

একটি ছোট শিশু হল একটা পরিষ্কার স্লেটের মতো। এখানে আপনি যা লিখবেন সেটার দাগ থেকে যাবে। শিশুদের জীবনও হল সে রকম। ছোটবেলায় তাকে যা যা বলা হয় বা শেখানো হয়, সেটা সারা জীবন তার মনের মধ্যে পাকাপাকি ঘর তৈরি করে। কারণ ছোটবেলায় নিজস্ব মতামত খুব একটা থাকে না। বাবা-মাকে দেখেই একটি বাচ্চা শেখার বা বোঝার চেষ্টা করে। বাবা-মায়ের দায়িত্ব হল একটি শিশুকে সঠিক শিক্ষার মাধ্যমে বয়ঃসন্ধি থেকে প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পথে নিয়ে যাওয়া।


আগেই বলেছি, শিশুরা শেখে তাদের বাবা-মাকে দেখে। বাবা-মা যদি শৃঙ্খলা মেনে চলেন, নম্র স্বভাবের হন এবং দৈনন্দিন জীবনযাত্রা নিয়ন্ত্রিত রাখেন, তাহলে ছেলেমেয়েরাও সেটাই শিখবে। আর যদি বাবা-মা দায়িত্বজ্ঞানহীন হন, কট্টভাষী হন বা অকারণে ব্যয় করেন, তা হলে সেটাই সন্তান শিখবে।


শৈশব হল সেই সময় যখন একটি শিশুর ব্যক্তিত্বের ভিত তৈরি হয়। গোটা বিশ্ব সম্পর্কে শিশুদের কৌতূহলও থাকে। শিশুর কাছে বহির্বিশ্বের সব রহস্য ধীরে ধীরে উন্মোচন করা উচিৎ। সে যাতে শৃঙ্খলা ও নিয়মানুবর্তিতা শেখে তাই তাকে কোনও নির্দেশ দেওয়ার আগে কেন সেই নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে সেটা বুঝিয়ে বলা উচিৎ। তা হলে শিশুও বুঝবে যে কাজটা সে করছে তার গুরুত্ব কতটা।


অনেক সময়ে বাড়ির ছোট সদস্যরা না বুঝেই এমন কিছু কাজ করে ফেলে যেটা বাবা মায়ের পছন্দ হয় না। এর জন্য তাদের বকাবকি কড়া উচিৎ নয়। এতে বাবা-মায়ের সঙ্গে ছেলেমেয়েদের সম্পর্কে নেগেটিভিটি দেখা যায়। যদি সন্তান দেরি করে বাড়ি আসে বা সন্ধে হলেও খেলার মাঠ থেকে ফিরতে না চায়, তাকে না বকে ভালো করে বোঝাতে হবে। বাবা বা মা তার এই আচরণের জন্য কেন অসন্তুষ্ট হয়েছে, সেটা বুঝতে পারলে আর কোনও সমস্যা হবে না।


ছোটরা সব সময়ে বড়দের মতো হতে চায়। তারা ঝটপট হোমওয়ার্ক শেষ করে নেয়, বিছানা প্রস্তুত রাখে বা বাসন মাজার সময় মাকে সাহায্য করে। এই কাজগুলো নিজে থেকে করলে তাকে বাহবা দিতে হবে। সে কবিতা লিখলে, ছবি আঁকলে বা অন্য কিছু করলেও তাকে উৎসাহিত করতে হবে।