

প্রাথমিক ভাবে আমাদের ধারণা ছিল যে কোভিড ১৯ ভাইরাস কেবল শ্বাসযন্ত্র আর হৃদযন্ত্রকেই বিকল করে দেয়। কিন্তু যত দিন যাচ্ছে, যত সারা বিশ্ব জুড়ে একের পর এক নানা গবেষণা চলছে এই রোগের উপসর্গ আর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে, দেখা যাচ্ছে যে এই ভাইরাস আমাদের শরীরের স্নায়ু এবং মস্ত্ষ্কির উপরেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।


সেই মর্মেই সম্প্রতি নতুন করে উদ্বেগ ডেকে নিয়ে এল স্পেনের ইউনিভার্সিতাত ওবার্তা দে কাতালুনিয়ার অধ্যাপক জেভিয়ার করিয়া এবং তাঁর সহযোগী দলের এক গবেষণা। তাঁরা বলছেন যে অনেক ক্ষেত্রেই এই কোভিড ১৯ ভাইরাস মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতাকে প্রতিহত করে দিচ্ছে। এর প্রভাবে সাময়িক ডিলেরিয়ার মুখোমুখি হয়ে পড়ছেন রোগীরা।


কোনও কিছু বুঝতে তাঁদের সময় লেগে যাচ্ছে, সে কারণে একটা মানসিক সমস্যা তৈরি হচ্ছে। কোনও কিছু বললেও এ কারণে তাঁরা সাড়া দিচ্ছেন দেরিতে, সব মিলিয়ে একটা মানসিক বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে।


পাশাপাশি জেভিয়ার সতর্ক করছেন এই বলে যে এর সঙ্গে গায়ে জ্বর থাকলে দুশ্চিন্তার কারণ রয়েছে!তবে এ প্রসঙ্গে সরাসরি এক বিপদসঙ্কেতের কথা জানা গিয়েছে এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের বেলর কলেজের নিউরোলজির অধ্যাপক জুলফি হানিফের কাছ থেকে।


তাঁর গবেষণা, যা কি না প্রকাশিত হয়েছে ইউরোপিয়ান জার্নাল অফ এপিলেপসিতে, তা বলছে যে রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেলেও বিপদ কাটছে না। দেখা যাচ্ছে যে মানবদেহের স্নায়ুর উপরে এক ক্ষতিকর প্রভাব বিস্তার করে ফেলছে এই ভাইরাস।


আর এখান থেকেই তৈরি হচ্ছে আশঙ্কার বিষয়। হানিফের মতে, মানবদেহের অনেক কোষকলা নতুন করে তৈরি হয় ঠিকই, কিন্তু মস্তিষ্কের ক্ষেত্রে তা হয় না। ফলে একবার যদি করোনাভাইরাসের প্রভাবে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বিঘ্নিত হয়, তা হলে তার প্রভাব হবে দীর্ঘস্থায়ী, হয় তো বা আমৃত্যু!


হানিফের গবেষণা বলছে যে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের মস্তিষ্কের সামনের অংশটি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। যার ফলে তাঁদের চিন্তাভাবনা করার ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। কোনও কিছু বুঝতে বা উপলব্ধি করতে লেগে যাচ্ছে প্রয়োজনের চেয়ে অনেক বেশি সময়। এই এক কারণে ঘুমের ওষুধ বা নার্ভের ওষুধ খেলে ঘুম আর ভাঙতেই চাইছে না! সমস্যা হচ্ছে কথা বলা নিয়েও, তা আটকে আটকে যাচ্ছে! ছোটখাটো ব্যাপারেও তৈরি হচ্ছে নানা ভুল ধারণা!