৪০ দিনে ৭ বার সাপের ছোবল, স্বপ্নাদেশ পেয়েও সর্প দংশন থেকে ৫০০ কিলোমিটার দূরে আত্মীয়ের বাড়িও গিয়েছিলেন বিকাশ; কিন্তু শেষরক্ষা হল না…
- Published by:Siddhartha Sarkar
- trending desk
Last Updated:
Mysterious case : সুরেন্দ্র দ্বিবেদীর ২৪ বছর বয়সী পুত্র বিকাশ দ্বীবেদী ওরফে বেটুকে বিগত ৪০ দিনে মোট ৭ বার সাপে কেটেছে। ইতিমধ্যেই আজব এই ঘটনার কথা জেনে গিয়েছে সারা বিশ্ব। এমনকী বিকাশের দাবি, সাপ তাঁর স্বপ্নে এসেছিল। এমনকী সাবধান করে বলেছে যে, সে তাঁকে মোট ৯ বার কামড়াবে। এই সমস্যার সমাধান খুঁজতে তান্ত্রিকের কাছে গিয়েছিলেন বিকাশ।
আপাতত এক আজব ঘটনার জেরে সংবাদ শিরোনামে উঠে এসেছে উত্তর প্রদেশের ফতেহপুর জেলার সোরা গ্রাম। এই গ্রামের সঙ্গে আবার যোগ রয়েছে দৌসা জেলার ধর্মীয় স্থান মেহান্দিপুর বালাজিরও। আসলে সোরা গ্রামের মালওয়া থানা এলাকার বাসিন্দা সুরেন্দ্র দ্বিবেদীর ২৪ বছর বয়সী পুত্র বিকাশ দ্বীবেদী ওরফে বেটুকে বিগত ৪০ দিনে মোট ৭ বার সাপে কেটেছে। ইতিমধ্যেই আজব এই ঘটনার কথা জেনে গিয়েছে সারা বিশ্ব। এমনকী বিকাশের দাবি, সাপ তাঁর স্বপ্নে এসেছিল। এমনকী সাবধান করে বলেছে যে, সে তাঁকে মোট ৯ বার কামড়াবে। এই সমস্যার সমাধান খুঁজতে তান্ত্রিকের কাছে গিয়েছিলেন বিকাশ। শুধু তা-ই নয়, নিজের পরিবার এবং ১১ জন আত্মীয়কে নিয়ে দৌসা জেলার মেহান্দিপুর বালাজিতে ধর্মীয় স্থান পরিদর্শন করতে গিয়েছিলেন তিনি। এই কঠিন পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পাওয়া জন্য বালাজি মহারাজের কাছে প্রার্থনাও করেছেন।
advertisement
এই বিষয়টা খতিয়ে দেখার জন্য মেহান্দিপুর বালাজির একটি বিশ্রাম ঘরে পৌঁছেছিল NEWS18 টিম। আসলে ধর্মীয় স্থান পরিদর্শনে গিয়ে ওই বিশ্রাম ঘরেই বিশ্রাম নিচ্ছিলেন বিকাশ এবং তাঁর পরিবারের সদস্যরা। যদিও কিছু বলার অবস্থায় ছিলেন না ওই যুবক। তবে সাপে কাটার চিহ্ন তাঁর হাত-পায়ে স্পষ্ট ভাবে দেখা গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে খানিক জোরাজুরির পরে ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজি হন বিকাশ।
advertisement
ওই যুবকের কথায়, “চিত্রকূট হনুমানজির দর্শন সেরে গত ৩০ মে আমি গ্রামে এসেছিলাম। এই সময় গত ২ জুন রাত ৮টা নাগাদ শৌচাগারে যাওয়ার সময় আমাকে সাপে কাটে। এরপরে আমার পরিবার আমায় তড়িঘড়ি নিকটবর্তী হাসপাতালে নিয়ে যায়। যেখানে আমি চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে উঠি। এরপরের শনিবার অর্থাৎ গত ৯ জুন আবার আমায় সাপটি কামড়ায়। এই ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়ে আমার পরিবার। এবারও আমি প্রাণে বেঁচে যাই।” বিকাশের দাবি, গত ১৬ জুন অর্থাৎ শনিবার দংশন করার আগে সাপটি তাঁর স্বপ্নে এসেছিল। ওই সময় সাপটি তাঁকে সাবধান করে যে, সে ৯ বার কামড়াবে। এমনকী সাপটি এ-ও জানায় যে, সাপে কাটলেও ৮ বার বেঁচে যাবেন তিনি। তবে নবম বার তাঁকে আর বাঁচানো যাবে না। এমনটা বলার পরেই তৃতীয় বারের জন্য সাপে কাটে বিকাশকে।
advertisement
এই ঘটনার পরে ওই যুবক পরিবারের কাছে নিজের স্বপ্নের কথা জানান। এই পরিস্থিতিতে সাপের আতঙ্ক তৈরি হয় গোটা পরিবারে। এরপরে ২০০ কিলোমিটার দূরে ফতেহপুরে বিকাশকে তাঁর মাসির কাছে থাকার জন্য পাঠানো হয়। কিন্তু সাপটি সেখানেও তাঁর পিছু ছাড়েনি। গত ২৩ জুন অর্থাৎ শনিবার রাতে বিকাশ যখন ঘুমোচ্ছিলেন, তখন তাঁকে চতুর্থবারের জন্য কামড়ায় সাপটি। এমনটা ঘটার পরেই বিকাশের স্বপ্নের কথা বিশ্বাস করতে শুরু করেন তাঁর পরিবারের সদস্যরাও। এরপর তাঁকে ফতেহপুর থেকে কাকার বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। যেখানে প্রত্যেকটা জায়গায় সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো ছিল। এমনকী যে ঘরে বিকাশকে রাখা হয়েছিল, সেই ঘরের নিরাপত্তা ছিল জোরালো। অথচ বিকাশের দাবি, পঞ্চমবারের জন্য তাঁকে সাপে কাটে। তিনি আরও বলেন, সাপটি এসে তাঁকে গত ৬ এবং ১১ জুলাই কামড়ায় তাঁর কাকার বাড়িতেই। আর এই ঘটনার পরে ভেঙে পড়েছেন ওই যুবক।
advertisement
বিকাশের বক্তব্য, তিনি ছাড়া আর কেউই সাপটিকে দেখতে পান না। মেহান্দিপুর বালাজিতে আসার আগেও সাপটি তাঁর স্বপ্নে এসেছিল বলেও জানান বিকাশ। এমনকী তাঁকে এ-ও বলেছিল যে, এই শনি এবং রবিবার সে বিকাশকে কামড়াবে না। বরং পরের শনিবার যেভাবেই হোক, সে বিকাশকে কামড়াবে। আর এই বারংবার সর্প দংশনের জেরে চিকিৎসা করাতে গিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ হয়ে যাচ্ছে বিকাশের। এর জন্য বহু তান্ত্রিকের কাছেও ঘুরেছেন বলে জানালেন তিনি। এমনকী তার জন্য বাড়িতে রাখা মায়ের গয়নাও বন্ধক রাখতে হয়েছে। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে শেষ আশা নিয়ে বিকাশের পরিবার হাজির হয়েছে মেহান্দিপুর বালাজিতে। যা সঙ্কট মোচন নামেও পরিচিত। বিপদের হাত থেকে নিষ্কৃতি পাওয়ার জন্য গোটা পরিবার প্রার্থনা করেছে। আত্মীয় পরিজনের দাবি, বিকাশ ও তাঁর পরিবারকে ঘিরে রয়েছে আতঙ্ক। আর তাঁদের অর্থনৈতিক অবস্থাও বেশ দুর্বল।
advertisement
এহেন অকল্পনীয় ঘটনায় আপাতত সরকারি সাহায্য চাইছেন বিকাশের আতঙ্কিত পরিবার। আর এই খবর সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ পেতেই জেলা প্রশাসন বিষয়টাকে গুরুত্ব সহকারে দেখছে। স্বাস্থ্য দফতর, বন দফতরও ইতিমধ্যে হস্তক্ষেপ করে গোটা বিষয়টা খতিয়ে দেখছে। সিএমও ডা. রাজীব নয়ন গিরি জানান, তিন জন চিকিৎসকের দল গঠন করা হয়েছে। ডা. জওহরলাল নামে যে চিকিৎসক বিকাশের চিকিৎসা করেছেন, তাঁর হাসপাতালে ইতিমধ্যেই দলবল নিয়ে পৌঁছেছেন ডিএফও রামানুজ ত্রিপাঠী। রাম সানেহি মেমোরিয়াল হাসপাতালের ওই চিকিৎসকের সঙ্গে কথা হয়েছে ডিএফও-র। ডিএফও রামানুজ ত্রিপাঠী বলেন, “আমাদের দলকেও বিকাশের বাড়িতে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু জানা গিয়েছে যে, তাঁর বাড়িতে ঝুলছে তালা। বিকাশ তাঁর পরিবারের সঙ্গে কোথাও গিয়েছেন। পরে তাঁর বাড়িতে যাওয়া হবে। সেখানে সাপ থাকলে তা উদ্ধার করা হবে।”