্কা। টি২০-তে যেমন চাই, তেমনই মারকাটারি ব্যাটিং করলেন। Photo: AFP
advertisement
2/8
কিন্তু প্রত্যেক শটে থাকল শিল্পের ছোঁয়া। বুঝিয়ে দিলেন, আগামীর ২২ গজ শাসন করতে এসেছেন তিনি। আইপিএলে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে মাঠে নামেন তিলক। দেশের হয়ে এখনও পর্যন্ত ৪টি ওয়ান ডে এবং ১৮টি টি২০ খেলেছেন। তাঁর ব্যাটিং দেখে উচ্ছ্বসিত প্রাক্তন ক্রিকেটাররা। প্রশংসায় ভরিয়ে দিচ্ছেন। এতদিন বড় রান পাচ্ছিলেন না। এবার আশ মিটিয়ে নিলেন। সঙ্গে দলকেও টানলেন নিজের কাঁধে। পৌঁছে দিলেন জয়ের দোরগোড়ায়। সেঞ্চুরির সঙ্গেই এদিন নতুন রেকর্ডও গড়লেন তিলক। সবচেয়ে কম বয়সী ব্যাটসম্যান হিসাবে টি২০-এর ক্রমতালিকার প্রথম দশে থাকা কোনও দলের বিরুদ্ধে শতরানের রেকর্ড।
কিন্তু প্রত্যেক শটে থাকল শিল্পের ছোঁয়া। বুঝিয়ে দিলেন, আগামীর ২২ গজ শাসন করতে এসেছেন তিনি। আইপিএলে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে মাঠে নামেন তিলক। দেশের হয়ে এখনও পর্যন্ত ৪টি ওয়ান ডে এবং ১৮টি টি২০ খেলেছেন। তাঁর ব্যাটিং দেখে উচ্ছ্বসিত প্রাক্তন ক্রিকেটাররা। প্রশংসায় ভরিয়ে দিচ্ছেন। এতদিন বড় রান পাচ্ছিলেন না। এবার আশ মিটিয়ে নিলেন। সঙ্গে দলকেও টানলেন নিজের কাঁধে। পৌঁছে দিলেন জয়ের দোরগোড়ায়। সেঞ্চুরির সঙ্গেই এদিন নতুন রেকর্ডও গড়লেন তিলক। সবচেয়ে কম বয়সী ব্যাটসম্যান হিসাবে টি২০-এর ক্রমতালিকার প্রথম দশে থাকা কোনও দলের বিরুদ্ধে শতরানের রেকর্ড।
advertisement
3/8
২০০২ সালের ৮ নভেম্বর জন্ম তিলকের। বাবা নম্বূরি নাগারাজু পেশায় ইলেকট্রিক মিস্ত্রি। মা গায়ত্রীদেবী। তিনি নিছকই গৃহবধূ। টানাটানির সংসার। এমন সংসারে ছেলেকে ক্রিকেটার বানানোর স্বপ্ন নেহাতই বিলাসিতা। তবে নাগারাজু সেই স্বপ্নটাই দেখেছিলেন। ব্যাট-বলের প্রতি ছেলের তীব্র প্যাশন চাড়িয়ে গিয়েছিল তাঁর মধ্যেও। কোনও কার্পণ্য করেননি।
২০০২ সালের ৮ নভেম্বর জন্ম তিলকের। বাবা নম্বূরি নাগারাজু পেশায় ইলেকট্রিক মিস্ত্রি। মা গায়ত্রীদেবী। তিনি নিছকই গৃহবধূ। টানাটানির সংসার। এমন সংসারে ছেলেকে ক্রিকেটার বানানোর স্বপ্ন নেহাতই বিলাসিতা। তবে নাগারাজু সেই স্বপ্নটাই দেখেছিলেন। ব্যাট-বলের প্রতি ছেলের তীব্র প্যাশন চাড়িয়ে গিয়েছিল তাঁর মধ্যেও। কোনও কার্পণ্য করেননি।
advertisement
4/8
স্টার স্পোর্টসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নাগারাজু বলেছিলেন, “ছোট থেকেই ছেলে ব্যাট-বল অন্ত প্রাণ। সবসময় ক্রিকেট আর ক্রিকেট। খেলনার দোকান থেকে একটা প্লাস্টিকের ব্যাট কিনে দিয়েছিলাম। সেটা নিয়েই থাকত সবসময়। ঘুমনোর সময়ও বালিশের পাশে রাখা থাকত ব্যাট। যেন ওটা হাতছাড়া না হয়।” ছেলের সেঞ্চুরিতে খুশি বাবা। এতদিনের এত পরিশ্রম সার্থক হল। তিলকের ভিতরের সুপ্ত প্রতিভাকে জাগানোর কাজটা করেছিলেন সালাম বায়িশ। তিনিই তিলকের ছোটবেলার কোচ। শুধু ক্রিকেট নয়, সবরকমভাবে ভার্মা পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি। ক্রিকেটার হতে গেলে শরীরে শক্তি চাই, নাহলে বড় শট মারবে কী করে। সঙ্গে চাই ক্রিকেটিয় সরঞ্জাম। ব্যাট, প্যাড, গ্লাভস। তিলকের একপ্রকার দায়িত্বই নিয়ে নিয়েছিলেন সালাম স্যর।
স্টার স্পোর্টসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নাগারাজু বলেছিলেন, “ছোট থেকেই ছেলে ব্যাট-বল অন্ত প্রাণ। সবসময় ক্রিকেট আর ক্রিকেট। খেলনার দোকান থেকে একটা প্লাস্টিকের ব্যাট কিনে দিয়েছিলাম। সেটা নিয়েই থাকত সবসময়। ঘুমনোর সময়ও বালিশের পাশে রাখা থাকত ব্যাট। যেন ওটা হাতছাড়া না হয়।” ছেলের সেঞ্চুরিতে খুশি বাবা। এতদিনের এত পরিশ্রম সার্থক হল। তিলকের ভিতরের সুপ্ত প্রতিভাকে জাগানোর কাজটা করেছিলেন সালাম বায়িশ। তিনিই তিলকের ছোটবেলার কোচ। শুধু ক্রিকেট নয়, সবরকমভাবে ভার্মা পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি। ক্রিকেটার হতে গেলে শরীরে শক্তি চাই, নাহলে বড় শট মারবে কী করে। সঙ্গে চাই ক্রিকেটিয় সরঞ্জাম। ব্যাট, প্যাড, গ্লাভস। তিলকের একপ্রকার দায়িত্বই নিয়ে নিয়েছিলেন সালাম স্যর।
advertisement
5/8
নাগারাজু বলছেন, “সালাম স্যর সবসময় পাশে দাঁড়িয়েছেন। তিলককে উৎসাহ দিতেন। খাবার হোক বা ক্রিকেটের সরঞ্জাম, তিনি বলতেন ‘আমি দেব’। আমাকে বলতেন, ‘কোনও অসুবিধা হলে বলবেন। আমি সবসময় আছি। তিলককে আরও এগিয়ে যেতে হবে।‘কিন্তু পড়াশোনাটাও তো করতে হবে। সালাম স্যরকে বলেছিলাম, ‘‘দেখবেন যেন পড়াশোনায় ফাঁকি না দেয়। আমাদের আশ্বস্ত করতেন, সব ঠিক হয়ে যাবে। টাকাপয়সা কোনও সমস্যা হবে না। সালাম স্যরই তিলকের গডফাদার।”
নাগারাজু বলছেন, “সালাম স্যর সবসময় পাশে দাঁড়িয়েছেন। তিলককে উৎসাহ দিতেন। খাবার হোক বা ক্রিকেটের সরঞ্জাম, তিনি বলতেন ‘আমি দেব’। আমাকে বলতেন, ‘কোনও অসুবিধা হলে বলবেন। আমি সবসময় আছি। তিলককে আরও এগিয়ে যেতে হবে।‘কিন্তু পড়াশোনাটাও তো করতে হবে। সালাম স্যরকে বলেছিলাম, ‘‘দেখবেন যেন পড়াশোনায় ফাঁকি না দেয়। আমাদের আশ্বস্ত করতেন, সব ঠিক হয়ে যাবে। টাকাপয়সা কোনও সমস্যা হবে না। সালাম স্যরই তিলকের গডফাদার।”
advertisement
6/8
প্রতিভা আর পরিশ্রম। তিলকের সাফল্যের চাবিকাঠি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে অভিষেকে ২২ বলে ৩৯ রান করেছিলেন। টিম ইন্ডিয়া সেই ম্যাচে হেরে যায়। কিন্তু তিলকের পারফরম্যান্স নজর কাড়ে সকলের। দ্বিতীয় টি২০-তে হাফ সেঞ্চুরি করেন। ৪১ বলে করেন ৫১ রান। কঠিন পিচ, চাপ থেকে একা হাতে দলকে টেনে তোলেন তিনি। এরপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। তবে তিলকের উত্থান আইপিএলের হাত ধরেই। ২০২২ সালে ১.৭ কোটি টাকায় তাঁকে দলে নেয় মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। পরের মরশুমে ১১ ম্যাচ খেলে করেন ৩৪৩ রান। সেরা ব্যাটসম্যানদের সঙ্গে তাঁর কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই নজরে পড়ে নির্বাচকদের।
প্রতিভা আর পরিশ্রম। তিলকের সাফল্যের চাবিকাঠি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে অভিষেকে ২২ বলে ৩৯ রান করেছিলেন। টিম ইন্ডিয়া সেই ম্যাচে হেরে যায়। কিন্তু তিলকের পারফরম্যান্স নজর কাড়ে সকলের। দ্বিতীয় টি২০-তে হাফ সেঞ্চুরি করেন। ৪১ বলে করেন ৫১ রান। কঠিন পিচ, চাপ থেকে একা হাতে দলকে টেনে তোলেন তিনি। এরপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। তবে তিলকের উত্থান আইপিএলের হাত ধরেই। ২০২২ সালে ১.৭ কোটি টাকায় তাঁকে দলে নেয় মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। পরের মরশুমে ১১ ম্যাচ খেলে করেন ৩৪৩ রান। সেরা ব্যাটসম্যানদের সঙ্গে তাঁর কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই নজরে পড়ে নির্বাচকদের।
advertisement
7/8
এরপরই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ভারতীয় দলে ডাক পান তিলক। একটা সময় চোট পেয়ে ছিটকে গিয়েছিলেন। তারপর সেঞ্চুরিয়ানে ফিরেই সেঞ্চুরি। তিলকের চোখে মুখে তৃপ্তির ছোঁয়া। বাঁ হাতি ব্যাটসম্যান বলছেন, “এই মুহূর্তটার জন্য দীর্ঘদিন অপেক্ষায় ছিলাম। চোট থেকে ফিরে সেঞ্চুরি করতে পেরে ভাল লাগছে। পিচ কঠিন ছিল। শুরুতে দেখে খেলছিলাম। তারপর বড় শট নিয়েছি। অভিষেক শর্মাও ভাল খেলেছে।”
এরপরই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ভারতীয় দলে ডাক পান তিলক। একটা সময় চোট পেয়ে ছিটকে গিয়েছিলেন। তারপর সেঞ্চুরিয়ানে ফিরেই সেঞ্চুরি। তিলকের চোখে মুখে তৃপ্তির ছোঁয়া। বাঁ হাতি ব্যাটসম্যান বলছেন, “এই মুহূর্তটার জন্য দীর্ঘদিন অপেক্ষায় ছিলাম। চোট থেকে ফিরে সেঞ্চুরি করতে পেরে ভাল লাগছে। পিচ কঠিন ছিল। শুরুতে দেখে খেলছিলাম। তারপর বড় শট নিয়েছি। অভিষেক শর্মাও ভাল খেলেছে।”
advertisement
8/8
এদিন শুধু পিচ নয়। পরিস্থিতিও কঠিন ছিল। শুরুতেই সঞ্জু স্যামসন শূন্য রানে আউট হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান। ক্রিজে আসেন তিলক। অভিষেক শর্মার সঙ্গে জুটি বেঁধে ধীরে সুস্থে খেলতে শুরু করেন। প্রথমে ক্রিজে জমে যান। তারপর হাত খোলেন। তবে মারার বল ছাড়েননি। অভিষেক ২৫ বলে ৫০ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলে আউট হন। তাঁকে যোগ্য সঙ্গত দিয়ে যান তিলক। অভিষেক, সূর্যকুমার যাদব এবং হার্দিক পান্ডিয়া আউট হওয়ার পর ম্যাচ কিছুটা মন্থর হয়ে যায়। তিলক ধৈর্য ধরে ইনিংস গড়ে তোলেন। ১৯ ওভারে করেন সেঞ্চুরি।
এদিন শুধু পিচ নয়। পরিস্থিতিও কঠিন ছিল। শুরুতেই সঞ্জু স্যামসন শূন্য রানে আউট হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান। ক্রিজে আসেন তিলক। অভিষেক শর্মার সঙ্গে জুটি বেঁধে ধীরে সুস্থে খেলতে শুরু করেন। প্রথমে ক্রিজে জমে যান। তারপর হাত খোলেন। তবে মারার বল ছাড়েননি। অভিষেক ২৫ বলে ৫০ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলে আউট হন। তাঁকে যোগ্য সঙ্গত দিয়ে যান তিলক। অভিষেক, সূর্যকুমার যাদব এবং হার্দিক পান্ডিয়া আউট হওয়ার পর ম্যাচ কিছুটা মন্থর হয়ে যায়। তিলক ধৈর্য ধরে ইনিংস গড়ে তোলেন। ১৯ ওভারে করেন সেঞ্চুরি।
advertisement
advertisement
advertisement