

একাধিক গবেষণা বলছে, উপসর্গ দেখা দেওয়ার দুদিন আগে থেকে এবং পাঁচ দিন পর পর্যন্ত সব চেয়ে বেশি সংক্রামক হয়ে ওঠেন করোনা-আক্রান্ত রোগীরা। এ ক্ষেত্রে যদি কেউ গুরুতর ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন বা রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা অত্যন্ত কম হয়, তা হলে প্রায় ২০ দিন পর্যন্ত শরীরে থাকতে পারে এই মারণ ভাইরাস। এমনকি মৃদু উপসর্গের ক্ষেত্রেও অনেক ক্ষেত্রে এক সপ্তাহ পর্যন্ত নীরবে টিকে থাকে COVID 19।


আর এই পুরো বিষয়টি একটি অস্তিত্বের সংকট তৈরি করেছে। তা হলে ঠিক কত দিন পর্যন্ত নির্ধারণ করা যেতে পারে আইসোলেশনের সম ? ১৪ দিনের সময় কমিয়ে দেওয়া উচিৎ, না কি সংক্রমণের যাবতীয় বিষয়গুলি মাথার রেখে আরও সময় বাড়ানো উচিৎ? আসুন জেনে নেওয়া যাক সম্ভাব্য দিকগুলি।


এই বিষয়ে সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (Centers for Disease Control and Prevention)-এর পরামর্শ, অসুস্থ হওয়ার পর থেকে কমপক্ষে ১০ দিন আইসোলেশনে থাকতে হবে সংক্রমিত ব্যক্তিকে। শোনা যাচ্ছে আইসোলেশন পিরিয়ড কমানোর বিষয়ে বিবেচনা করছে এই সংস্থা। সব ঠিক থাকলে পরের সপ্তাহের দিকে নতুন গাইডলাইনও ইস্যু হতে পারে।


কিন্তু, অন্য দেশগুলি, তাদের জনস্বাস্থ্য কেন্দ্র বা আধিকারিকরা কোন পথে হাঁটছেন? এই বিষয়েও বিশদে আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে। এ ক্ষেত্রে সেপ্টেম্বর মাসেই আইসোলেশন পিরিয়ড ১৪ দিন থেকে কমিয়ে সাত দিন করে দিয়েছে ফ্রান্সের প্রশাসন। অন্য দিকে, আইসোলেশন পিরিয়ড পাঁচ দিনে কমিয়ে এনেছে জার্মানি। তবে এ নিয়ে সমালোচনাও হয়েছে বিস্তর। বিশেষজ্ঞদের মতে, আক্রান্তের আইসোলেশন পিরিয়ড এ ভাবে কমে গেলে আবার সংক্রমণ বাড়ার সম্ভাবনা প্রবল। এ ক্ষেত্রে অনেকে আবার আইসোলেশনে থাকছেনও না। যা বড়সড় আতঙ্কের বিষয়।


আমেরিকার এক সমীক্ষা জানাচ্ছে, অনেকেই অসুস্থ হওয়ার এক-দু'দিন পর পরীক্ষা করাচ্ছেন। অনেকের রিপোর্ট পেতে সময় লাগছে দু'-তিন দিন। কিন্তু এর মাঝেই ছড়িয়ে যাচ্ছে ভাইরাস। যা গভীর চিন্তার বিষয়। এ ক্ষেত্রে আবার অনেক রোগীর দেহে কোনও উপসর্গ দেখা যাচ্ছে না, অনেকের শরীরে উপসর্গ কম মাত্রায়। কিন্তু এঁরাও প্রচুর পরিমাণে ভাইরাস নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।


তাই আইসোলেশনের সময়সীমা নিয়ে এখনও দ্বিধাবিভক্ত স্বাস্থ্য ক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত সংস্থা ও ব্যক্তিত্বরা। একাংশের কথায়, একজন আক্রান্ত হওয়া মানে বিষয়টি অত্যন্ত গুরুতর। তাই হঠাৎ করে আইসোলেশন পিরিয়ড কমিয়ে দিলে ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে সংক্রমণ। অনেকে আবার হোম কেয়ার সেন্টার, হোম ব়্যাপিড টেস্টের পরামর্শ দিচ্ছেন। এ ক্ষেত্রে বাড়িতে আইসোলেশনে একটু বেশি সময় কাটালে তেমন সমস্যা হবে না রোগীদের। তবে আইসোলেশনের সময়সীমা নিয়ে তর্জা আপাতত জারি। অপেক্ষা সঠিক সময় ও সিদ্ধান্তের।