Fish: নাক সিঁটকান বাজারে দেখলেই...? ঔষধি গুণে ভরপুর গ্রাম-বাংলার এই সাধারণ মাছ! প্রোটিনের ভাণ্ডার, বাতের ব্যথা সারবে এক চুটকিতে! বাকি উপকার শুনলে এখনই ছুটবেন থলে হাতে
- Published by:Ananya Chakraborty
- hyperlocal
- Reported by:Saikat Shee
Last Updated:
Fish: বিলুপ্তপ্রায় পাকাল মাছ ফিরিয়ে আনতে সরকারি উদ্যোগে শুরু হয়েছে কৃত্রিম প্রজনন। বাঙালি খাদ্যতালিকায় পাকাল মাছ শুধু সুস্বাদুই নয়, এটি স্বাস্থ্যের জন্যও খুবই উপকারী? জেনে নিন এই দেশি মাছটি কীভাবে আপনার শরীরকে প্রোটিন, ভিটামিন ও অন্যান্য পুষ্টিগুণে ভরিয়ে তোলে
গ্রাম বাংলার খাল বিল ও পুকুর ডোবা থেকে হারিয়ে গেছে বহু প্রজাতির দেশি মাছ। ওই সব মাছ যেমন পুষ্টিকর তেমনই সুস্বাদু। কিন্তু বর্তমানে বিলুপ্তপ্রায় হওয়ায় বাজারে সামান্য পরিমাণ উঠলেও তা চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। ফলে সেই সব মাছকে আবার ফিরিয়ে আনতে সরকারি উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সেরকমই একটি মাছ হল পাকাল মাছ। একসময় বাংলার পুকুর ডোবা বা খাল বিলে বহুল পরিমাণে পাওয়া যেত এই মাছ। কিন্তু ক্রমেই এই মাছ বিভিন্ন কারণে বংশবিস্তার করতে না পারায় প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছে। ফলে বাজারে চড়া দামে বিক্রি হয়। (ছবি ও তথ্য: সৈকত শী)
advertisement
ফ্যাট কম, সুস্বাদু এবং প্রোটিনের শতাংশও বেশি। কিন্তু এত গুনাগুন সত্বেও ক্রমশই যেন বিলুপ্তির পথে পাকাল। আর তাতেই চড়চড়িয়ে দাম চড়ছে। তাও আবার সময় মত পাওয়া মুশকিল। এবারে তাই মুশকিল আসান করতে তৎপর হয়েছে সিএডিসি। গ্রাম বাংলার সুস্বাদু মাছটিকে পুনরায় বাঙালির পাতে নিয়মিত ফিরিয়ে আনতে পাকালের প্রজননে জোর দেওয়া হয়েছে। পাকালের চাষ শুরু হয়েছে। যা কিনা পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় এই প্রথম বললেই চলে।
advertisement
পূর্ব মেদিনীপুর জেলার হলদিয়া, তমলুক, নিমতৌড়ি সহ বিভিন্ন বাজারে দিন দিন পাকাল মাছ হারিয়ে যাচ্ছে। হলদিয়ার মাখন বাবুর বাজারে মাছ কিনতে আসা সুদর্শন দণ্ডপাট জানান, ' একটা সময় প্রতিদিনই পাকাল মাছ বাজারে উঠত। এই মাছ সুস্বাদু ও প্রোটিন যুক্ত। বাজারে উঠলেই কিনে নিয়ে যাই। বর্তমানে খুব একটা পাওয়া যায় না। চড়া দাম। বাজারে উঠলে দ্রুত বিক্রি হয়ে যায়।'
advertisement
এক অভিজ্ঞ চিকিৎসক অম্লান দত্ত বলেন, “পাঁকাল মাছ মূলত এক ধরনের জিওল মাছ। এই মাছকে ইংরেজিতে মাড ফিস-ও বলা হয়ে থাকে। আবার গ্রামবাংলার সাধারণ মানুষ এই মাছটিকে বাম মাছ বলেও চিনে থাকেন। এই মাছ পুষ্টিগুণে ভরপুর। এই মাছে প্রচুর পরিমাণে থাকে ভিটামিন E, ভিটামিন D, ফসফরাস, আয়োডিন, সেলেনিয়াম জাতীয় উপাদান।’’
advertisement
পাকাল মাছ মূলত গ্রাম বাংলার পুকুর ঘাটেই পাকের মধ্যে সহজেই বেড়ে ওঠে। কিন্তু বর্তমানে মিষ্টি জলে রুই, কাতলা, মৃগেলের মত পোনা মাছ গুলির উৎপাদন বাড়ানোর জন্য বিজ্ঞানসম্মতভাবে মাছের চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। আর সেই চাষ করতে গিয়ে বহু ক্ষেত্রেই পুকুর কিংবা জলাশয়ের জল সেচে পুরোপুরি ফেলা হচ্ছে। কিংবা পুকুর থেকে অবাঞ্ছিত মাছ, পোকা সরিয়ে ফেলতে যথেচ্ছ ভাবে ব্লিচিং, মহুয়া খৈল প্রয়োগ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মৎস্য চাষিরা। এর ফলে প্রায় সমস্ত পুকুর জলাশয়ে খুব সহজেই বেড়ে ওঠা পাকাল প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে পড়ছে। আর তাতেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মৎস্যপ্রেমী থেকে শুরু করে মৎস্য গবেষকেরা।
advertisement
পাকাল মাছ নতুন করে ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগ নেওয়ার বিষয়ে এ বিষয়ে সিএডিসির তমলুক প্রকল্প আধিকারিক উত্তম কুমার লাহা জানিয়েছেন, "গ্রাম বাংলার পুকুর ডোবা খাল বিল খুব সহজেই বেড়ে ওঠা এই পাকাল মাছ যেভাবে একটু একটু করে বিলুপ্তির পথে যাচ্ছিল। এবার এই মাছটিকে পুনরায় বাজারজাত করতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আগামী দিনে চাহিদা মত পাকালের চাষ সম্ভব হবে।"
advertisement
সিএডিসি দফতরেই এই প্রথম হাজার দুয়েক পাঁকালের কৃত্রিম প্রজনন ঘটান সম্ভব হয়েছে বলে দাবি। আর সেই সদ্যোজাত পাকালগুলিকে আর্টিমিয়ার লার্ভা এবং পুকুর থেকে সংগৃহীত প্রাণী কোনা খাইয়ে সযত্নে লালন পালন চলছে। মোট তিনটি পুকুরে ছেড়ে চাষ শুরু হয়েছে। এর আগেও বিভিন্ন লুপ্তপ্রায় মাছ নতুনভাবে সরকারি উদ্যোগে ফিরে এসেছে এমনকি সেই মাছ চাষে আগ্রহ দেখিয়েছে মৎস্য চাষিরা। পাকাল মাছ কেউ সেই পরিকল্পনায় নিয়ে আসা হয়েছে বলে জানা যায়। (ছবি ও তথ্য: সৈকত শী)