ল্যাংচা বলতেই মনে পড়ে শক্তিগড়, আর শক্তিগড় বলতেই মনে আসে ল্যাংচার কথা। মিষ্টিপ্রেমী বাঙালির ভাঁড়ারে মিষ্টির কমতি নেই, রসগোলা, কলাকন্দ, সন্দেশ, নাড়ু থেকে শুরু করে হালফিলের চকলেট মিষ্টি- বাঙালিকে বুঝতে হলে বাংলার মিষ্টিকে জানতেই হবে। প্রতিটি মিষ্টির সঙ্গেই জড়িয়ে রয়েছে অদ্ভুত সব ইতিহাস। মিষ্টি খান তো অনেকেই, কিন্তু এই মিষ্টি কীভাবে তৈরি হল, কবে হল, কোথায় বা এর জন্ম, কীই বা এর নামকরণের ইতিহাস সেসব নিয়ে অত ভাবেন না কেউই। নাহলে প্রশ্ন ঠিকই জাগত, ল্যাংচার নাম ল্যাংচা হল কেন!
ল্যাংচার জন্মের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে কৃষ্ণনগর। একসময় নদিয়া জেলার কৃষ্ণনগরের রাজপরিবারের রাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায়ের কন্যার সঙ্গে বর্ধমান জেলার রাজপরিবারের রাজার পুত্রের বিয়ে হয়। কৃষ্ণনগরের রাজকন্যা বর্ধমান রাজপরিবারের রাজবধূ হিসেবে বর্ধমানেই থাকতে শুরু করেন। বিয়ের কিছু বছর পরে রাজকন্যা অন্তঃসত্ত্বা হলে, রাজা কৃষ্ণচন্দ্র কন্যাকে কৃষ্ণনগরে নিয়ে আসেন।
ক’দিন পর থেকেই রুচি হারিয়ে ফেলে রাজকন্যা। কিছুই মুখে তুলতে চান না সন্তানসম্ভবা রাজবধূ। রাজা চিন্তিত হয়ে পড়েন। কোনও চিকিৎসকও রাজকন্যার না খাওয়ার রোগ সারাতে পারলেন না। একদিন রাজকন্যা নিজেই তাঁর বাবাকে ডেকে বললেন, তিনি বর্ধমানে শ্বশুরবাড়িতে থাকতে এক ময়রার হাতে তৈরি কালো রঙের ভাজা মিষ্টি রসে ডুবিয়ে খেয়েছিলেন। সেই স্বাদে তিনি আচ্ছন্ন। সেই মিষ্টি খেলেই নাকি তাঁর মুখের রুচি ফিরবে। রাজা তো পড়লেন মহা ফাঁপরে। তাঁর কন্যা না তো সেই ময়রার নাম বলতে পারে না তো মিষ্টির নাম।