আচারের (Pickles) সঙ্গে অনেকেরই অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে। ছোটবেলায় চুরি করে আচার খাওয়া, ধরা পড়ে যাওয়া ইত্যাদি! নিরামিষ হোক বা আমিষ রান্না, সঙ্গে একটু আচার না থাকলে মুখে খাওয়ার রোচে না অনেকেরই। আচারের প্রকারভেদও তো কিছু কম নয়। কুলের আচার, আমের আচার, লেবুর আচার থেকে শুরু করে মাছ আর মাংসের আচারও হয়। আসলে তেল আর মশলা দিয়ে খাবার রেখে দেওয়ার এই পদ্ধতি শতাব্দী প্রাচীন।
আচার যখন তৈরি করা হয়, তখন তাতে তেল বা ভিনিগার (Vinegar) দেওয়া হয়। ফল বা সব্জির আচার তৈরির ক্ষেত্রে তেল বা ভিনিগারের সঙ্গে বিক্রিয়া করে ল্যাকটিক, সাইট্রিক ও অ্যাসেটিক তৈরি করে। এই তিনটে অ্যাসিডই শরীরের পক্ষে ভাল। এগুলো শরীরের মধ্যে উপকারী মাইক্রোবসদের (Microbes) আরও শক্তিশালী আর সক্রিয় করে তোলে। এই মাইক্রোবস অন্ত্রে কাজ করে। ফলে আচার খেলে হজমশক্তি বাড়ে, মেটাবলিজম (Metabolism) ভাল হয় এবং কিছু ক্ষেত্রে কোলেস্টেরলের (Cholesterol) মাত্রাও নিয়ন্ত্রিত থাকে।
তবে আচারে তো শুধু তেল বা ভিনিগার দেওয়া হয় না। দেওয়া হয় নানা রকমের মশলাও। নুন, লঙ্কা, হলুদ ও অন্যান্য মশলার গুণে আচারে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট (Antioxidant) ও মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট (Micronutrient) যুক্ত হয়। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, নিয়মিত আচার খেলে ইমিউনিটি সিস্টেম (Immunity System) বা রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাও অনেকটা বেড়ে যায়।
কিন্তু কিছু গবেষণা এর উল্টো কথাও বলে। বলা হয়, প্রতি দিন আচার খেলে শরীরে অনেক সমস্যা দেখা দিতে পারে। ফল বা সবজি দিয়ে তৈরি আচারে ক্যালোরি অনেক কম থাকে। তাই আরও বেশি বেশি অন্য খাবার খেতে ইচ্ছে করে। যেহেতু আচার খুব দ্রুত খাবার হজম করে দেয় এবং খিদে বাড়িয়ে দেয়, তাই নিয়মিত আচার খেলে অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার একটা প্রবণতা দেখা দেয়। এই অস্বাস্থ্যকর খাবার খেতে অত্যন্ত সুস্বাদু হলেও এতে কোনও পুষ্টিগুণ থাকে না। উল্টে এই জাতীয় খাবার শরীরে প্রোটিন (Protein), ফ্যাট (Fat) ও কার্বোহাইড্রেটের (Carbohydrates) পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। যার ফলে ওজন বৃদ্ধি, ডায়বিটিস (Diabetes) ও উচ্চ রক্তচাপ (High Blood Pressure) দেখা দিতে পারে।