আপনার প্রস্রাব কি 'গাঢ় হলুদ' রঙের? মলের রঙ 'মাটি'র মতো? অবহেলার ফল মারাত্মক হতে পারে...কিসের লক্ষণ?
- Published by:Tias Banerjee
Last Updated:
কখনও সাধারণ উপসর্গ—যেমন প্রস্রাবের রঙ গাঢ় হয়ে যাওয়া বা মলের রঙ সাদা হয়ে পড়া—আমরা অবহেলা করে যাই, ভাবি হয়তো জল কম খাচ্ছি বা হালকা হজমের সমস্যা। সত্যিই কি তাই? কী বলছেন চিকিৎসক?
মানুষের শরীর নিজেই অসংখ্য সংকেত দেয়, কখনও ইঙ্গিতে, কখনও প্রকাশ্যে। কিন্তু সেই সংকেতগুলি আমরা সব সময় বুঝতে পারি না। কখনও সাধারণ উপসর্গ—যেমন প্রস্রাবের রঙ গাঢ় হয়ে যাওয়া বা মলের রঙ বদলে যাওয়া—আমরা অবহেলা করে যাই, ভাবি হয়তো জল কম খাচ্ছি বা হালকা হজমের সমস্যা, সত্যি কি তাই? (Representative Image: AI)
advertisement
অথচ এগুলি হতে পারে এক ভয়ঙ্কর অসুখ, *অগ্ন্যাশয়ের ক্যানসার*-এর প্রাথমিক লক্ষণ। এই রোগের একটি ভয়াবহ দিক হল—প্রথমদিকে বিশেষ কোনও লক্ষণ না থাকায়, রোগ ধরা পড়ে দেরিতে। ফলে চিকিৎসার সুযোগও সংকুচিত হয়ে আসে। (Representative Image: AI)
advertisement
কেন শরীরের এমন ছোট পরিবর্তনকেও হালকাভাবে নেওয়া উচিত নয়? কোন কোন উপসর্গ হলে সাবধান হওয়া জরুরি? অগ্ন্যাশয়ের ক্যানসার কতটা মারাত্মক এবং তার ঝুঁকি কমানোর উপায়ই বা কী? এই প্রতিবেদনে রইল বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের মতামত। কখন সতর্ক হবেন? জানুন। (Representative Image: AI)
advertisement
কোনও কোনও উপসর্গ সাধারণ মনে হলেও, তা ভয়ঙ্কর অসুস্থতার নীরব সংকেত হতে পারে। যেমন, প্রস্রাবের রঙ যদি গাঢ় হলুদ বা বাদামি হয়ে যায় এবং মল যদি হালকা সাদা বা মাটি রঙের হয়ে ওঠে, তাহলে সেটি হতে পারে অগ্ন্যাশয়ের ক্যানসারের একটি লক্ষণ। (Representative Image: AI)
advertisement
অগ্ন্যাশয় আমাদের পেটের পিছনের দিকে অবস্থিত একটি ছোট অথচ গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। এটি হজমে সাহায্য করে এবং রক্তে গ্লুকোজ বা শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। তবে সমস্যা হল, এই অঙ্গে ক্যানসার হওয়ার প্রথমদিকে তেমন কোনও লক্ষণ প্রকাশ পায় না। ফলে রোগটি প্রাথমিক অবস্থায় ধরা পড়ে না। (Representative Image: AI)
advertisement
যখন লক্ষণগুলি প্রকাশ পায়, তখন তা অনেক সময়েই রোগের অগ্রসর স্তর নির্দেশ করে। তাই শুরুতেই যদি কিছু অস্বাভাবিক উপসর্গ দেখা দেয়, তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। (Representative Image: AI)
advertisement
গাঢ় হলুদ প্রস্রাব এবং সাদা বা মাটির মতো রঙের মল হতে পারে অগ্ন্যাশয়ের ক্যানসারের প্রাথমিক লক্ষণ। কেআইএমএস হাসপাতালের মেডিক্যাল গ্যাস্ট্রোএনটেরোলজিস্ট ড. স্রুজন কুমার দাস্যম জানাচ্ছেন, জন্ডিস, পেটের ব্যথা এবং হঠাৎ করে ওজন কমে যাওয়ার মতো উপসর্গগুলি অবহেলা করা বিপজ্জনক হতে পারে। ড. দাস্যম (Dr. Srujan Kumar Dasyam) জানিয়েছেন, অগ্ন্যাশয়ের ক্যানসারের উপসর্গগুলি এতটাই সাধারণ যে অনেকেই সেগুলিকে গুরুত্ব দেন না। কিন্তু এগুলি অবহেলা করলে বিপদ বাড়তে পারে। (Representative Image: AI)
advertisement
এই ক্যানসারের কিছু সাধারণ লক্ষণ হল: - জন্ডিস – ত্বক ও চোখের সাদা অংশ হলুদ হয়ে যাওয়া - প্রস্রাব গাঢ় বাদামি বা হলুদ রঙের হওয়া - মল ফ্যাকাশে, সাদা বা মাটি রঙের হয়ে যাওয়া - পেট বা পিঠে ব্যথা – এই ব্যথা সাধারণত হালকা হয়, তবে খাওয়ার পরে বা শোয়ার সময় অনুভব করা যায় - হঠাৎ ওজন কমে যাওয়া – না খেয়ে বা ডায়েট না করেও ওজন হ্রাস হতে পারে - ক্ষুধামান্দ্য – অল্প খেয়ে পেট ভরে যাওয়ার অনুভূতি - অতিরিক্ত ক্লান্তি – পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়ার পরও ক্লান্তি অনুভব করা - বয়স বেশি হলে হঠাৎ ডায়াবেটিস ধরা পড়া, বিশেষ করে ৬০ বছরের পর যাঁদের আগে কোনও ঝুঁকি ছিল না - বমি বমি ভাব, বদহজম, কোষ্ঠকাঠিন্য বা ডায়ারিয়া (Representative Image: AI)
advertisement
অগ্ন্যাশয়ের ক্যানসারের সম্ভাব্য কারণ কী? যদিও অগ্ন্যাশয়ের ক্যানসারের নির্দিষ্ট কারণ এখনও চিকিৎসাবিজ্ঞান নির্ধারণ করতে পারেনি, তবে কিছু ঝুঁকিপূর্ণ কারণ চিহ্নিত করা হয়েছে। - এই ক্যানসার সাধারণত ৬০ বছরের বেশি বয়সে বেশি দেখা যায় - ধূমপান এই রোগের অন্যতম বড় কারণ - দীর্ঘদিনের টাইপ ২ ডায়াবেটিস থাকলে ঝুঁকি বাড়ে - অতিরিক্ত ওজন থাকলে এবং অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস থাকলেও সমস্যা দেখা দিতে পারে - দীর্ঘদিনের প্যানক্রিয়াটাইটিস থেকেও ক্যানসারের ঝুঁকি তৈরি হতে পারে - যদি পরিবারে (পিতা-মাতা, ভাই-বোন) এই ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে থাকেন, তাহলে ঝুঁকি অনেকটাই বেড়ে যায় - লাল মাংস এবং অতিরিক্ত মদ্যপান এই রোগের আরেকটি সম্ভাব্য কারণ। (Representative Image: AI)
advertisement
এ রোগ থেকে পুরোপুরি সুরক্ষা পাওয়ার কোনও গ্যারান্টি নেই। তবে ঝুঁকি কমানোর কিছু উপায় রয়েছে। - পরিবারে ইতিহাস থাকলে অবশ্যই চিকিৎসকের সঙ্গে আলোচনা করুন - চিকিৎসকের পরামর্শে নিয়মিত স্ক্রিনিং বা স্বাস্থ্য পরীক্ষা (যেমন – এমআরআই বা এন্ডোস্কোপিক আল্ট্রাসাউন্ড) করানো যেতে পারে - ধূমপান ও মদ্যপান থেকে দূরে থাকুন - স্বাস্থ্যকর খাদ্য ও নিয়মিত শরীরচর্চা করুন - ডায়াবেটিস ও ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন। (Representative Image: AI)
advertisement