তাণ্ডবলীলা চালাচ্ছে ওমিক্রনের বিএফ৭ ভ্যারিয়েন্ট! ভ্যাকসিনের সমস্ত ডোজ নেওয়ার পরেও কি আমরা নিরাপদ?
- Published by:Rachana Majumder
Last Updated:
যাঁরা কোভিডের উভয় ডোজ নিয়েছেন, তাঁদেরকে বুস্টার অথবা প্রিকশনারি ডোজ নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন ডাক্তাররা।
বর্তমানে করোনা পরিস্থিতি ফের জটিল হয়ে উঠছে। কারণ বর্তমানে তাণ্ডবলীলা চালাচ্ছে ওমিক্রন বিএফ৭ সাবভ্যারিয়েন্ট। ফলে ভ্যাকসিনেশন বা টিকাকরণের উপর জোর দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। শুধু তা-ই নয়, প্রিকশনারি ডোজের গুরুত্বও বর্ণনা করেছেন তাঁরা। আসলে এই ভ্যারিয়েন্ট কোনও এক ব্যক্তির ইমিউন সিস্টেমকে ইমিউনাইজিং অ্যান্টিজেনের সামনে পুনরায় প্রকট করে দিতে পারে। ফলে এর আগের ডোজগুলোর জোরটাই একটা সময়ের পরে হারিয়ে যায়।
advertisement
যদিও কোভিড ১৯-এর বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য শুধুমাত্র ভ্যাকসিনেশনই যথেষ্ট নয়। এর পাশাপাশি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। অর্থাৎ আগের মতো মাস্ক পরতে হবে, সোশ্যাল ডিসট্যান্সিং বা সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। এ-ছাড়া আরও একটি জরুরি বিষয় হচ্ছে হ্যান্ড হাইজিন বজায় রাখা। করোনা ছড়িয়ে পড়া রুখতে হাত সঠিক ভাবে ধুতে হবে এবং হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করতে হবে। ফলে যাঁরা পুরোপুরি ভাবে ভ্যাকসিনেটেড, তাঁদেরও এই সতর্কতামূলক বিষয়গুলি মাথায় রাখতে হবে।
advertisement
বিশেষজ্ঞদের মতে, যাঁরা ভ্যাকসিনেশনের পুরো কোর্স সম্পূর্ণ করেছেন, তাঁদেরকেই পুরোপুরি ভাবে ভ্যাকসিনেটেড বলা হয়। অর্থাৎ একটা অথবা দুটো প্রয়োজনীয় ডোজ সম্পূর্ণ হয়ে যাওয়া পরে দুই সপ্তাহ কেটে যাওয়ার পরেই একটা মানুষকে পুরোপুরি ভ্যাকসিনেটেড হিসেবে গণ্য করা হয়। আসলে ইমিউন সিস্টেমকে পুরোপুরি জবাব দিতে একটা মানুষের প্রায় দুই সপ্তাহ সময় লাগে। যা সুস্থতার পরিচয় দেয়। আর কোভিডের ক্ষেত্রে ভারতে রয়েছে কোভিশিল্ড এবং কোভ্যাক্সিনের মতো ভ্যাকসিন। আর আন্তর্জাতিক বাজারে রয়েছে ফাইজার এবং মডার্নার মতো ভ্যাকসিন। যার দুটো ডোজ রয়েছে। তবে আন্তর্জাতিক বাজারে থাকা জনসন অ্যান্ড জনসন কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের মতো ভ্যাকসিনে রয়েছে সিঙ্গল ডোজ।
advertisement
কোভিড ১৯-এর সঙ্গে লড়াই করার জন্য এবং এর সংক্রমণ আটকানোর জন্য ভ্যাকসিনেশন খুবই জরুরি পদক্ষেপ। তবে এসএআরএস-সিওভি-২ ভাইরাসের বিরুদ্ধে পুরোপুরি ইমিউনিটি প্রদান করে থাকে। একই ভাবে বিএফ৭ ওমিক্রন, যা কোভিডের ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের সাব-ভ্যারিয়েন্ট খুব সহজেই সংক্রমিত করতে পারে। এটা সাধারণ এবং ভ্যাকসিনেটেড উভয় ক্ষেত্রেই ছড়িয়ে যেতে পারে। তাই ভ্যাকসিন নেওয়ার পাশাপাশি মাস্ক পরা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা এবং সঠিক হ্যান্ড হাইজিন বজায় রাখা জরুরি।
advertisement
যদি এক জন পুরোপুরি ভাবে ভ্যাকসিনেটেড মানুষ মারণ করোনা ভাইরাস বিশেষ করে বর্তমান পরিস্থিতিতে বিএফ৭ ওমিক্রনের সংক্রমণের মুখে পড়েন, তা-হলে সেই অবস্থাকে যুগান্তকারী সংক্রমণ হিসেবে গণ্য করা হবে। সারা বিশ্বের বড় সংখ্যক মানুষই ভ্যাকসিন নিয়েছে। তার মধ্যেও যুগান্তকারী সংক্রমণের কিছু কেস সামনে আসছে। মনে করা হয় যে, ভ্যাকসিনপ্রাপ্ত মানুষজনের রোগ-লক্ষণ প্রকাশ পায় না কিংবা মৃদু উপসর্গ দেখা দেয়। কিছু নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে রোগীর বয়স, বিদ্যমান কো-মর্বিডিটির উপর মৃত্যুর বিষয়টা নির্ভর করে। তবে সেই সম্ভাবনা খুবই বিরল।
advertisement
মানুষের ভ্যাকসিনের অবস্থার উপর ভিত্তি করে ভিন্ন ভিন্ন রোগীর ক্ষেত্রে কোভিডের উপসর্গ ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে। তবে বিশেষজ্ঞরা দাবি করছেন যে, পুরোপুরি ভাবে ভ্যাকসিন নেওয়া রোগীদের ক্ষেত্রে গলা ব্যথা, নাক দিয়ে ক্রমাগত জল পড়া, নাক বন্ধ হয়ে থাকা, ক্রমাগত কাশি এবং মাথা ধরা বা মাথা ব্যথার মতো উপসর্গ দেখা দিতে পারে।
advertisement
আবার যে-সব রোগী ইতিমধ্যেই ভ্যাকসিনের একটাই ডোজ নিয়েছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে মাথা ব্যথা, নাক দিয়ে জল গড়ানো, গলা ব্যথা, হাঁচি এবং ক্রমাগত কাশির মতো উপসর্গ দেখা যায়। আর যাঁরা ভ্যাকসিনের একটাও ডোজ নেননি, তাঁদের ক্ষেত্রে মাথা ব্যথা, গলা ব্যথা, নাক দিয়ে জল গড়ানো, জ্বর এবং অনবরত কাশির মতো উপসর্গ দেখা দেয়। এই নিয়ে সমীক্ষা চালিয়ে বিশেষজ্ঞরা দাবি করেছেন যে, যদি কারওর ভ্যাকসিন নেওয়ার পরেও কোনও কারণ ছাড়াই হাঁচি শুরু হয়, তাহলে তাঁর একটা কোভিড পরীক্ষা করানো উচিত। এটা বিশেষ করে তাঁদের জন্য প্রযোজ্য, যাঁরা এই রোগের ঝুঁকির আওতায় থাকা মানুষজনের সংস্পর্শে এসেছেন।
advertisement
ওমিক্রন বিএফ৭-এর ত্রাস চলাকালীন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা একটাই পরামর্শ দিচ্ছেন। আর সেটা হল - কোভিড আটকানোর জন্য সব থেকে জরুরি হল ভ্যাকসিনেশন। যাঁরা কোভিডের উভয় ডোজ নিয়েছেন, তাঁদেরকে বুস্টার অথবা প্রিকশনারি ডোজ নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন ডাক্তাররা। এটা মূলত নির্ভর করে আগের ডোজ নেওয়ার সময়ের উপর। আসলে একটা সময়ের পর থেকে টিকার কার্যকারিতা হারিয়ে যেতে থাকে। আর বুস্টার ডোজের মূল লক্ষ্য হল, ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা বজায় রাখা।