মানবাধিকারের নামে দেশের আইন ভাঙা যাবে না, অ্যামনেস্টি বিতর্কে জবাব সরকারের

কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে হেনস্থার অভিযোগ তুলে এ দিন সকালেই ভারতে তাদের যাবতীয় কর্মকাণ্ড বন্ধ করার কথা জানিয়েছিল আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল৷ সরকারের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় এজেন্সি দিয়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে সংগঠনের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করার অভিযোগ তোলা হয়৷ সংগঠনের সমস্ত ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টও ফ্রিজ করে দেওয়া হয়৷ যদিও কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে পাল্টা বিবৃতি দিয়ে দাবি করা হল, বিদেশ থেকে অর্থ সংগ্রহের ক্ষেত্রে বেআইনি পথ অবলম্বন করাতেই সংগঠনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে৷

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে বিবৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, 'অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল যে দাবি করেছে, তা দুর্ভাগ্যজনক এবং সেখানে সত্যকে অতিরঞ্জিত করে দেখানো হয়েছে৷ অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বিদেশ থেকে তহবিল সংগ্রহের জন্য কুড়ি বছর আগে একবারই (১৯.১২.২০) বিদেশি অনুদান (নিয়ন্ত্রণ) আইন বা FRCA-এর অধীনে অনুমতি নিয়েছিল৷ তার পর থেকে দু'টি সরকারের আমলেই তাদের সেই অনুমতির আবেদন খারিজ করা হয়েছে কারণ এই অনুমোদন পাওয়ার শর্তপূরণ করেনি ওই সংগঠন৷ এফআরসিএ-এর অনুমোদন এড়িয়ে ঘুরপথে বিদেশি অনুদান আনতে ভারতে নথিভুক্ত চারটি প্রতিষ্ঠানের নামে টাকা আনায় অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল৷ যা প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ হিসেবে দেখানো হয়৷'

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে আরও দাবি করা হয়েছে, বেআইনি এই কার্যকলাপে জড়িত থাকার জন্য আগের সরকারের আমলেও বিদেশ থেকে তহবিল আনার জন্য অ্যামনেস্টির আবেদন খারিজ করে দেওয়া হয়েছিল৷ যার ফলস্বরূপ সেই সময়ও ভারতে নিজেদের কাজ বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছিল অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল৷

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের বিবৃতিতে স্পষ্ট বলা হয়েছে, 'ভারতে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল মানবসেবার সঙ্গে যুক্ত যাবতীয় কাজ করতেই পারে৷ কিন্তু বিদেশ থেকে আসা তহবিলের সাহায্যে চলা কোনও সংগঠনকে দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বিতর্কে নাক গলাতে দেওয়া হবে না৷ এ ক্ষেত্রে আইন সবার ক্ষেত্রে সমান এবং তা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের ক্ষেত্রেও একই ভাবে প্রযোজ্য৷'

গত ২৮ অগাস্ট দিল্লি দাঙ্গার ছ' মাস পূর্তি উপলক্ষে দিল্লি পুলিশের গাফিলতিকে দায়ী করে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছিল অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের ভারতীয় শাখা৷ তার একমাসের মধ্যেই সংগঠনের দফতরই বন্ধ করে দিতে হল৷ সংগঠনের অভিযোগ, তাদের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় সরকারের যাবতীয় পদক্ষেপ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং ইচ্ছাকৃতভাবে তাদের কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা চলছিল৷