Eli Cohen: সিরিয়ার গোপন আর্কাইভ থেকে এলি কোহেন সম্পর্কিত হাজার হাজার সামগ্রী উদ্ধার করেছে ইজরায়েল, মোসাদের এই জনপ্রিয় গুপ্তচরের মর্মান্তিক পরিণতির কথা শুনলে গায়ে কাঁটা দেবে
- Published by:Siddhartha Sarkar
- news18 bangla
Last Updated:
All About Eli Cohen, Popular Mossad Spy: দামাস্কাসে এমন একটা সময় ছিল, যখন সিরিয়ার অভিজাতদের মধ্যে অবাধ ওঠা-বসা ছিল কামেল আমিন থাবেতের (Kamal Amin Thaabet)। তাঁকে ভরসাও করতেন সকলে। কিন্তু যত্ন সহকারে নিজের সাজিয়ে তোলা এহেন ব্যক্তিত্বের আড়ালে কিন্তু লুকিয়ে ছিল এক রহস্য। আসলে কামেল আমিন থাবেতের ব্যক্তিত্বের আড়ালে লুকিয়ে ছিলেন এলি কোহেন (Eli Cohen)।
দামাস্কাসে এমন একটা সময় ছিল, যখন সিরিয়ার অভিজাতদের মধ্যে অবাধ ওঠা-বসা ছিল কামেল আমিন থাবেতের (Kamal Amin Thaabet)। তাঁকে ভরসাও করতেন সকলে। কিন্তু যত্ন সহকারে নিজের সাজিয়ে তোলা এহেন ব্যক্তিত্বের আড়ালে কিন্তু লুকিয়ে ছিল এক রহস্য। আসলে কামেল আমিন থাবেতের ব্যক্তিত্বের আড়ালে লুকিয়ে ছিলেন এলি কোহেন (Eli Cohen)। আলাদা করে তাঁর পরিচিতি আজ আর বলে দিতে হয় না। এই এলি কোহেন ছিলেন ইজরায়েলের গুপ্তচর। সিরিয়া থেকে গুরুত্বপূর্ণ গোপন তথ্য তিনি চালান করতেন নিজের মাতৃভূমিতে। প্রায় ষাট বছর আগে জনসমক্ষে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার মাধ্যমে অবসান ঘটে এলি কোহেনের এই দ্বৈত সত্তার। সম্প্রতি একটি গোপন সিরিয়ান আর্কাইভ থেকে কোহেনের সঙ্গে সম্পর্কিত হাজার হাজার জিনিসপত্র উদ্ধার করেছে ইজরায়েল। (Photo :HananyaNaftail/X)
advertisement
কে এই এলি কোহেন? ১৯২৪ সালে আলেকজান্দ্রিয়ায় সিরিয়ান ইহুদি পরিবারে জন্ম এলি কোহেনের। তিনি কোনও সাধারণ ব্যক্তিত্ব ছিলেন না। একসঙ্গে আরবীয়, ইংরাজি এবং ফরাসি ভাষায় সাবলীল ভাবে কথা বলার দক্ষতা তাঁর ছিল। ফলে গুপ্তচরবৃত্তির কাজে অন্যতম উপযুক্ত হয়ে উঠেছিলেন তিনি। সুয়েজ সঙ্কটের পর মিশর থেকে তাঁকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। ১৯৫৭ সালে ইজরায়েলে আশ্রয় নেন কোহেন। তিনি সেখানে অনুবাদক এবং অ্যাকাউন্ট্যান্ট হিসেবে কাজ করতে থাকেন। আর এই সময়ই ইজরায়েলি গুপ্তচর সংস্থা মোসাদের নজরে আসে তাঁর প্রতিভা এবং ক্ষমতা। (File Photo)
advertisement
১৯৬০ সাল নাগাদ একটি অভিযানের কাজে নিযুক্ত করা হয় এলি কোহেনকে। যা রীতিমতো কিংবদন্তি হয়ে ওঠে। সমস্ত প্রশিক্ষণের পরে এক সিরিয়ান ব্যবসায়ীর ছদ্মবেশ ধারণ করে তিনি চলে গিয়েছিলেন আর্জেন্টিনার বুয়েনস আইরেসে। নিজেকে লুকিয়ে ফেলেছিলেন কামেল আমিন থাবেত নামের আড়ালে। সেখানে অচিরেই সিরিয়ার প্রবাসীদের মধ্যে আস্থাও অর্জন করে নেন কোহেন। এর ফলে সিরিয়ার রাজনৈতিক এবং সামরিক অভিজাত ব্যক্তিত্বদের গণ্ডিতে আবাধ বিচরণ হয়ে ওঠে তাঁর।
advertisement
১৯৬২ সালে রীতিমতো ঝুঁকি নিয়ে দামাস্কাসে চলে যান কোহেন। সেখানেও বিশ্বাস অর্জন করে নেন। এরপরে ক্ষমতার সর্বোচ্চ শিখরে ওঠার জন্য নিজের যোগাযোগ ব্যবহার করেন তিনি। ১৯৬৩ সালে যখন বাথিস্ট অভ্যুত্থান হয়, তখন এলি কোহেনের আর্জেন্টিনার কিছু পরিচিতি কাজে লাগে। ফলে রীতিমতো জাঁকিয়ে বসতে পেরেছিলেন তিনি। ১৯৬১ থেকে ১৯৬৫ সালের মধ্যে সিরিয়ার সামরিক কৌশল সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করেছিলেন কোহেন। এমনকী, ইজরায়েলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিতর্কিত অঞ্চল গোলান হাইটস সংক্রান্ত তথ্য বার করে ফেলেছিলেন। আসলে কোহেনের বিচরণ এতটাই গভীরে ছিল যে, তাঁকে উচ্চ পদের জন্যই বিবেচনা করা হত।
advertisement
১৯৬৭ সালের ছয় দিনের যুদ্ধের আগের বছরগুলিতে কোহেনের গোয়েন্দা তথ্য ইজরায়েলের প্রস্তুতিতে উল্লেখযোগ্য ভাবে সহায়তা করেছিল। তাঁর জন্যই সিরিয়ার সামরিক পরিকল্পনা এবং অভিযানের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ইজরায়েল পেয়েছিল। কিন্তু তাঁর এই সাফল্যের মাসুল খুব শীঘ্রই দিতে হয়। মোসাদ থেকে বারংবার সতর্ক করা সত্ত্বেও তেমন গা করেননি কোহেন। নির্দিষ্ট সময়ে বারবার রেডিও ট্রান্সমিশন এবং সিগন্যাল পাঠাতে থাকতেন। এই ভুলটাই তাঁকে সিরিয়ার গোয়েন্দা সংস্থার হাতে ধরিয়ে দেয়। (File Photo)
advertisement
১৯৬৫ সালের জানুয়ারিতে বার্তা চালাচালি করতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়েন কোহেন। সংক্ষিপ্ত বিচারের পর ওই বছরের মে মাসে জনসমক্ষে তাঁকে হত্যা করা হয়। সম্প্রতি একটি গোপন অভিযানে সিরিয়ার গোয়েন্দা সংরক্ষণাগার থেকে এলি কোহেনের কাজ সংক্রান্ত ২,৫০০ টিরও বেশি জিনিস উদ্ধার করেছে ইজরায়েল। এর মধ্যে ছিল পরিবারের কাছে তাঁর লেখা চিঠি, ভুয়ো পাসপোর্ট, দামাস্কাস অ্যাপার্টমেন্টের চাবি এবং অভিযানের সারসংক্ষেপ। এই সমস্ত নথি কোহেনের স্ত্রী নাদিয়ার হাতে তুলে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। (Photo :HananyaNaftail/X)