আলতা পায়ে লুকিয়ে রয়েছে চরম যৌবনের হাতছানি! শুধু বেছে নিতে হবে সঠিক ডিজাইন...
- Published by:Pooja Basu
Last Updated:
পুজোর দিনে সাবেকি লাল পাড় সাদা শাড়ি কিংবা অন্য কোনও রঙের শাড়ির সঙ্গে পায়ে রাঙা আলতার কারুকার্য যেন একটা আলাদা মাত্রা যোগ করে।
বিবাহ এবং পুজোপার্বণে আলতার (Alta) সঙ্গে বাঙালির বন্ধন চিরন্তন। বিয়ে মানেই লাল টুকটুকে সাবেকি বেনারসিতে সেজে ওঠা কনে। যাঁর হাতের নতুন শাঁখা-পলা এবং গা-ভর্তি সোনার গয়নার সঙ্গে হাতে এবং পায়ে শোভা পায় লাল আলতার কল্কা। আর পুজোর দিনে সাবেকি লাল পাড় সাদা শাড়ি কিংবা অন্য কোনও রঙের শাড়ির সঙ্গে পায়ে রাঙা আলতার কারুকার্য যেন একটা আলাদা মাত্রা যোগ করে।
advertisement
তবে আজকাল আলতা পরার চল আর সে-ভাবে না-থাকলেও গ্রামগঞ্জে কিন্তু মহিলারা আজও নিজেদের পা রাঙিয়ে তোলেন আলতার সৌন্দর্যে। আসলে বলা যায় যে, আলতা ছাড়া বঙ্গললনাদের সাজ যেন অসম্পূর্ণই থেকে যায়!আর সামনেই তো পুজোর মরসুম! তাই জেনে নেওয়া যাক, আলতা কীভাবে তৈরি হয়। আর সেই সঙ্গে রইল আলতার নানা সাবেকি নকশার (Alta Designs) বিষয়েও।
advertisement
আলতার উপাদান: আলতা হল এক ধরনের তরল পদার্থ। তবে এটা কোনও তরল উপাদান দিয়ে তৈরি করা হয় না। ফলে তা ত্বকের ক্ষতি করে না। এর মধ্যে সাধারণত হার্বাল উপাদানই থাকে। আর তরল আলতা দিয়ে সুন্দর ভাবে অনায়াসেই ত্বকের উপর নকশা ফুটিয়ে তোলা সম্ভব। আর প্রাকৃতিক তরল আলতা সাধারণত পান পাতা এবং সুপারি দিয়েই তৈরি করা হয়ে থাকে। এই তথ্যটা নিশ্চয়ই শুনে অবাক লাগছে! আমরা সাধারণত দেখে থাকি যে, পান খাওয়ার সময় মুখ, ঠোঁট এবং জিভে লাল রঙ ধরে। ফলে বোঝাই যাচ্ছে আলতার লাল রঙ আসে পান পাতা থেকেই। এর জন্য পান পাতা বেটে নিয়ে বহু সময় ধরে জলে মিশিয়ে রাখতে হয়। আর এ-ভাবেই তৈরি হয় রাঙা তরল আলতা।
advertisement
advertisement
চন্দন এবং আলতার কল্কা: বাঙালি সংস্কৃতিতে লাল-সাদা রঙের ঐতিহ্যই আলাদা। কারণ লাল আলতার সঙ্গে যদি সাদা চন্দনের মেলবন্ধন হয়, তা-হলে তো কথাই নেই। প্রথমে পছন্দসই নকশা বেছে নিয়ে পায়ের ধার বরাবর মোটা করে লাল আলতার কারুকার্য করে নিতে হবে। এর পর লাল আলতার উপর দিয়ে ছোট ছোট করে লাল টিপ দিয়ে নিতে হবে। এ-বার ওই লাল টিপের উপরের দিকে আবার সাদা চন্দন কিংবা সাদা রঙ ব্যবহার করে ছোট্ট ছোট্ট টিপ এঁকে নিতে হবে। পুজোর দিনে লাল-পাড় সাদা শাড়ির সঙ্গে এই ডিজাইন একটা অসাধারণ মাত্রা যোগ করতে পারে। চাইলে হাতেও এই ভাবে আলতার এমন নকশা আঁকা যেতে পারে।
advertisement
আলতার ছিমছাম নকশা: আলতার ছিমছাম নকশার সৌন্দর্য আলাদাই। চটজলদি যে-কোনও উৎসবের দিনেই এই নকশা ফুটিয়ে তোলা সম্ভব। এর জন্য হাত কিংবা পায়ের আঙুলের ডগা আলতা দিয়ে ভরাট করে নিতে হবে। আর তার সঙ্গে হাতের তালু এবং পায়ের পাতার ঠিক মাঝ বরাবর আলতা দিয়ে বৃত্ত এঁকে তা ভরাট করে নিতে হবে। তা-হলেই কমপ্লিট সাবেকি আলতার ছিমছাম ঐতিহ্যবাহী নকশার সৌন্দর্য।
advertisement
রেখায় ফুটবে আলতার নকশা: এই নকশাও হাত এবং পায়ের সৌন্দর্য কয়েক গুণ বাড়িয়ে দেয়। সাবেকি আলতায় যেন লাগে আধুনিকতার ছোঁয়া। এই নকশাও বেশ ছিমছাম। এর জন্য প্রথমে হাত-পায়ের আঙুলের ডগার খুবই অল্প অংশ ভরাট করে নিতে হবে। ভরাট অংশের পাশেই এ-বার আলতা দিয়ে সরু করে দুটি রেখা বা লাইন টেনে নিতে হবে। এ-বার পায়ের পাতার মাঝ-বরাবর একটা মোটা করে রেখা আঁকতে হবে। ঠিক তার উপরেই আর একটি অপেক্ষাকৃত সরু রেখা এঁকে নিতে হবে। আর সরু রেখাটির উপরে ছোট্ট ছোট্ট লাল টিপ দিয়ে নিলেই হল! এটা বেশ স্টাইলিশ একটা লুক এনে দেবে।
advertisement
রাঙা সূর্য: এই নকশা দেখে মনে হবে যে, হাত-পায়ের পাতার মধ্যিখানে যেন সূর্যোদয় হয়েছে! আর এই নকশা সাবেকিয়ানায় মোড়া এবং চিরন্তনও বটে। সূর্যের এই নকশা আঁকার জন্য পায়ের পুরো আঙুল এবং তার আশপাশের অংশ ভরাট করে নিতে হবে। আর এর পর পায়ের পাতার মাঝ বরাবর বড় করে একটা বৃত্ত এঁকে তা ভরাট করে নিতে হবে। আলতায় ভরাট করা সেই বৃত্তের চারপাশে লাল টিপ এঁকে নিতে হবে। এই বিশেষ ডিজাইনে পায়ের সৌন্দর্য কয়েক গুণ তো বেড়ে যায়ই। সেই সঙ্গে আসে সাবেকি লুকও। হাতের ক্ষেত্রেও একই রকম ভাবে ডিজাইন আঁকতে হবে। শুধু আঙুলের নখের মাথা থেকে নিচের দিকের তিনটে কড় আলতা দিয়ে ভরাট করে নিলেই হবে।