Carnivorous Plant: দেখা মিলত কেবল আমাজনে, এবার খোঁজ মিলল জঙ্গলমহলে! মাংস ছিড়ে খেয়ে নেয় এই গাছ
- Published by:Ananya Chakraborty
- hyperlocal
- Reported by:Ranjan Chanda
Last Updated:
Carnivorous Plant: আমাজন জঙ্গলের মাংসাশী উদ্ভিদ নাকি পাওয়া যাচ্ছে বাংলায়, তাও এই জঙ্গলমহলে? এমনই একটি বিষয় সাধারণ মানুষের মধ্যে চাউর হয়েছে! এ নিয়ে রীতিমত বেশ উদ্বেগ পরিস্থিতিও সৃষ্টি হয়েছে সকলের মধ্যে।
বছর ঘুরতে ফের আতঙ্ক জঙ্গলমহলে! আবারও নাকি জঙ্গলমহল পশ্চিম মেদিনীপুরের জঙ্গল এলাকায় মাংসাশী উদ্ভিদের হদিশ। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়াজুড়ে এমন এক চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এসেছে। আমাজন জঙ্গলের মাংসাশী উদ্ভিদ নাকি পাওয়া যাচ্ছে বাংলায়, তাও এই জঙ্গলমহলে? এমনই একটি বিষয় সাধারণ মানুষের মধ্যে চাউর হয়েছে! এ নিয়ে রীতিমত বেশ উদ্বেগ পরিস্থিতিও সৃষ্টি হয়েছে সকলের মধ্যে। গত বছর বাঁকুড়া, পশ্চিম মেদিনীপুরের মেদিনীপুর সংলগ্ন জঙ্গলের পর এবার গড়বেতার জঙ্গল, মিলেছে এই মাংসাশী উদ্ভিদের হদিশ। (ছবি ও তথ্য: রঞ্জন চন্দ)
advertisement
সামান্য ছোট লাল-কমলা বর্ণের এই উদ্ভিদ। মূলত পাথুরে জলা জায়গায় এই ছোট ছোট উদ্ভিদ জন্মায়। যার উজ্জ্বল রং পোকামাকড়দের বেশ আকৃষ্ট করে। দেখতে বেশ অসাধারণ, বিশেষ এই উদ্ভিদ এর একাধিক প্রজাতি রয়েছে বলে মনে করেন উদ্ভিদ বিশেষজ্ঞরা। উদ্ভিদ বিশেষজ্ঞদের মতে, এই উদ্ভিদকে মাংসাশী বললে বেশ ভুল বলা হবে। আসলে এই বিশেষ প্রজাতির উদ্ভিদ মূলত ছোট পোকামাকড়কে খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে।
advertisement
বেলদা কলেজের উদ্ভিদবিদ্যার অধ্যাপক শুভদীপ পাল বলেন, "জঙ্গলমহল পশ্চিম মেদিনীপুর ঝাড়গ্রাম বাঁকুড়ার মূলত স্যাঁতস্যাঁতে জায়গায় এই উদ্ভিদ দেখা যায়। অত্যন্ত উজ্জ্বল বর্ণের এই উদ্ভিদ, তার শরীরে থাকা বিশেষ শিশির জাতীয় রসের মধ্য দিয়ে আকৃষ্ট করে পোকামাকড়দের, আর সেই পোকামাকড়দের থেকে রস শোষণ করে নিজেদের জীবন ধারণ করে। চলতি এলাকায় এই উদ্ভিদটি খুব একটি অপ্রতুল নয়।"
advertisement
এমন এক বিশেষ প্রজাতির উদ্ভিদ সূর্যশিশির বা সানডিও। আফ্রিকান প্রজাতির এই উদ্ভিদ হলেও, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার একাধিক জঙ্গল লাগোয়া এলাকায় বহুকাল আগে থেকেই রয়েছে এবং যা মাংসাশী নয়, সাধারণ মানুষের কিংবা অন্যান্য বন্যপ্রাণের কোনও ক্ষতি করে না। বর্তমানে হুমগড়, চাঁদড়া সহ একাধিক জঙ্গলে স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশে জন্মায়।
advertisement
বিশেষজ্ঞদের মতে, মূলত পাথুরে এলাকায় জন্মায় এই সূর্যশিশির। দেখতে অত্যন্ত ছোট। লাল কমলা বর্ণের এই বিশেষ উদ্ভিদ প্রজাতি। যার পাতাগুলো গোলাকার। এবং পাতার চারিদিকে শুঁড়ের মতো প্রশাখা জাতীয় অংশ থাকে। যার মাথায় থাকে শিশির বিন্দুর মতো আঠালো পদার্থ। এই সূর্যশিশিরের রং এবং শিশিরের ন্যায় আঠালো পদার্থ আকৃষ্ট করে মাটিতে থাকা পিঁপড়ে, অন্যান্য ছোট পোকামাকড়দের। একবার সেই আঠালো পদার্থতে আটকে গেলে আর বেঁচে ফিরতে পারে না কোনও পোকামাকড়।
advertisement
তবে বর্তমান সময়ে সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে বাঁকুড়া, পশ্চিম মেদিনীপুরের একাধিক জঙ্গলে অস্তিত্ব পাওয়া সানডিও বা সূর্যশিশির নিয়ে বেশ উদ্বেগের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। কেউ কেউ আবার মাংসাশী ভেবে এই গাছ নষ্ট করে দিচ্ছে। তবে পশ্চিম মেদিনীপুরের গুড়গুড়িপাল, চাঁদড়া, লালগড় সহ একাধিক জঙ্গলে বহুকাল আগে থেকেই এই উদ্ভিদের অস্তিত্ব রয়েছে।
advertisement
গ্রামের মানুষরা এই উদ্ভিদকে বহুকাল আগে থেকেই দেখে আসছেন। তবে তাদের মধ্যেই রীতিমত কোনও ভয় কাজ করে না। তবে বাংলায় তথা ভারতবর্ষে বিলুপ্তপ্রায় এই উদ্ভিদ। যা মানুষ কিংবা বড় বড় কোনও প্রাণীর ক্ষতি করে না। পোকামাকড়কে খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করলেও মাংসাশী উদ্ভিদ বলা বেশ ভুল হবে। অধ্যাপক শুভদীপের কথায়, শুধুমাত্র পোকামাকড় থেকে প্রয়োজনীয় প্রোটিন সংগ্রহের জন্য তাদের ধরে বলে মাংসাশী উদ্ভিদ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। তবে তেমন কোনও প্রাণীর ক্ষতি করে না।
advertisement
তবে এই ধরনের বিলুপ্ত উদ্ভিদকে বাঁচিয়ে রাখার উদ্যোগ নিচ্ছে বনদফতর। মানুষ ভয় পেয়ে বা আতঙ্কের মধ্য দিয়ে এই উদ্ভিদকে নষ্ট করে দিতে পারে। তাই যে সমস্ত জঙ্গলে এই উদ্ভিদ রয়েছে সেই সমস্ত জায়গা চিহ্নিত করে বাঁচিয়ে রাখার পরিকল্পনা নিচ্ছে মেদিনীপুর বন বিভাগ। স্বাভাবিকভাবে সূর্যশিশিরের অস্তিত্ব বহুকাল আগে থেকেই রয়েছে মেদিনীপুরে, এ বিষয় নিয়ে ভয় না পাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে বন বিভাগ। (ছবি ও তথ্য: রঞ্জন চন্দ)
