Healthy Lifestyle: একাধিক সঙ্গীর সঙ্গে যৌন সম্পর্কে আসক্ত? শারীরিক দিক থেকে কি এটা আদৌ বিপজ্জনক?
- Published by:Siddhartha Sarkar
- news18 bangla
Last Updated:
একাধিক সঙ্গীর সঙ্গে যৌন সম্পর্কে (Sexual Relationship) লিপ্ত হওয়ার বিষয়টা কি আদৌ স্বাস্থ্যকর? তবে এই প্রশ্ন মনে জাগলেও খোলামেলা আলোচনা করতে পারেন না অনেকেই। তাই আজ আমরা আলোচনা করে নেব এই বিষয়ের উপরেই।
সম্পর্কের ক্ষেত্রে যৌনতার অনেক বড় ভূমিকা রয়েছে। প্রেমের সম্পর্কে মনের চাহিদার সঙ্গে জড়িয়ে থাকে শারীরিক চাহিদাও (Sexual Needs)। সহজ ভাবে বলতে গেলে, ভালবাসায় শরীর এবং মন- দুইই মেলা জরুরি। আবার অনেকেই এক সঙ্গীতে তুষ্ট থাকতে পারেন না। তাঁরা একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে যৌন সম্পর্ক উপভোগ করতে চান। তাই অনেক সময় তাঁরা জড়িয়ে পড়েন পরকীয়ায়। কেউ কেউ আবার সম্পর্কে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ না-হয়েও শুধুমাত্র শরীরী খেলাতেই মেতে উঠতে চান। ফলে তাঁরা বেছে নেন একাধিক সঙ্গী (Multiple Sex Partners)। Representative Image
কিন্তু মনে প্রশ্ন জাগে যে, একাধিক সঙ্গীর সঙ্গে যৌন সম্পর্কে (Sexual Relationship) লিপ্ত হওয়ার বিষয়টা কি আদৌ স্বাস্থ্যকর? তবে এই প্রশ্ন মনে জাগলেও খোলামেলা আলোচনা করতে পারেন না অনেকেই। তাই আজ আমরা আলোচনা করে নেব এই বিষয়ের উপরেই। প্রথমেই একাধিক সঙ্গীর সঙ্গে যৌনতা বিষয়টা আদতে কী, সেই সম্পর্কে আলোচনা করা যাক। ২০১৮ সালের একটি সমীক্ষায় বলা হয়েছে যে, একটি নির্দিষ্ট সময়ে কোনও ব্যক্তি যদি একের বেশি সঙ্গীর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করেন, তাহলে সেই বিষয়টাকেই একাধিক সঙ্গীর সঙ্গে যৌনতা হিসেবে ধরে নেওয়া হয়। অর্থাৎ একই সময়ের পরিধিতে এক জনের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপনের একদম পরেই আবার অন্য সঙ্গীর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন হলেই সেই বিষয়টা একাধিক সঙ্গীর সঙ্গে যৌনতা হিসেবে গণ্য হবে। এই প্রতিবেদনে একাধিক সঙ্গীর সঙ্গে যৌনতা সম্পর্কিত কিছু ঝুঁকি এবং কিছু উপকারিতার বিষয়েও আলোচনা করা হবে। Representative Image
গড়ে কত জন যৌনসঙ্গী?- দ্য ন্যাশনাল সার্ভে অফ ফ্যামিলি গ্রোথ (The National Survey of Family Growth)-এর বিশ্বস্ত সূত্র মারফত জানা গিয়েছে যে, ২০১৫ থেকে ২০১৯ সালের একটা পরিসংখ্যান পাওয়া গিয়েছে আমেরিকার সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল এবং প্রিভেনশন বা সিডিসি (CDC)-র তরফ থেকে। ওই পরিসংখ্যান থেকে একটা হিসেব মিলেছে, কত জন ব্যক্তি তাঁর বিপরীত লিঙ্গের এক জন সঙ্গীর সঙ্গে নানা ধরনের যৌনক্রিয়ায় লিপ্ত হয়েছেন। আবার সেই সঙ্গে কত জন পুরুষ তারও একটা হিসেব পাওয়া গিয়েছে। তার মধ্যে মহিলাদের ক্ষেত্রে গড় সঙ্গীর সংখ্যা ৪.৩ এবং পুরুষদের ক্ষেত্রে গড় সঙ্গীর সংখ্যা ৬.৩। আরও একটা পরিসংখ্যানে বিষয়টা স্পষ্ট হয়ে যাবে। Representative Image
গড়ে কত জন যৌনসঙ্গী?- দ্য ন্যাশনাল সার্ভে অফ ফ্যামিলি গ্রোথ (The National Survey of Family Growth)-এর বিশ্বস্ত সূত্র মারফত জানা গিয়েছে যে, ২০১৫ থেকে ২০১৯ সালের একটা পরিসংখ্যান পাওয়া গিয়েছে আমেরিকার সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল এবং প্রিভেনশন বা সিডিসি (CDC)-র তরফ থেকে। ওই পরিসংখ্যান থেকে একটা হিসেব মিলেছে, কত জন ব্যক্তি তাঁর বিপরীত লিঙ্গের এক জন সঙ্গীর সঙ্গে নানা ধরনের যৌনক্রিয়ায় লিপ্ত হয়েছেন। আবার সেই সঙ্গে কত জন পুরুষ তারও একটা হিসেব পাওয়া গিয়েছে। তার মধ্যে মহিলাদের ক্ষেত্রে গড় সঙ্গীর সংখ্যা ৪.৩ এবং পুরুষদের ক্ষেত্রে গড় সঙ্গীর সংখ্যা ৬.৩। আরও একটা পরিসংখ্যানে বিষয়টা স্পষ্ট হয়ে যাবে। Representative Image
১৭.৭ শতাংশ মহিলার এবং ১১.২ শতাংশ পুরুষের যৌনসঙ্গীর সংখ্যা ছিল ১। ২৯.২ শতাংশ মহিলার এবং ২২.৩ শতাংশ পুরুষের যৌনসঙ্গীর সংখ্যা ছিল ২-৪। ২৮.৬ শতাংশ মহিলার এবং ২৫.৮ শতাংশ পুরুষের যৌনসঙ্গীর সংখ্যা ছিল ৫-৯। ১১.৬ শতাংশ মহিলার এবং ১২.৫ শতাংশ পুরুষের যৌনসঙ্গীর সংখ্যা ছিল ১০-১৪। ১২.৯ শতাংশ মহিলার এবং ২৮.৩ শতাংশ পুরুষের যৌনসঙ্গীর সংখ্যা ছিল ১৫ অথবা তার বেশি। অন্য দিকে, আবার এক বিশ্বস্ত সূত্র ২০২১ সালের এক অনলাইন সমীক্ষা তুলে ধরেছে। তাতে জাতি-লিঙ্গ-আয়-বয়স নির্বিশেষে ১৮ থেকে ৭০ বছর বয়সী মানুষের যৌন আচরণের উপর গবেষণা চালানো হয়েছে। Representative Image
গবেষণায় সমস্ত অংশগ্রহণকারীর গোটা জীবনের গড় যৌনসঙ্গীর সংখ্যা ছিল: ওরাল সেক্সের ক্ষেত্রে গড় সংখ্যা ৮.৫ ৷ যৌনসঙ্গম ক্ষেত্রে গড় সংখ্যা ১১.৪ ৷ পায়ুসঙ্গমের ক্ষেত্রে গড় সংখ্যা ২.১ ৷ গবেষকেরা এই গবেষণা প্রসঙ্গে আরও জানিয়েছেন যে: এই অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ২.৪ শতাংশ জানিয়েছেন যে, তাঁরা ৫০ জনেরও বেশি যৌনসঙ্গীর সঙ্গে ওরাল সেক্সে লিপ্ত হয়েছেন। আবার ৩.৯ শতাংশ অংশগ্রহণকারী জানিয়েছেন যে, তাঁরা ৫০ জনেরও বেশি সঙ্গীর সঙ্গে যৌন সঙ্গম স্থাপন করেছেন। আর ৩.৬ শতাংশ অংশগ্রহণকারী ১৫ জনের বেশি যৌনসঙ্গীর সঙ্গে পায়ুসঙ্গমে লিপ্ত হয়েছেন। গবেষকদের মতে, জীবনের একটা পর্যায়ে বয়সের সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে যৌনসঙ্গীর সংখ্যাও। তবে পুরুষরা ৬০ বছর বয়স পেরিয়ে গেলে যৌনসঙ্গীর সংখ্যাও কমেছে। আর মহিলারা ৪০ পার করার পরেই তাঁদের যৌনসঙ্গীর সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে। Representative Image
কিন্তু সবথেকে বড় যে প্রশ্নটা আসে, সেটা হল- একাধিক সঙ্গীর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করার বিষয়টা কি ঠিক? এর উত্তর হবে, হ্যাঁ ব্যাপারটা ঠিক। এতে কোনও সমস্যাই নেই। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)-র বিশ্বস্ত সূত্র যৌন স্বাস্থ্য সম্পর্কে যে বিশ্লেষণ দিয়েছে, তা হল: যৌনতার ক্ষেত্রে শারীরিক, মানসিক, আবেগের দিক থেকে এবং সামাজিক ভাবে ভালো থাকার অবস্থাই সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ ৷ যৌন সম্পর্ক ও যৌনতার প্রতি একটা ইতিবাচক ও সম্মানজনক দৃষ্টিভঙ্গী ৷ নিরাপদ এবং আনন্দদায়ক যৌন অভিজ্ঞতার সম্ভাবনা ৷ Representative Image
যৌন ক্রিয়ায় লিপ্ত প্রত্যেকটা মানুষের সম্মান, নিরাপত্তা এবং যৌন অধিকার রক্ষা- দ্য আমেরিকান সেক্সুয়াল হেলথ অ্যাসোসিয়েশন (ASHA)-এর তরফে বলা হয়েছে, যতক্ষণ না কারও অনুমতি থাকছে অথবা যতক্ষণ না কারও বিপদ হচ্ছে, ততক্ষণ যৌন আনন্দ উপভোগ করার কোনও ঠিক বা ভুল রাস্তা নেই। তার ফলে একাধিক যৌনসঙ্গী থাকতেই পারে। তাতে সমস্যা নেই। এএসএইচএ আরও জানিয়েছে যে, সন্তোষজনক যৌন জীবনের মূল ফ্যাক্টর হল- নিজস্ব যৌন চাহিদা এবং দায়িত্বের দিকটা ভালো ভাবে বোঝা। শুধু তা-ই নয়, সেই সঙ্গে নিজের সঙ্গী অথবা সঙ্গীদের শারীরিক চাহিদা অথবা দায়িত্বটাও ভালো ভাবে বোঝা উচিত। Representative Image
২০২১ সালের গবেষণার রিপোর্ট অনুযায়ী যৌনক্রিয়ার উপকারিতা: যৌনতায় অর্গাজম একটা বড় ভূমিকা পালন করে। আর এই বিষয়টা জেনে আরও অবাক হতে হয় যে, এটা ঘুমের উন্নতিতেও সাহায্য করে। ঘুমের পাশাপাশি ইমিউনিটি বা দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতেও সাহায্য করে যৌনক্রিয়া। গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, সপ্তাহে এক বার অথবা দুবার শারীরিক মিলনের ফলে এক ধরনের অ্যান্টিবডি উচ্চমাত্রায় তৈরি হয়। আর এই অ্যান্টিবডিই প্যাথোজেনের সঙ্গে লড়াই করে। Representative Image
১৭.৭ শতাংশ মহিলার এবং ১১.২ শতাংশ পুরুষের যৌনসঙ্গীর সংখ্যা ছিল ১। ২৯.২ শতাংশ মহিলার এবং ২২.৩ শতাংশ পুরুষের যৌনসঙ্গীর সংখ্যা ছিল ২-৪। ২৮.৬ শতাংশ মহিলার এবং ২৫.৮ শতাংশ পুরুষের যৌনসঙ্গীর সংখ্যা ছিল ৫-৯। ১১.৬ শতাংশ মহিলার এবং ১২.৫ শতাংশ পুরুষের যৌনসঙ্গীর সংখ্যা ছিল ১০-১৪। ১২.৯ শতাংশ মহিলার এবং ২৮.৩ শতাংশ পুরুষের যৌনসঙ্গীর সংখ্যা ছিল ১৫ অথবা তার বেশি। অন্য দিকে, আবার এক বিশ্বস্ত সূত্র ২০২১ সালের এক অনলাইন সমীক্ষা তুলে ধরেছে। তাতে জাতি-লিঙ্গ-আয়-বয়স নির্বিশেষে ১৮ থেকে ৭০ বছর বয়সী মানুষের যৌন আচরণের উপর গবেষণা চালানো হয়েছে। Representative Image
যৌনতার ফলে অক্সিটোসিন নিঃসরণ ঘটে। স্ট্রেস বা মানসিক চাপ, উত্তেজনার মতো সমস্যা দূরীকরণে দারুণ প্রভাব রয়েছে এই হরমোনের। কর্টিসল নামের এক হরমোনের সঙ্গে মানসিক চাপের যোগ রয়েছে। উচ্চ মাত্রায় কর্টিসল নিঃসরণ হলে শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, যৌন উদ্দীপনা বা যৌন উত্তেজনার কারণে এই কর্টিসল হরমোনের মাত্রা হ্রাস হয়েছে। যৌনক্রিয়াকে শারীরিক কসরত হিসেবেও অনেক সময় গণ্য করা হয়ে থাকে। যার ফলে কার্ডিওভাসক্যুলার এবং সেরিব্রোভাসক্যুলার স্বাস্থ্যেও উন্নতি ঘটে। Representative Image
গবেষণায় দেখা গিয়েছে, যৌনক্রিয়ার ফলে পুরুষদের আয়ু বেড়েছে। কারণ এর কারণে মারণ রোগের ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়। এছাড়াও জীবনের সন্তুষ্টি এবং আনন্দের উপরও দারুণ ইতিবাচক প্রভাব রয়েছে যৌনক্রিয়ার। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, যৌনক্রিয়া কম হলে মৃত্যু এবং অসুস্থতার হার বেড়ে যায়। আর এক্ষেত্রে সঙ্গী একাধিক হলে যৌনতার ক্ষেত্রে পরিপূর্ণতা, সন্তুষ্টি এবং আনন্দ তো আসেই, সেই সঙ্গে একঘেয়েমিও কাটানো যায়। এছাড়াও এনডরফিন নিঃসরণের পরিমাণ বেড়ে যায়, যা ক্যানসার কোষ এবং সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে। Representative Image
একাধিক সঙ্গীর সঙ্গে যৌনতার ক্ষেত্রে ঝুঁকি: গবেষণায় দেখা গিয়েছে, একাধিক যৌনসঙ্গী থাকলে যৌন সংসর্গে নানা রকম সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা থাকে। এর থেকে শারীরিক রোগের ঝুঁকিও চলে আসে। যাঁদের সারা জীবন ধরে দশের বেশি যৌনসঙ্গী, তাঁদের ক্যানসারের সম্ভাবনা অনেক বেড়ে গিয়েছে। আসলে হেপাটাইটিস বি এবং সি-এর মতো সংক্রমণ কিন্তু লিভার ক্যানসারের ঝুঁকি অনেক গুণ বাড়িয়ে দেয়। আবার ওদিকে এইচপিভি সংক্রমণের জেরে বাড়ে মুখ, পায়ু, প্রস্টেট, পেনাইল এবং সার্ভিক্যাল, ক্যানসারের আশঙ্কা। এখানেই শেষ নয়, একাধিক যৌনসঙ্গীর সঙ্গে যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হলে এইচআইভি সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কাও থেকে যায়। Representative Image
যৌনক্রিয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা: যখন একাধিক সঙ্গীর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করা হবে, তখন সব থেকে বড় যে বিষয়টি মাথায় রাখা উচিত, সেটা হল নিরাপত্তা অথবা সতর্কতা। যাতে এক সঙ্গীর দেহ থেকে অন্য সঙ্গীর দেহে সংক্রমণ না-ছড়ায়, তার জন্য কিছু বিশেষ উপায় অবলম্বন করা জরুরি। সেই উপায়গুলি হল: যৌন সঙ্গম অথবা যৌন ক্রিয়ার ক্ষেত্রে প্রতি বার কন্ডোম অথবা ডেন্টাল ড্যাম ব্যবহার করতে হবে। একাধিক যৌনসঙ্গী থাকলে যৌন সংসর্গে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে কি না, তা নিয়মিত পরীক্ষা করাতে হবে। সেক্স টয় ব্যবহার করলে তাতেও কন্ডোম ব্যবহার করতে হবে। আর প্রতি ব্যবহারের আগে এবং পরে ওই সেক্স টয় ভালো ভাবে পরিষ্কার অথবা জীবাণুমুক্ত করতে হবে। অতিরিক্ত অ্যালকোহল অথবা মাদকসেবন থেকে নিজেকে বিরত রাখতে হবে। এতে রোগের ঝুঁকি আরও বেড়ে যায়। এই সব সতর্কতা মেনে চললে সুন্দর ভাবে উপভোগ করা যাবে যৌনজীবন। সেখানে একাধিক সঙ্গীর সঙ্গে যৌন সম্পর্কে জড়ালেও সমস্যা নেই। Representative Image