খুন করে জমিয়ে রাখতেন মানুষের খুলি! ঘিলু থেকে মাংস খেতেন আয়েশ করে! রাজা কোলান্ডারের ভয়ে কাঁপত উত্তরপ্রদেশ! চেনেন তাঁকে?
- Published by:Soumendu Chakraborty
- news18 bangla
Last Updated:
অনুমান করা হয়েছিল আততায়ী শুধু খুনই করেননি, মৃতদের মাংসও খেতেন তিনি। রক্তও পান করতেন স্যুপের মতো। এমনকি, মৃতদেহগুলির খুলিও সংগ্রহ করতেন সেই অপরাধী। তার আগে সেই খুলি থেকে ঘিলু বার করে খেতেন। কিন্তু কে সেই নৃশংস খুনি?
সময়টা ২০০০ এর দশক, সেই সময় একের পর এক খুনের ঘটনায় শিউরে উঠেছিল উত্তরপ্রদেশের পূর্বাঞ্চল। পরে তদন্তে নেমে এক সিরিয়াল কিলারকে গ্রেফতার করে পুলিশ। শুরু হয় তদন্ত। পাশাপাশি উঠে আসে রক্ত জল করে দেওয়া সব তথ্য।
advertisement
অনুমান করা হয়েছিল আততায়ী শুধু খুনই করেননি, মৃতদের মাংসও খেতেন তিনি। রক্তও পান করতেন স্যুপের মতো। এমনকি, মৃতদেহগুলির খুলিও সংগ্রহ করতেন সেই অপরাধী। তার আগে সেই খুলি থেকে ঘিলু বার করে খেতেন। কিন্তু কে সেই নৃশংস খুনি?
advertisement
উত্তরপ্রদেশের কুখ্যাত সেই সিরিয়াল কিলারের নাম রাজা কোলান্ডার। রাজার জন্ম পূর্ব উত্তরপ্রদেশে এক কোল জনজাতি পরিবারে। তাঁর বাবার নাম ছিল রাম নিরঞ্জন কোল। ভয়ঙ্কর অপরাধী তথা নরমাংস খাওয়ার অভিযোগ থাকা রাজা একসময় উত্তরপ্রদেশের একটি অস্ত্র কারখানায় কাজ করতেন। কিন্তু খুব অল্প সময়েই মাথা বিগড়োয় তাঁর। নিজেকে সত্যিকারের রাজা মনে করতেন রাজা। এ-ও মনে করতেন, রাজার মতোই যে কাউকে শাস্তি দিতে পারেন তিনি, বিশেষ করে অপছন্দের মানুষদের।
advertisement
২০০০ সালের ২৪ জানুয়ারি চালক রবি শ্রীবাস্তবকে নিয়ে লখনউ থেকে মধ্যপ্রদেশ রেওয়ার উদ্দেশে রওনা দেন মনোজ। চারবাগ স্টেশন এলাকা থেকে একজন মহিলা-সহ ছ’জন যাত্রীকেও গাড়ি তোলেন।কিন্তু এর পর আর মনোজ বা তাঁর চালক রবির আর কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি। মনোজের গাড়িটির সর্বশেষ অবস্থান ছিল রায়বরেলীর হরচাঁদপুর। সেখানে চা খেতে নেমেছিলেন তাঁরা।তিন দিন পরেও মনোজ বা়ড়ি না ফেরায় লখনউয়ের নাকা থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করেন তাঁর পরিবারের সদস্যেরা। পরবর্তী কালে এলাহাবাদের শঙ্করগড় বনাঞ্চলে মনোজ এবং রবির বিকৃত দেহ উদ্ধার হয়।
advertisement
ময়নাতদন্তে দেখা যায়, খুন করা হয়েছিল মনোজ এবং রবিকে। শুরু হয় তদন্ত। মনোজের পরিবারের এক সদস্য দাবি করেন, মনোজ নিখোঁজ হওয়ার সময় তাঁর গাড়িতেই ছিলেন রাজা এবং তাঁর স্ত্রী ফুলন দেবী।
advertisement
এর পরেই গ্রেফতার হন রাজা। তাঁর বাড়ি তল্লাশি করে মানুষের একাধিক খুলি উদ্ধার হয়। শুরু হয় নরমাংস ভক্ষণের তত্ত্ব। মনোরোগ বিশেষজ্ঞেরা রাজাকে মানসিক রোগী হিসাবে বর্ণনা করেছিলেন। যদিও আদালত তাঁকে বিচারের জন্য মানসিক ভাবে উপযুক্ত বলে ঘোষণা করে।২০০১ সালের মার্চ মাসে রাজার পাশাপাশি তাঁর স্ত্রী ফুলন এবং শাগরেদ বচ্চ রাজ কোল, আদালত সিংহ কোল, দিলীপ গুপ্ত এবং দাদন সিংহের নামও জড়িয়েছিল মনোজ এবং রবির হত্যাকাণ্ডে।
advertisement
বিভিন্ন আইনি বিলম্বের কারণে সেই মামলার বিচার শুরু হয়েছিল ২০১৩ সালের মে মাসে। মামলা চলাকালীন ২০০১ সালে রাজার সহ-অভিযুক্ত আদালত সিংহ এবং ফুলন দেবীর মামলা পৃথক করা হয়েছিল। অনুপস্থিতির কারণে দিলীপ গুপ্তের মামলাও আলাদা করে দেওয়া হয়। বিচার চলাকালীন ২০১৭ সালে দাদন সিং মারা যান। ফলে তাঁর বিরুদ্ধে মামলার কার্যক্রমও বন্ধ হয়।
advertisement
এর মধ্যেই উত্তরপ্রদেশের অন্য এক সাংবাদিক ধীরেন্দ্র সিংকে ঠান্ডা মাথায় খুনের অভিযোগে ২০১২ সালের নভেম্বরে রাজা এবং তাঁর শ্যালক বক্ষরাজকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়।অভিযোগ ছিল, ধীরেন্দ্রকে প্রলুব্ধ করে গুলি চালিয়ে হত্যা করা হয়েছিল। কবর দেওয়া হয়েছিল তাঁর বিকৃত দেহ। রাজার বিরুদ্ধে মামলাকে ‘বিরলতম’ বলেও উল্লেখ করা হয়েছিল।
advertisement
অভিযোগ ছিল, শিকারদের খুনের পর আগে তাঁদের দেহ টুকরো টুকরো করতেন রাজা। এর পর দেহের টুকরোগুলো বিভিন্ন জায়গায় ছুড়ে ফেলতেন। কিন্তু মৃতদেহের মাথা রেখে দিতেন নিজের কাছে। পরে নাকি মাথাগুলি থেকে ঘিলু বার করে স্যুপ তৈরি করে খেতেন।সেই সব নৃশংস হত্যাকাণ্ডের প্রায় দু’দশক পরে চলতি বছরের মে মাসে রাজাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৬৪, ৩৯৬, ২০১, ৪১২ এবং ৪০৪ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করা হয় তাঁকে।