ফুটফুটে হয়ে উঠবে মুখ...! রোজ রাতে ঘুমোনোর আগে দু'আঙুলে লাগিয়ে মাখুন এই প্রাকৃতিক 'জিনিস', সকালেই দেখুন তফাৎ

কথায় বলে 'প্যাহলে দর্শনধারী, ফির গুণবিচারী'। আসলে একথা অস্বীকার করা যায় না যে প্রতিটি মানুষ সামনে এলে তাঁর প্রথম দর্শন বেশ অনেকটাই প্রভাব ফেলে তাঁর ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে ধারণা করতে। কিন্তু এই 'দর্শন' নিয়েই হয় মুশকিল। প্রতিদিনের ধুলো, দূষণ সামলাতে গিয়ে বারোটা বাজে আপনার চাঁদ মুখে। আর তখনই আপনিও হয়তো ছোটেন পার্লারে।

কেউ কেউ আবার নামী-দামি জিনিসে বোঝাই করে ফেলেন বাড়ি। কিন্তু জানেন কী, ভারতীয় ঐতিহ্যে এমন একটি প্রাকৃতিক জিনিস যুগে যুগে কালে কালে নারী পুরুষের সৌন্দর্য বাড়াতে কাজ করে চলেছে যা একেবারেই ঘরোয়া।

আমরা জানি, প্রায় প্রতিটি ভারতীয় পরিবারে ঘি একটি সুপারফুড হিসেবে বিবেচিত হয়। এটি কেবল খাবারের স্বাদই বাড়ায় না, ওষুধ হিসেবেও ব্যবহৃত হয়। কিন্তু আপনি কি জানেন যে ঘি আপনার ত্বককেও সুস্থ রাখতেও সাহায্য করতে পারে?

এই প্রসঙ্গে জীবন সুস্থতা বিশেষজ্ঞ এবং মুখের যোগব্যায়াম বিশেষজ্ঞ বিভূতি অরোরা সম্প্রতি বলেন তিনি রান্নাঘরের একটি সাধারণ উপাদান রয়েছে যা ত্বককে উজ্জ্বল করে তুলতে পারে ম্যাজিকের মতো। 'রান্নাঘরে প্রতিদিন খাওয়া একটি উপাদান যা ত্বককে উজ্জ্বল করতে পারে' সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তরে অরোরা বলেন, "ঘি। এটি খাও, লাগাও, মুখে লাগাও, এমনকি চুলেও। আই লাভ ঘি।"

আমরা সকলেই ঘি-এর স্বাস্থ্যকর উপকারিতা সম্পর্কে জানি, তবে জানলে অবাক হবেন যে এটি বহু প্রজন্ম ধরে বিউটি পার্লারে একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। ত্বক নরম করতে, ঠোঁট ফাটা সারাতে এবং ত্বককে প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা দিতে ঘি এর জুড়ি মেলা ভার।

প্রাকৃতিক বার্ধক্য রোধক বৈশিষ্ট্য ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখার জন্য আমরা বাজারে পাওয়া অসংখ্য রাসায়নিক-সমৃদ্ধ পণ্য কিনে ব্যবহার করি। কিন্তু আপনি কি জানেন যে ঘি প্রাকৃতিকভাবে কোলাজেন উৎপাদনকে উদ্দীপিত করে?

শুধু তাই নয়, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ, ঘি ফ্রি র‍্যাডিক্যালের বিরুদ্ধে লড়াই করে, ত্বকের বলিরেখা দূর করে এবং ত্বকের সামগ্রিক স্থিতিস্থাপকতা, টান টান ভাবকে আরও উন্নত করে।

সঠিক নিয়মে ঘি ব্যবহারে ত্বকের হারানো গ্লো ফিরতে বাধ্য। আপনার ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখার জন্য প্রতিদিন ঘি খাওয়াও একটি সহজ অভ্যাস। তবে একইসঙ্গে ঘি ত্বকে লাগানোর নিয়ম জানায় জরুরি।

প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে: আমরা প্রায়শই শুনতে পাই যে বিয়ের ঠিক হলে তরুণীদের তাদের খাদ্যতালিকায় ঘি অন্তর্ভুক্ত করার পরামর্শ দেওয়া হয়। এর প্রধান কারণ হল ঘি স্বাভাবিকভাবেই রক্ত ​​সঞ্চালন এবং ত্বকের রঙ বৃদ্ধি করে। এটি আপনার প্রাকৃতিক রঙও উন্নত করে এবং আপনার ত্বককে একটি প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা দেয়।

৩. ঘি মুখের কালচে ও লালচে ভাব অর্থাৎ ট্যানিং এবং চুলকানির চিকিৎসা করে ম্যাজিকের মতো। আমাদের চারপাশের ক্রমবর্ধমান দূষণের কারণে, আমরা সকলেই মাঝে মাঝে ত্বকে তীব্র লালচে ভাব এবং চুলকানির সম্মুখীন হই। ঘি-তে থাকা প্রদাহ-বিরোধী বৈশিষ্ট্য সংবেদনশীল ত্বকের জন্য উপযুক্ত।

৪. গভীর আর্দ্রতা প্রদান করে ঘি। শীত শীত এই হেমন্তে শুষ্ক ত্বকের অধিকারী ব্যক্তিদের নিয়মিত বিশেষ নিয়মে ঘি অন্তর্ভুক্ত করা উচিত চর্চায়। এটি ত্বকের স্তরের গভীরে প্রবেশ করে এবং ভেতর থেকে তাদের পুনরুজ্জীবিত করে।

ঘি আসলে একটি একটি প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার হিসেবে কাজ করে, যা আপনার ত্বককে নরম, হাইড্রেটেড এবং পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। শুষ্ক ত্বকের অধিকারীদের জন্য ঘি ত্বকের সমস্যার, বিশেষ করে শীতকালে, একটি প্রাকৃতিক সমাধান। এটি কেবল খাবারে যোগ করা যায় না, ত্বকেও প্রয়োগ করা যেতে পারে।

এবার জেনে নিন ত্বকে এটি কীভাবে ব্যবহার করবেন:প্রতি রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে মুখ ধোয়ার পর রাতের ময়েশ্চারাইজার হিসেবে ঘি ব্যবহার করতে পারেন আপনি। দুই আঙুলে ঘি লাগিয়ে বৃত্তাকার গতিতে আলতো করে ম্যাসাজ করতে থাকুন আর তারপর ঘুমাতে যান এবং পরের দিন সকালে মুখ ধুয়ে ফেলুন।

ঘি এর ফেসপ্যাক:ঘুমোনোর আগে ঘি এবং হলুদের একটি ফেসপ্যাক তৈরি করে ১৫ মিনিটের জন্য ত্বকে লাগিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এটি ত্বককে উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে।

মুখের শুষ্কতা রোধে ঘি চমৎকার কার্যকরী:এছাড়াও, যদি আপনার ঠোঁট ফাটা থাকে, তাহলে ঘুমাতে যাওয়ার আগে প্রতিদিন রাতে সামান্য ঘি লাগান এবং পরদিন সকালেই দেখুন অন্যন্য পেলবতা। মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে ভাল ফলাফল দেখতে পাবেন, নিশ্চিত।