ট্রেনের কোচ ও টয়লেট থেকে ছুড়ে ছুড়ে ফেলা হচ্ছে আবর্জনা বোঝাই ব্যাগ...! Video Viral হতেই ব্যবস্থা নিল রেল

ভারতীয় রেলের কোচ অ্যাটেনডেন্ট চলন্ত ট্রেন থেকে ছুড়ে ছুড়ে ফেলছেন আবর্জনার ব্যাগ। চমকে দেওয়া ছবি ক্যামেরায় ধরা পড়ার পরই নড়েচড়ে বসল রেল কর্তৃপক্ষ। এই লজ্জাজনক ঘটনাটি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে ভাইরাল হয়ে যায়, যা রেল পরিষেবায় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং বর্জ্য নিষ্কাশন পদ্ধতি নিয়ে চরম শোরগোল ফেলে দেয়।

রেল বোর্ড সমস্ত জোনাল রেলওয়েকে তাদের যাত্রার সময় ট্রেন থেকে আবর্জনা নিষ্কাশনের সিস্টেমিক ব্যবস্থা সম্পর্কে একটি নির্দেশিকা জারি করেছে। এই নির্দেশিকার লক্ষ্য হল পরিচ্ছন্নতা বৃদ্ধি করা এবং যাত্রীদের জন্য আরও উন্নত ভ্রমণ অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করা।

নির্দেশাবলী এমন একটি ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করে যেখানে অন-বোর্ড হাউসকিপিং সার্ভিস এবং প্যান্ট্রি কার কর্মীদের যাত্রী বগি থেকে আবর্জনা সংগ্রহ করতে এবং নির্দিষ্টভাবে মনোনীত স্টেশনগুলিতে সিল করা ব্যাগে ফেলার জন্য বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

এই ব্যবস্থাটি ট্রেনের অভ্যন্তরীণ অংশ এবং রেলওয়ে পরিকাঠামো উভয়েরই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। নতুন নির্দেশের একটি মূল লক্ষ্য হল আরামদায়ক যাত্রা প্রদানে অন-বোর্ড কর্মীদের ভূমিকাতে জোর দেওয়া।

কোচ এবং টয়লেটের মধ্যে একটি পরিষ্কার এবং বর্জ্যমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করে, কর্মীরা যাত্রীদের আরাম এবং সুরক্ষায় উল্লেখযোগ্য অবদান রাখেন। বোর্ড নির্দেশ দিয়েছে যে এই ফ্রন্টলাইন কর্মীরা, যাঁরা মূলত চুক্তিবদ্ধ, তাঁদের পর্যাপ্তভাবে প্রশিক্ষিত এবং সজ্জিত করতে হবে যাতে তাঁরা এই দায়িত্বগুলি কার্যকরভাবে পালন করতে পারেন, যা পরিষেবার মনোভাব প্রতিফলিত করে।

এই প্রোটোকলগুলির  বাস্তবায়ন নিশ্চিত করার জন্য, রেল বোর্ড সংশ্লিষ্ট অন-বোর্ড কর্মীদের সঙ্গে একটি তাৎক্ষণিক এবং বিস্তৃত ট্রেনিং বাধ্যতামূলক করেছে। এই কর্মসূচিটি সমস্ত জোনাল রেলওয়ে জুড়ে বাণিজ্যিক ও যান্ত্রিক বিভাগের সিনিয়র সুপারভাইজার এবং কর্মকর্তাদের দ্বারা যৌথভাবে পরিচালিত হবে।

উদ্দেশ্য হল কর্মীদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা। স্বচ্ছ ভারত মিশনে তাদের ভূমিকার গুরুত্বপূর্ণ গুরুত্ব ব্যাখ্যা করা, র্মীদের আবর্জনা এবং ক্যাটারিং বর্জ্য পরিচালনার জন্য জারি করা নির্দেশাবলী সম্পর্কে অবহিত করার পাশাপাশি প্রতিটি ট্রেনের জন্য চিহ্নিত মনোনীত স্টেশনগুলিতে বর্জ্য নিষ্কাশনের পদ্ধতি সম্পর্কেও যাত্রীদের অবহিত করা।

এই কর্মসূচিটি এক মাসের মধ্যে সম্পন্ন করার জন্য সময় নির্ধারিত হয়েছে, যাতে সমস্ত ট্রেনের কভারেজ নিশ্চিত করা যায়। এর পরেই প্রতিটি বিভাগ থেকে প্রতিক্রিয়া জোনাল স্তরে সংকলিত করা হবে এবং পর্যালোচনার জন্য রেল বোর্ডে জমা দেওয়া হবে।

এই উদ্যোগটি ২০২৪ সালের জুলাই মাসে জারি করা পূর্ববর্তী নির্দেশাবলীর উপর ভিত্তি করে তৈরি, যা রুটে আবর্জনা নিষ্কাশনের জন্য একটি ব্যবস্থার রূপরেখা তৈরি করেছিল। সেই ব্যবস্থার মধ্যে ছিল আবর্জনা মূল্যায়নের জন্য কর্ম গবেষণা পরিচালনা করা, নির্ধারিত স্টেশনগুলিতে ন্যূনতম সংখ্যক আবর্জনা ব্যাগ নিষ্কাশন করা ইত্যাদি।

পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং বর্জ্য অপসারণের পদ্ধতি নিয়ে বিতর্কের মধ্যে অনেকেই কর্মী এবং যাত্রী উভয়ের মধ্যে আরও বেশি যোগাযোগ এবং নাগরিক দায়িত্ববোধের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে সওয়াল করেন। রেলের পক্ষ থেকে এই দ্রুত পদক্ষেপ তাই বেশ তাৎপর্যপূর্ণ হতে চুলেছে বলেই মনে করা হচ্ছে।