বহরমপুর শহর জুড়ে এই রথযাত্রা পরিক্রমা করে, ছোট থেকে বৃদ্ধ সকলেই মেতে ওঠে এই রথযাত্রায়। নাচের ছন্দে রথের রশিতে টান পড়ল বহরমপুর । ২০১১ সাল থেকে বহরমপুরে মায়াপুর ইস্কনের ভক্তদের উদ্যোগে শুরু হয় রথযাত্রা । বহরমপুর টেক্সটাইল মোড় থেকে এই রথযাত্রা শুরু হয় । এবারেও প্রাচীন প্রথা মেনেই গড়াল রথের চাকা । জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রা সুসজ্জিত রথে বিরাজমান। ভক্তদের ঢল দেখে উচ্ছসিত আয়োজকরা।(ছবি ও লেখা: কৌশিক অধিকারী)
তিনটি রথ নিয়েই শোভাযাত্রা শুরু হয় শুক্রবার বিকেলে। শহরের বিভিন্ন অঞ্চল পরিক্রমা করে রথ। পরিক্রমা শেষ হয় বহরমপুর দশমুন্ড কালীবাড়ি মাঠে। উল্টো রথ পর্যন্ত সেখানেই থাকে রথ। মহিলা থেকে ছোট শিশুরা নৃত্য মেতে ওঠেন রথযাত্রায়।অন্যদিকে, প্রায় ২০০ বছর আগে মুর্শিদাবাদের কান্দির তৎকালীন রাজা কৃষ্ণচন্দ্র সিংহ ওরফে লালাবাবু নীলাচল পুরির আদলে কান্দি রাধাবল্লভ জিউর মন্দিরে রথ যাত্রার প্রচলন করেছিলেন, দীর্ঘ ২০০ বছর ধরে চিরাচরিত প্রথা অনুযায়ী কান্দির এই রথ উৎসব পালন হয়ে আসছে তবে সময়ের বিবর্তনে রথযাত্রা উৎসবে কিছুটা বদল এসেছে। (ছবি ও লেখা: কৌশিক অধিকারী)
আগে কান্দির রাজবাড়ি সংলগ্ন জগদীশ সিংহর বাড়িতে রথের পর আট দিন জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রাকে রাখা হতো গণ্ডিচা মন্দির অর্থাৎ মাসির বাড়ি বানিয়ে তবে সেই মন্দির ভগ্নদশাই থাকার কারণে কান্দির রাধাবল্লভ জিউর মন্দিরের একটি পৃথক ঘরকে এই আট দিন অস্থায়ী গণ্ডিচা মন্দির হিসেবে সাজানো হয় এবং সেখানেই বর্তমানে জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রার বিগ্রহ বিরাজ করে। কথিত আছে কান্দির এই রথ দেখার জন্য শুধু কান্দিবাসী নয় আশপাশের বিভিন্ন গ্রাম থেকে গরুর গাড়িতে করে লোক আসতো এবং রথের রসিতে টান দিত।(ছবি ও লেখা: কৌশিক অধিকারী)
দীর্ঘ দু'বছর অতিমারির কারণে কান্দি রাধাবল্লভ জিওর মন্দিরের রথযাত্রার অনুষ্ঠান স্থগিত ছিল, অতিমারি কাটিয়ে দীর্ঘ দু'বছর পর আবার রথযাত্রার হচ্ছে আর যার জেরে এলাকাবাসীর উৎসাহ উদ্দীপনা চোখে পড়ার মতো। বর্তমানে সিংহ পরিবারের নেই রাজত্ব নেই সেই জৌলুস তবে কান্দি রথযাত্রা উদযাপন কমিটির উদ্যোগে এই রথযাত্রা উদযাপনের জৌলুস আজো কমেনি। শুক্রবার বিকেলে কান্দি রাধা বল্লভ জিউর মন্দিরে থেকে রথযাত্রা সুচনা করা হয় ।উপস্থিত ছিলেন কান্দি পৌরসভার চেয়ারম্যান জয়দেব ঘটক সহ বিশিষ্ট ব্যক্তিরা । গোটা কান্দি শহর জুড়ে এই রথ পরিক্রমা করে। ভীড় জমান বহু সাধারণ মানুষ ও ভক্তরা।(ছবি ও লেখা: কৌশিক অধিকারী)