বছরের পর বছর পোকামাকড় ঘেঁষবে না চালের হাঁড়িতে...! এইভাবে 'স্টোর' করুন 'চাল', শিখে নিন ছোট্ট মোক্ষম 'কৌশল'!

ভাত ছাড়া দিন চলে না ভারতীয়দের। উত্তর হোক বা দক্ষিণ, পূর্ব হোক পশ্চিম, ভারতীয়দের পাতে ভাত না পড়লে যেন ঘুম আসে না। আর সেই কারণেই ঘরে ঘরে মজুদ রাখতে হয় চালের ভাণ্ডার। রান্নাঘরে চালের হাঁড়ি খালি এ তো ভাবাই যায় না বাঙালি বাড়িতে!

প্রতি বছরের মতো এইবারেও ধান চাষ প্রায় সম্পূর্ণ। মাঠে মাঠে ফসল প্রস্তুত। শীঘ্রই বাজারে আসতে চলেছে নতুন ধান। সেই ধানও গোলায় গোলায় সংরক্ষণ করবেন কৃষকরা।

কিন্তু, কখনও কখনও আর্দ্রতার কারণে, ধান বা গমে বা বাড়িতে রাখা চালের কৌটো বা হাঁড়িতে ভরে যেতে থাকে পুঁচকে পোকামাকড়। কালো কালো পোকা ভরে যায় কৌটো, ড্রাম বা হাঁড়িতে মজুদ রাখা চালে। আর তখনই মাথায় হাত হাল হয় বাড়ির গিন্নির।

পোকা লাগা চালের ভাত তো আর মুখে তোলা যায় না। তাই অনেক সময় মানুষ এই চালের পোকা দূর করার জন্যই ব্যবহার জেরিন দামি দামি রাসায়নিক। কিন্তু এগুলি ব্যবহার করে পোকার হাত থেকে নিস্তার পাওয়া গেলেও স্বাস্থ্যের জন্য তা অত্যন্ত ক্ষতিকর হতে পারে।

কিন্তু জানেন কি এই সমস্যা এড়াতে কোনও বিশেষ রাসায়নিক কেনার দরকারই নেই। বরং এর জন্য, ঘরে উপস্থিত কিছু সহজ জিনিসই দুর্দান্ত কার্যকরী ও বিস্ময়কর কাজ করতে পারে।

এই বিষয়ে বিশেষজ্ঞ ভবেশ প্যাটেল বলেন, এই সহজ ঘরোয়া প্রতিকারের মাধ্যমে আপনি চালের পোকামাকড় এবং মাইটদের চিরতরে বিদায় জানাতে পারেন।

সবচেয়ে বড় কথা, খুব সহজ এই পদ্ধতিটি প্রাকৃতিক, নিরাপদ এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণভাবে খুবই লাভজনক। এর জন্য আপনাকে আপনার রান্নাঘরে রাখা কিছু মশলা এবং সাধারণ উপাদান ব্যবহার করেই এই কাজটি করা যায়। আর তাতেই বাই বাই বলবে পোকার দল।

এই টোটকা বানাতে শুধু লাগবে হলুদ গুঁড়ো, এলাচ, লবঙ্গ, দারচিনি, পাতলা সুতির কাপড়, সুতো বা রাবার ব্যান্ড। প্রথমে একটি পাতলা সুতির কাপড় নিন। এটি পরিষ্কার করে ভাল করে ধুয়ে শুকিয়ে নিন। তারপর এটি দুই-তিন স্তরে ভাঁজ করে ছোট আকারে তৈরি করুন।

এবার এই কাপড়ে কিছু হলুদ গুঁড়ো, ২-৩টি এলাচ, ৪-৫টি লবঙ্গ এবং একটি ছোট দারচিনির টুকরো দিন। তারপর কাপড়টি ভাল করে ভাঁজ করে একটি বান্ডিল তৈরি করুন।

বান্ডিলটি শক্ত করে বন্ধ করার জন্য আপনি একটি সুতো বা রাবার ব্যান্ড ব্যবহার করতে পারেন। নিশ্চিত করুন যে মশলাগুলি ওই বান্ডিলের ভিতরে ঠিক থাকে এবং কাপড়ের মধ্য থেকে বাইরে বেরিয়ে না আসে।

এটি মশলার সুগন্ধ পাত্রের ভিতরে সম্পূর্ণরূপে ছড়িয়ে দেবে। এখন এই বান্ডিলটি আপনি যে বাক্স বা পাত্র বা হাঁড়িতে চাল রাখতে চান তাতে রাখুন। যদি বেশি চাল থাকে, তাহলে আপনি দুই বা তিনটি বান্ডিল তৈরি করতে পারেন যাতে পুরো পরিমাণটি ভাল ভাবে সুরক্ষিত থাকে।

হলুদের প্রাকৃতিক অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-ফাঙ্গাল বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এর পোকামাকড় তাড়ানোর ক্ষমতা রয়েছে। এছাড়াও, এলাচ, লবঙ্গ এবং দারচিনির মতো মশলাগুলি তাদের তীব্র গন্ধের জন্য বিখ্যাত।

পোকামাকড় এই তীব্র সুগন্ধ মোটেও সহ্য করতে পারে না। তাই যখন আপনি এই মশলাগুলিকে একটি বান্ডিলে ভরে চালের হাঁড়িতে রাখেন, তখন পোকামাকড় কেবল আসে না শুধু না, পুরো পাত্রটি দীর্ঘ সময়ের জন্য নিরাপদও থাকে।

তবে খেয়াল রাখবেন, বান্ডিলটি খুব ঘন করবেন না। এটি সামান্য পাতলা হওয়া উচিত যাতে মশলার গন্ধ সহজেই বাইরে বেরিয়ে আসে। চালের বাক্সে নিয়মিত ওই বান্ডিলটি পরীক্ষা করতে থাকুন।

প্রয়োজনে বান্ডিলের ভিতরের মশলা পাল্টে পাল্টে দিন। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার যত্ন নিন। পুরনো বান্ডিলটি যেন ভিজে না যায় সেদিকেও খেয়াল রাখুন।