ফসল থেকে শুরু করে মানুষ এমনকী পশুদের জন্যও বিপদ ডেকে আনতে পারে এই আগাছা ! এর বংশবিস্তার রোধে কী করণীয়? পরামর্শ দিলেন কৃষি বিজ্ঞানী
- Published by:Siddhartha Sarkar
Last Updated:
আর এমনই একটি আগাছা হল পার্থেনিয়াম ঘাস। যা গাজর ঘাস বা ক্যারট গ্র্যাস নামেও পরিচিত। এটি ফসলের পাশাপাশি মানুষ এবং প্রাণীদের জন্য বিপজ্জনক।
Report: Pintu Awasthi: এমনিতে বর্ষাকালে মাঠে-ঘাটে, ফসলের জমির ধারে বুনো ঘাস বা আগাছা জন্মাতে দেখা যায়। এর মধ্যে কিছু কিছু ঘাস বা আগাছা কেবল ফসলের জন্যই মারাত্মক নয়, মানুষ ও প্রাণীদের জন্যও সমান ভাবে ক্ষতিকর। আর এমনই একটি আগাছা হল পার্থেনিয়াম ঘাস। যা গাজর ঘাস বা ক্যারট গ্র্যাস নামেও পরিচিত। এটি ফসলের পাশাপাশি মানুষ এবং প্রাণীদের জন্য বিপজ্জনক।
advertisement
মধ্যপ্রদেশের ছত্রপুরের নওগাঁও কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রে নিযুক্ত বিজ্ঞানী ড. কমলেশ আহিরওয়ার বলেন যে, এই ক্ষতিকর আগাছা খাদ্যশস্যের ফলন প্রায় ৪০ শতাংশ হ্রাস করে দিতে সক্ষম। এখানেই শেষ নয়, ক্রমাগত এই পার্থেনিয়ামের সংস্পর্শে আসার কারণে মানুষের মধ্যে ডার্মাটাইটিস, একজিমা, অ্যালার্জি, জ্বর, হাঁপানি ইত্যাদি রোগ দেখা দিতে পারে। এই পার্থেনিয়াম কিন্তু পশুদের জন্যও অত্যন্ত বিষাক্ত। এটি খেয়ে নিলেই পশুদের অনেক রোগ হতে পারে। তবে যেসব পশু দুধ দেয়, সেই সব পশুরা যদি এই ঘাস বা আগাছা খেয়ে নেয়, তাহলে তাদের দুধের স্বাদে তিক্ততা আসে। সেই সঙ্গে দুধ উৎপাদনও কমতে শুরু করে।
advertisement
শুধু ভারতেই নয়, আমেরিকা, মেক্সিকো, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, নেপাল, চিন, ভিয়েতনাম, অস্ট্রেলিয়ার মতো মোট ৩৮টি দেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে এই পার্থেনিয়াম। সাধারণত উপকূলীয় অঞ্চল এবং মাঝারি থেকে কম বৃষ্টিপাত হয়, এমন অঞ্চলে জন্মায় এটি। এর পাশাপাশি ধান চাষের জমির জলে এবং পাথুরে অঞ্চলেও অনায়াসে জন্মাতে পারে এটি। এছাড়া ফাঁকা জায়গা, অব্যবহৃত জমি, শিল্প এলাকা, রাস্তাঘাট, রেললাইন ইত্যাদির ধারে আমরা সাধারণত এই গাছ দেখতে পাই।
advertisement
এটি একটি বার্ষিক উদ্ভিদ। আর পার্থেনিয়াম গাছের উচ্চতা সাধারণত প্রায় ১.৫ থেকে ২ মিটার হয়। আর এর পাতা দেখতে অনেকটা গাজর গাছের পাতার মতো। প্রতিটি পার্থেনিয়াম গাছ থেকে প্রায় ৫,০০০ থেকে ২৫,০০০ পর্যন্ত বীজ উৎপাদন হতে পারে। তবে এই বীজ খুবই সূক্ষ্ম। যা পেকে গিয়ে মাটিকে পড়ে যায়। আর আর্দ্রতা পেলে তাতে অঙ্কুরোদ্গম হয়। পার্থেনিয়ামের গাছের জীবনচক্র প্রায় ৩ থেকে ৪ মাসের। যেহেতু এই উদ্ভিদের বাড়বৃদ্ধিতে আলো এবং তাপমাত্রা তেমন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়, তাই এটি সারা বছর ধরে বৃদ্ধি পেতে থাকে এবং ফলও ধরে।
advertisement
কৃষি বিজ্ঞানী ড. কমলেশ বলেন, পার্থেনিয়াম গাছের বিস্তার রোধ করতে সিমাজিন, অ্যাট্রাজিন, অ্যালাক্লোর, ডিউরন সালফেট এবং সোডিয়াম ক্লোরাইড স্প্রে করা যেতে পারে। এর পাশাপাশি জৈবিক সমাধান হিসেবে এক একর জমিতে পোকামাকড় পালন করা যেতে পারে। এছাড়াও, ক্যাসিয়া টোরা, গাঁদা, টেফ্রোসিয়া পুরপিউরিয়া এবং বন্য অমরন্থের মতো গাছপালা রোপণ করেও পার্থেনিয়াম নির্মূল করা যেতে পারে।
advertisement