EXPLAINER: LAC এবং LOC-এর মধ্যে কী পার্থক্য? কোনটা বেশি বিপজ্জনক? সীমান্ত সমস্যা বুঝতে এই দুটোর তফাত জানা জরুরি
- Published by:Salmali Das
- trending-desk
Last Updated:
EXPLAINER: একদিকে চিন। অন্য দিকে, পাকিস্তান। দুই দেশের সঙ্গে ভারতের সীমান্ত সমস্যা বহু পুরনো। সম্প্রতি চিনের সঙ্গে ভারতের চুক্তি হয়েছে। দুই দেশই এলএসি থেকে সেনা সরাতে শুরু করেছে। ফের টহলদারিও চালু হবে।
advertisement
advertisement
এলএসি বা লাইন অফ অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোল:লাইন অফ অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোল হল ভারত ও চিনের মধ্যে ৪,০৫৭ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্তরেখা। ভারতের জম্মু-কাশ্মীরের থেকে চিন অধিকৃত এলাকা আকসাই চিনকে এলএসি আলাদা করে রেখেছে। লাদাখ, কাশ্মীর, উত্তরাখণ্ড, হিমাচল, সিকিম এবং অরুণাচল প্রদেশের মধ্য দিয়ে গিয়েছে লাইন অফ অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোল বা এলএসি। এই সীমান্ত রেখার একদিকে ভারত, অন্য দিকে, চিন।
advertisement
advertisement
advertisement
১৯৬২ সালে যুদ্ধের পর মূলত পশ্চিমাঞ্চলের সীমান্ত বোঝাতেই ‘লাইন অফ অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোল’ শব্দবন্ধ ব্যবহার করা হত। নব্বইয়ের দশক থেকে ধীরে ধীরে পুরো ভারত-চিন সীমান্তই এলএসি নামে পরিচিত হয়ে ওঠে। কোনও দেশের সেনাই এলএসি টপকে অন্য দিকে যেতে পারবে না। কিন্তু সমস্যা হল, লাইন অফ অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোল এখনও পুরোপুরি চিহ্নিত হয়নি। ফলে প্রায়ই দুই দেশের সেনা সীমান্ত সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে।
advertisement
এলওসি বা লাইন অফ কন্ট্রোল:লাইন অফ কন্ট্রোল হল ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ৭৪০ কিলোমিটার দীর্ঘ সামরিক নিয়ন্ত্রণরেখা, যা জম্মু-কাশ্মীরের কিছু অংশকে দুটি দেশের মধ্যে ভাগ করে রেখেছে। এলওসি-এর একপাশে ভারতের জম্মু ও কাশ্মীর। অন্য দিকে, পাক অধিকৃত কাশ্মীর। এলওসি-এর ওপারে পাক অধিকৃত কাশ্মীর ছাড়াও গিলগিট, বালুচিস্তানও রয়েছে। ১৯৪৭ সালে যুদ্ধের পর এই নিয়ন্ত্রণরেখা আঁকা হয়। সেই সময়ের পরিস্থিতির উপর ভিত্তি করে এলওসি টানা হলেও, এখনও পর্যন্ত তা একই রকম রয়ে গিয়েছে।
advertisement
১৯৪৭ সালে স্বাধীনতার পর পাকিস্তানি সেনা এবং পাঠানরা কাশ্মীরের বিভিন্ন অংশে আক্রমণ শুরু করে। পাল্টা প্রতিরোধ করে ভারতীয় সেনা। কারগিল সেক্টরে পাকিস্তানি সেনাকে পিছু হঠতে বাধ্য করে। পাঠিয়ে দেওয়া হয় শ্রীনগর-লেহ হাইওয়ের ওপারে। ১৯৬৫ সালে পাকিস্তান ফের আক্রমণ করে। সেবারও পরাজিত হয়। এরপর থেকে ১৯৭১ পর্যন্ত পরিস্থিতি স্থিতিশীল ছিল।
advertisement
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শেষ হয়। স্বাধীন হয় বাংলাদেশ। এই সময় পাকিস্তান আবার কাশ্মীর আক্রমণ করে। এই যুদ্ধে দুই দেশই লাইন অফ কন্ট্রোলের দুই পাশে একে অপরের সেনা চৌকি দখল করে নেয়। ভারত এলওসি-এর উত্তরাঞ্চল, লাদাখ অঞ্চলের প্রায় ৩০০ বর্গমাইল জমি পুনরুদ্ধার করে। ১৯৭২ সালের ৩ জুলাই শিমলা চুক্তির পরে শান্তি আলোচনার মাধ্যমে লাইন অব কন্ট্রোল পুনর্বহাল করা হয়।
advertisement
লাইন অফ অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোল এবং লাইন অফ কন্ট্রোলের পার্থক্য:লাইন অফ অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোল এবং লাইন অফ কন্ট্রোলের মধ্যে মূল পার্থক্য হল, এলএসি বা লাইন অফ অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোলে দুই দেশের মধ্যে বাফার জোন রয়েছে। ভারত ও চিনের সেনাবাহিনী তাঁদের নিজ নিজ সীমান্তে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে টহলদারি চালায়। তবে এলএসি নিয়ে দুই দেশই একমত নয়। সীমান্ত নিয়ে উভয়েরই নির্দিষ্ট মত রয়েছে। ফলে কখনও কখনও একপক্ষ বাফার জোন টপকে অন্যের সীমান্তে ঢুকে পড়ে সংঘাত বেঁধে যায়। যেমনটা গালওয়ানে হল।
advertisement
অন্য দিকে, লাইন অফ কন্ট্রোল বা এলওসি-তে কোনও বাফার জোন নেই। সীমান্তের একদিকে ভারত অন্য দিকে, পাকিস্তান। একেবারে মুখোমুখি। এই কারণে প্রায়ই উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় থেকে শুরু করে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। গোলাগুলি চলে। এই দিক থেকে দেখলে লাইন অফ অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোল বা এলএসি-এর থেকে থেকে লাইন অফ কন্ট্রোল বা এলওসি অনেক বেশি বিপজ্জনক।