ICC World Cup 2023: মাঠে আগুন থেকে কোচ খুন! বিশ্বকাপের ৭ মহা বিতর্ক, যা লজ্জার-কলঙ্কের
- Published by:Sudip Paul
- news18 bangla
Last Updated:
ODI World Cup 2023 Biggest and shocking Controversies of Cricket World Cup History ICC World Cup 2023: ৫ অক্টোবর থেকে শুরু আইসিসি ওডিআই বিশ্বকাপ ২০২৩। ক্রিকেট জ্বরে কাবু আট থেকে আশি। প্রতি বিশ্বকাপ যেমন একদিকে রেকর্ড ভাঙা-গড়ার খেলা, ঠিক তেমনই বিতর্কও পিছু ছাড়েনি ক্রিকেট বিশ্বকাপের। এমন কিছু বিতর্কিত ঘটনা ক্রিকেট বিশ্বকাপের ইতিহাসে রয়েছে যা চিরকার লজ্জার ও কলঙ্কের হয়ে থেকে যাবে।
advertisement
অবাক নিয়ম: ১৯৯২ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে তবে প্রথমবারই তুমুল সমালোচনার জন্ম দেয় এটি। সেমিফাইনালে সেবার মুখোমুখি হয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা ও ইংল্যান্ড। সেবারই ম্যাচে বৃষ্টি হলে তা নিয়ে নতুন নিয়ম আনা হয়েছিল। ৪৫ ওভারে ইংল্যান্ড আগে ব্যাট করে সংগ্রহ করে ৬ উইকেটে ২৫২ রান। স্লো বোলিংয়ের জন্য ইংল্যান্ডের খেলা থামিয়ে দেওয়া হয় ৪৫ ওভারেই। রান তাড়া করতে নেমে ঠিকমতোই এগোচ্ছিল প্রোটিয়ারা। কিন্তু যখন ১৩ বলে প্রয়োজন ২২ রানের, ঠিক সেই সময় তুমুল বৃষ্টি নামে। তাই খেলা বন্ধ থাকে কিছুক্ষণ। পরবর্তীতে খেলা মাঠে গড়াতেই চক্ষু ছানাবড়া হয়ে যায় প্রোটিয়াদের। জানা যায় জিততে হলে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রয়োজন ১ বলে ২২ রান! বৃষ্টি আইনে ২ ওভার কাটা হলেও রানের কোনো হেরফের হয়নি। এই নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয় যে, চাইলেই শেষ দুই ওভার খেলাতে পারতেন আম্পায়াররা। এমনকি পুরো খেলা শেষ হয়ে যাওয়ার পরও নির্ধারিত সময়ের আরো ২ মিনিট তখনও হাতে ছিল। কিন্তু কোন নিয়মে এমনটা হয়েছিল তা আজও রহস্য।
advertisement
ইডেনে চরম বিশৃঙ্খলা: ১৯৯৬ বিশ্বকাপের সেমিফাইনেলে কলকাতার ইডেন গার্ডেন্স যে বিশৃঙ্খলা ও হিংসাত্মক পরিস্থিতির সাক্ষী থেকেছিল তা ক্রিকেট ইতিহাসে খুব একটা হয়নি। সেমি ফাইনালে শ্রীলঙ্কার দেওয়া ২৫২ রানের টার্গেট তাড়া করতে নেমে ভারতের স্কোর ১২০ রান ৮ উইকেট হয়ে যায়। প্রিয় দলের এই শোচনীয় পরাজয় মেনে নিতে না পেরে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে সমর্থকরা। মাঠের ভেতর বোতল ছুড়ে মারতে শুরু করেন। স্ট্যান্ডে আগুন লাগিয়ে দেন। ক্ষিপ্ত জনতাকে কোনওভাবই সেদিন শান্ত করা যায়নি। আর খেলা এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি। শেষ পর্যন্ত শ্রীলঙ্কাকে জয়ী ঘোষণা করা হয়।
advertisement
সম্ভবত সবচেয়ে হাস্যকর কাহিনী ছিল শেন ওয়ার্নের নিষেধাজ্ঞা। ২০০৩ বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়া মূল দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন এই কিংবদন্তি লেগ স্পিনার। কিন্তু টুর্নামেন্ট শুরুর একদিন আগেই ডোপ টেস্টে পজিটিভ হয়ে টুর্নামেন্ট থেকে বহিষ্কৃত হন তিনি। তবে শেন ওয়ার্নের দাবি ছিল, কোনো ড্রাগ তিনি নেননি। নিজেকে সুশ্রী করে তুলতে মায়ের দেওয়া একটি ওষুধ খেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তাতে যে ডোপ পজিটিভ উপাদান ছিল, সেটা তিনি নিজেও নাকি জানতেন না। তবে তাতে শাস্তি আটকায়নি ওয়ার্নের। বিশ্বকাপ শুরু হওয়ার এক দিন আগে এক বছরের জন্য নিষিদ্ধ হন শেন ওয়ার্ন। যদিও ওয়ার্নকে ছাড়াই সেবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল অস্ট্রেলিয়া।
advertisement
প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ: ২০০৩ বিশ্বকাপে ৩ আয়োজক দেশের মধ্যে অন্যতম ছিল জিম্বাবোয়ে। ২০০৩ বিশ্বকাপ আয়োজক তিন দেশের মধ্যে একটি ছিল জিম্বাবুয়ে। কিন্তু সেই সময় প্রেসিডেন্ট রবার্ট মুগাবের নেতৃত্বে জিম্বাবোয়ের অবস্থা ছিল টালমাটাল। রবার্ট মুগাবের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানোর জন্য বিশ্বকাপের মঞ্চকেই বেছে নেন অধিনায়ক অ্যান্ডি ফ্লাওয়ার ও হেনরি ওলোঙ্গা। নিজেদের প্রথম ম্যাচে হাতে কালো ফিতা বেঁধে মাঠে নামেন এই দুইজন। গণতন্ত্রের মৃত্যুর প্রতীক হিসেবে তারা কালো আর্মব্যান্ড পড়েছেন বলে জানিয়েছিলেন। জিম্বাবোয়ের পরিস্থিতি খারাপ দেখে ইংল্যান্ড সেদেশে ম্যাচ খেলতে যায়নি। যার ফলে ওয়াক ওভার পেয়েছিল জিম্বাবোয়ে।
advertisement
২০০৭ সালে বিশ্বকাপ চলাকালীন খুন হয়েছিলেন পাকিস্তানের তৎকালীন কোচ বব উলমার। জামাইকার পেগাসাস হোটেলে মৃত অবস্থায় পাওয়া গিয়েছিল উলমারকে। গ্রুপ পর্বের ম্যাচে আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে হেরে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে যাওয়ার রাতেই মারা যান উলমার। কিন্তু কে বা কারা খুন করেছে, কিংবা আদৌ তিনি খুন হয়েছেন না মৃত্যুর কারণ অন্য কিছু, সেই রহস্যের কোনও কিনারা করতে পারেনি পুলিশ। তবে জল্পনা ছড়িয়ে বুকিরা খুন করে উলমারকে। কেউ আবার বলেন বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে যাওয়ার ক্ষোভে খুন হতে হয় উলমারকে। অনেকে আবার বলেন সেই ম্যাচ ফিক্সিং করে হেরেছিল পাকিস্তান। আর তা উলমার জানতে পেরেছিল বলেই খুন করা হয়। তবে আসল কারণও আজও অজানা।
advertisement
অন্ধকারে বিশ্বকাপ ফাইনাল: ২০০৭ বিশ্বকাপের ফাইনালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কেনিংটন ওভালে মুখোমুখি হয়েছিল অস্ট্রেলিয়া ও শ্রীলঙ্কা। বৃষ্টি বিঘ্নিত ম্যাচ ৩৮ ওভারে খেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ৩৮ ওভারে গিলক্রিস্টের ব্যাটিং তান্ডবে অস্ট্রেলিয়া ২৮১ রান করে। কিন্তু শ্রীলঙ্কার ব্যাটিংয়ের সময় পুরো আকাশ অন্ধকারে ছেয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত দুই অধিনায়ক জয়াবর্ধনে ও পন্টিং মিলে সেই সময় থেকে স্পিনারদের দিয়ে বল করানোর সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু তাতেও ঠিকঠাক বল দেখা যাচ্ছিল না। সেই তিন ওভারে শ্রীলঙ্কা তুলতে পারে মাত্র ৯ রান। মাঠে কোনও ফ্লাড লাইট ছিল না ও নিয়ম অনুযায়ী কোনও রিজার্ভ ডে-ও ছিল না। শেষ পর্যন্ত ডাকওয়ার্থ লুইস পদ্ধতিতে অস্ট্রেলিয়াকে ৫৩ রানে জয়ী ঘোষণা করা হয়েছিল।
advertisement
২০১১ বিশ্বকাপ ট্রফি আসল না নকল: ২০১১ সালে এম এস ধোনির নেতৃত্বে ২৮ বছর পর বিশ্বকাপ জেতে ভারতীয় দল। কিন্তু সেবার ভারতকে যে ট্রফি দেওয়া হয়েছিল সেটি আসল না নকল তা নিয়ে তৈরি হয় বিতর্ক। কিছু মিডিয়া রিপোর্টে দাবি করা হয়েছিল, আসল ট্রফিটি কলম্বো থেকে মুম্বই আসার পর সেটি কাস্টমস অফিসেই থেকে যায়। আর ভারতকে ফাইনালের পর দেওয়া হয়েছিল রেপ্লিকা ট্রফি। বিতর্ক আরও দানা বাঁধে আইসিসির আসল ট্রফির নিচের বেসমেন্টে প্রতি আসরের জয়ীদের নাম খোদাই করা থাকে। কিন্তু ভারতকে দেওয়া ট্রফিতে সেই বেসমেন্ট ছিল সম্পূর্ণ ফাঁকা। যদিও বিতর্ক সম্পূর্ণ এড়িয়ে যায় আইসিসি। বলা হয় ভারতকে যে ট্রফিটি দেওয়া সেটিই দেওয়া হয়েছে।