Murshidabad News: জাহাঙ্গীরপুর থেকে জঙ্গিপুর! জানুন এক শহরের লুকনো ইতিহাস, এই বাংলারই গল্প!
- Published by:Suman Biswas
- hyperlocal
- Reported by:Tanmoy Mondal
Last Updated:
Murshidabad News: এখানকার তাঁতিরা শুধু শাড়ি বুনতেন না—বুনতেন ইতিহাস, বুনতেন শিল্প, বুনতেন রাজসিকতার প্রতীক।
advertisement
আজ যাকে আমরা “জঙ্গিপুর” নামে চিনি, তারই প্রাচীন নাম ছিল জাহাঙ্গীরপুর—মুঘল সম্রাট জাহাঙ্গীরের নামানুসারে। সম্রাট নিজে যখন পূর্বভারতের অস্থিরতায় ছুটে এসে ভাগীরথীর তীরে শিবির করেছিলেন, তখনই এই জনপদ জাহাঙ্গীরপুর নামে খ্যাত হয়। পরে সংক্ষেপে নাম হয় জঙ্গীপুর—যেমন ঔরঙ্গজেবের নামে ঔরঙ্গাবাদ, ফারুক শেয়ারের নামে ফরক্কাবাদ।
advertisement
advertisement
১৮০২ সালে লর্ড ভ্যালেন্টাইনা জঙ্গিপুরকে আখ্যা দিয়েছিলেন “The greatest silk station of East India Company”। তখন এখানে ৬০০ ফার্নেসে কাজ করত, তিন হাজার মানুষ রুটি-রুজির আশ্রয় পেত। পাশের বালুচর, মীর্জাপুরের তাঁতশিল্প বিলাত পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছিল। আর এখানকার নাহাট্টা পরিবার একদিন শুধু বাংলাতেই নয়, ফ্রান্সের বাজারেও জুয়েলারির ব্যবসায় খ্যাতি অর্জন করেছিল।
advertisement
মানস বাবু এও জানিয়েছেন, অর্থনীতি যেমন প্রসারিত হয়েছিল, তেমনি রাজনীতির ঝড়ও বয়ে গিয়েছে এই জনপদের উপর। পাঠানদের দমন করতে রাজপুত সেনানায়কেরা এখানে শিবির গড়েছিলেন। পর্তুগিজ, মগ, বর্গিদের আক্রমণে জর্জরিত হলেও জঙ্গিপুর দাঁড়িয়ে ছিল অবিচল। মুঘল, পাঠান, সেন, গুপ্ত—কোনও সাম্রাজ্যেরই কেন্দ্রীয় দৃষ্টি এড়িয়ে যায়নি এই অঞ্চল।
advertisement
advertisement
advertisement
ওহাবি আন্দোলন, কৃষক বিদ্রোহ, নীল বিদ্রোহ, সাঁওতাল বিদ্রোহের মতো সামাজিক আন্দোলন এই ভূমিকে আন্দোলিত করেছে। নদীপথ ধরে পশ্চিমের জাতি-জনজাতির আগমন ঘটেছে, যার ফলে রাঢ় ও বাগড়ির সাংস্কৃতিক ধারা পৃথক হয়েছে—রাঢ়ে রক্ষণশীলতা বজায় রাখার চেষ্টা হয়েছে, আর বাগড়িতে মিশ্রণ ও নব সংস্কৃতির উদ্ভব ঘটেছে। এইভাবে জঙ্গিপুর শুধু একটি ভূগোল নয়, বরং ইতিহাস, ধর্ম, সংস্কৃতি ও সংগ্রামের এক জীবন্ত কাব্য।