টমেটো আদতে দক্ষিণ এবং মধ্য আমেরিকার ফসল৷ ইউরোপীয়রা মহাদেশের এই প্রথম পা রেখে লাল টুকটুকে টমেটো (Tomato) দেখে ভেবে বসল বুঝি বা বিষাক্ত কোনও ফল! ভয় কাটিয়ে স্পেনীয়রা এর স্বাদ গ্রহণ করে৷ তার পর তাঁদের মাধ্যমেই ছড়িয়ে পড়ে ইউরোপের অন্য্ অংশ এবং ফিলিপিন্সে৷ তার পর টমেটো জয় করে নেয় দক্ষিণপূর্ব এশিয়া৷ বর্তমানে ভারত পৃথিবীতে টমেটো উৎপাদনে সবার প্রথমে৷ শুধু লাল নয়! পার্পল-সহ মোট চারটি রঙে পাওয়া যায় টমেটো৷ ভিটামিন এ, কে, বি-১, বি-৩, বি-৫, বি-৬, বি-৭ এবং ভিটামিন সি আছে টমেটোতে৷ এছাড়াও টমেটোতে আছে ফোলেট, আয়রন, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ক্রোমিয়াম, কোলিন, জিঙ্ক এবং ফসফরাস৷ এত রকম উপাদানের সমাহারে টমেটো একাধিক উপকার করে আমাদের (Health Benefits of Tomato)৷ নিয়মিত টমেটো খেলে ত্বক থেকে দূষণ-সহ অন্যান্য ময়লার দাগ দূর করে৷ ফলে ত্বক পরিষ্কার হয়৷ শুধু স্যালাডেই নয়৷ টমেটো ব্যবহার করুন ফেসপ্যাকেও৷ আপনার ত্বক থাকবে সতেজ৷ টমেটোর ভিটামিন আপনার চুলের গোছাকেও রাখে ঝলমলে৷ টমেটোতে থাকা লাইকোপেন ক্যানসার কোষের বৃদ্ধি রোধ করে৷ বিশেষ করে প্রস্টেট, যকৃৎ এবং কোলোরেক্টাল ক্যানসারের ক্ষেত্রে লাইকোপেন খুবই কার্যকর৷ ভিটামিন কে এবং ক্যালসিয়াম থাকার ফলে টমেটোর গুণে হাড় মজবুত হয়৷ টমেটোতে থাকা কোম্যারিক এবং ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড শরীরকে ধূমপানের কুপ্রভাব থেকে রক্ষা করে৷ পরোক্ষ ধূমপায়ী যাঁরা, তাঁদের ডায়েটেও টমটো থাকা প্রয়োজন৷ ভিটামিন এ, বি এবং পটাশিয়াম থাকে বলে টমেটো রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে৷ ফলে হৃদরোগের ক্ষেত্রে টমেটো পরোক্ষে উপকারী৷ টমেটোতে থাকা ক্রোমিয়াম রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে৷ মধুমেহ রোগীরা নিয়মিত খান টমেটো৷ পরিপাক ক্রিয়াতেও টমেটো সহায়ক৷ বেশি মশালাদার খাবার খাওয়ার পর টমেটো খেলে হজমে সুবিধে হয়৷ শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বৃদ্ধি করে টমেটো৷ টমেটোর প্রভাবে কার্নিটাইন অ্যামিনো অ্যাসিডের উৎপাদন বৃদ্ধি পায়৷ এই অ্যাসিডের প্রভাবে শরীরে মেদ হ্রাসের হার বেড়ে যায় অন্তত ৩০ শতাংশ পর্যন্ত৷ তবে টমেটোর গুণ সর্বোচ্চ পেতে খেতে হবে খোসা-সহ৷ নয়তো এর গুণ থেকে বঞ্চিত হবেন৷