যুগ বদলেছে। এগিয়েছে সমাজও। কিন্তু যৌনতা নিয়ে ছুঁৎমার্গ আজও রয়েই গিয়েছে। সম্পর্কের ক্ষেত্রে যৌনতা অন্যতম বড় ভূমিকা পালন করে। অথচ আজও যৌনতা নিয়ে কথা বলতে মানুষ কুণ্ঠাবোধ করে। এমনকী কারও যৌন সমস্যা দেখা দিলে তিনি সেটা সঙ্কোচের কারণে নিজের সঙ্গীর সঙ্গেও খোলাখুলি আলোচনা করে উঠতে পারেন না। সেক্ষেত্রে তাঁরা ভেরিফায়েড নয়, এমন অনলাইন সাইটকেই ভরসা করে বসেন। অথবা অনেক সময় বহু মানুষই বন্ধুদের থেকে এই বিষয়ে অবৈজ্ঞানিক পরামর্শ নিয়ে থাকে। এই বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে News18.com-এর সঙ্গী হয়েছেন সেক্সোলজিস্ট প্রফেসর ডা. সারাংশ জৈন (Dr. Saransh Jain)। তিনি সম্প্রতি ভায়াগ্রার (Viagra) বিষয়ে তুলে ধরেছেন। ছোট্ট এই নীল রঙের পিলের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কেও স্পষ্ট ধারণা দিয়েছেন তিনি।
ভায়াগ্রা আসলে কী?-পুরুষদের লিঙ্গশৈথিল্য বা ইরেকটাইল ডিসফাংশনের (Erectile Dysfunction) সমস্যার চিকিৎসা করতে ভায়াগ্রা নামের এক ধরনের ওষুধ ব্যবহার করা হয়ে থাকে। তবে আদতে ভায়াগ্রা ইরেকটাইল ডিসফাংশন রোগ সারায় না অথবা যৌন চাহিদাও বৃদ্ধি করে না। তার পরিবর্তে এই ওষুধ পেশি শিথিল করে এবং রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে দিয়ে ইরেকশনে সহায়তা করে। ফাইজারের তৈরি এই ওষুধ আসলে সিলডেনাফিল সাইট্রেট, যার ব্র্যান্ড নাম হল ভায়াগ্রা। শারীরিক মিলনের আধ থেকে এক ঘণ্টা আগে খালি পেটে এই ওষুধ খেলে সবথেকে কার্যকরী ফল মিলবে। আর যাঁদের এই সমস্যা কম অথবা মৃদু, তাঁরা সঙ্গমের ৪-৫ ঘণ্টা আগে এই ওষুধ খেতে পারেন। Representative Image
কীভাবে কাজ করে ভায়াগ্রা?- যৌন উত্তেজনার সময় কর্পোরা ক্যাভার্নোসায় পর্যাপ্ত পরিমাণে রক্ত সঞ্চালন বন্ধ করে দেয় ফসফোডিস্টেরেজ টাইপ ৫ (PDE5) নামের এক উৎসেচক। আর তখনই লিঙ্গ শৈথিল্যের সমস্যা দেখা দেয়। ভায়াগ্রার কাজ হল যৌন উত্তেজনার সময় পিডিই৫ উৎসেচককে দমন করা। তাতে পুরুষাঙ্গে রক্ত সঞ্চালন ঠিকঠাক হয় এবং সঙ্গমের সময় লিঙ্গ দৃঢ় থাকে। তাই বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই পুরুষদের লিঙ্গশৈথিল্যের সমস্যার সমাধান করতে ভায়াগ্রাই ব্যবহার করা হয়। তবে যাঁরা রুগ্ন অথবা অবসাদগ্রস্ত, তাঁদের শরীরে ভায়াগ্রা সেভাবে কাজ করবে না। এই তালিকায় মদ্যপানের বিষয়টাও রয়েছে। যাঁরা মদের নেশায় আসক্ত, তাঁদের শরীরে ভায়াগ্রার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায় এবং লিঙ্গশৈথিল্যের সমস্যার অবনতি ঘটে। Representative Image
ভায়াগ্রা কত সময় পর্যন্ত স্থায়ী হয়?- ভায়াগ্রা কেমন কাজ করবে বা দীর্ঘস্থায়ী হবে, তা ডোজ, বয়স এবং সর্বোপরি স্বাস্থ্যের উপর নির্ভর করবে। ৬৫ বছরের উপর যাঁদের বয়স, তাঁদের ডোজের পরিমাণ হওয়া উচিত ২৫ মিলিগ্রাম। যৌনক্রিয়ার আগেই ভায়াগ্রা নিতে হবে। কারণ এটা রক্তপ্রবাহের মধ্যে শোষিত হতে যথেষ্ট সময় লাগে। আবার অনেক সময় দেখা গিয়েছে যে, কিছু কিছু পুরুষ ভায়াগ্রা নিলেও তাঁদের মেটাবলিজমের কারণে বারবার ইরেকশন হতে থাকে। বলে রাখা ভালো যে, ভায়াগ্রা মোটামুটি ৪-৫ পর্যন্ত স্থায়ী হয়। Representative Image
ভায়াগ্রার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া: মাথা হালকা হয়ে আসা, মাথা ব্যথা, পিঠে ব্যথা, নাক দিয়ে জল গড়ানো অথবা নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া, বদহজম ৷ তবে যদি এর থেকে জটিল পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়, তাহলে ডাক্তারের কাছে যেতে হবে। জটিল পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার মধ্যে অন্যতম চোখ ঝাপসা, দৃষ্টিহীনতা, অচেতন হয়ে পড়া, বুকে ব্যথা, মাথা ঝিমঝিম, শ্বাসকষ্ট, কানে কম শোনা, র্যাশ প্রভৃতি। এমনকী, অত্যন্ত গুরুতর ক্ষেত্রে অনেক সময় ভায়াগ্রার কারণে হার্ট অ্যাটাকও হতে পারে। ভায়াগ্রা ব্যবহারের আগে যা করা উচিত: ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া বাঞ্ছনীয়। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া-সহ এর সম্পর্কে সব কিছু জেনে নিতে হবে। অন্যান্য রোগের কোনও ওষুধ খেলে সেই বিষয়েও ডাক্তারকে জানাতে হবে। Representative Image