Health Tips: নীরব ঘাতক...! ঝাঁঝরা করে দিচ্ছে শরীর, উচ্চ রক্তচাপ থাকলে কি নুন খাওয়া বন্ধ ? গবেষণার উঠে এল নয়া তথ্য, যা জানালেন বিশেষজ্ঞ...

লবণ ছাড়া খাবারের স্বাদ যেন ফিকে লাগে। বিশ্বের যে কোনও অংশে অলঙ্কারের মতো টেবিল আলোকিত করে থাকে লবণ বা নুন। তবে এহেন প্রয়োজনীয় উপকরণ সাম্প্রতিক সময়ে যেন মূল খলনায়ক হয়ে উঠেছে।

আসলে হিউম্যান ফিজিওলজিতে শরীরের মিনারেল কন্টেন্ট নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে লবণ। যদিও অতিরিক্ত সেবন কিন্তু বিপদ ডেকে আনছে।

উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের লবণ সেবন কমানোর উপকারিতা সম্পর্কে যথেষ্ট তথ্য-প্রমাণ মিলেছে। আসলে এটিকে নীরব ঘাতক বলে ডাকা হয়। এর জন্য সুস্থ মানুষও হাইপারটেনশনের কবলে পড়েন। এমনকী কম বয়সীরাও এর থেকে বাঁচতে পারেন না। আসলে প্রসেসড বা প্রক্রিয়াজাত এবং সংরক্ষিত খাবারের মধ্যে থাকে উচ্চ পরিমাণে সোডিয়াম ক্লোরাইড উপাদান। এই ধরনের খাবার আবার কমবয়সীদের পছন্দের তালিকায় থাকে।

মুম্বইয়ের খারের পিডি হিন্দুজা হাসপাতাল এবং মেডিক্যাল রিসার্চ সেন্টারের কনসালট্যান্ট কার্ডিওলজিস্ট ডা. কায়ান সিওদিয়া জানান যে, কম পরিমাণে লবণ সেবন করলে হাইপারটেনশন নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। অতিরিক্ত পরিমাণে সোডিয়াম সেবন করলে ভাস্কুলার সিস্টেমের কার্যকারিতা নষ্ট হয়ে যায়। যার জেরে কার্ডিয়াক সমস্যা এবং হাইপারটেনশন দেখা দিতে থাকে।

ডায়েট নিয়ে ব্যাপকভাবে গবেষণা করা হয়েছে এবং তাতে দেখা গিয়েছে যে, বিশেষ করে DASH (উচ্চ রক্তচাপ বন্ধ করার জন্য খাদ্যতালিকাগত পদ্ধতি) ডায়েটে দৈনিক লবণ সেবনের পরিমাণ সামান্য হ্রাস করলেও সিস্টোলিক এবং ডায়াস্টোলিক রক্তচাপ উল্লেখযোগ্য ভাবে কমাতে পারে। যাঁদের হাইপারটেনশন রয়েছে, তাঁদের এই বিষয়টি কিন্তু স্বস্তি দিতে পারে।

হাইপারটেশন সংক্রান্ত ক্রমবর্ধমান সঙ্কটের জবাবে একাধিক বহুমুখী অভিযান চালানো হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) ২০২৭ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী লবণ সেবন ৩০ শতাংশ কমানোর লক্ষ্যমাত্রা গ্রহণ করেছে। ভারত-সহ একাধিক দেশই নতুন উৎসাহ ও উদ্দীপনা নিয়ে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য এগিয়ে এসেছে।

ভারতে এখন প্যাকেটজাত খাবারের উপর ক্লিয়ার সল্ট লেবেলিং এবং বাধ্যতামূলক পুষ্টির পরিমাণ প্রকাশ কার্যকর করা হচ্ছে, যা গ্রাহকদের সচেতনতা বাড়ানোর ক্ষমতা দেয়। রন্ধনসম্পর্কীয় পুনর্কল্পনার এক ঢেউ যেন আমাদের লবণ-সচেতন যুগের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।

খাবারে লবণের সর্বব্যাপী উপস্থিতি কিন্তু এখনও একটি ভয়াবহ বিপদের জায়গায় রয়েছে। স্বল্প পরিমাণে লবণের সেবন কমালেও সেটা হাইপারটেনশনের রোগীদের জন্য অনেকটাই তাৎপর্যপূর্ণ বিষয়। এটাও মনে রাখা আবশ্যক যে, লবণ সেবনের পরিমাণ হ্রাস কিন্তু চিকিৎসকের প্রেসক্রাইব করা ওষুধের পরিপূরক নয়। বরং ব্লাড প্রেশার বা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে এটা বেশ কার্যকরী।