9 Minute Parenting Rule: ৩-৩-৩, দিনে ঠিক '৯' মিনিট অবশ্যই দিন আপনার সন্তানকে, বাবা-মায়েরা '9 Minute Parenting Rule' জানুন

*বাবা-মায়েরা প্রায়শই তাদের সন্তানদের লালন-পালনের সময় ছোট ছোট জিনিস মিস করেন, যা তাদের সন্তানের আচরণ, আত্মবিশ্বাস এবং মানসিক বিকাশের উপর স্থায়ী প্রভাব ফেলতে পারে। অনেক শিশু মনোবিজ্ঞানী বিশ্বাস করেন, দিনে '৯' মিনিটকে সবচেয়ে সংবেদনশীল বলে মনে করা হয়। এই '৯' মিনিটের মধ্যে যদি বাবা-মা তাদের সন্তানদের সঙ্গে ভালো আচরণ করেন, তাহলে তাদের মানসিক এবং মানসিক বিকাশ উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নত হতে পারে।

*আমেরিকান অভিভাবকত্ব বিশেষজ্ঞ লরা মার্কহ্যামের (আহা প্যারেন্টিং) মতে, এই '৯' মিনিট শিশুর দিনের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ সময়কালে পড়ে। ঘুম থেকে ওঠার পর পরই '৩' মিনিট, স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পর '৩' মিনিট এবং ঘুমানোর ঠিক আগে '৩' মিনিট। এই তিনটি সময়ের মধ্যে, শিশুদের মন সবচেয়ে বেশি আবেগাপ্লুত থাকেএবং তারা তাদের বাবা-মায়ের আচরণ দ্রুত বুঝতে পারে।

*৩-৩-৩, অথবা ৯ মিনিট, শিশুদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ঘুম থেকে ওঠার পর আপনার আচরণে বিশেষ পর্যায় থাকতে হবে। বেশিরভাগ শিশুর সকাল তাড়াহুড়ো এবং বকা খাওয়ার সঙ্গে কেটে যায়। 'তাড়াতাড়ি ওঠো!', 'তুমি দেরি করে ফেলছো!', 'দাঁত ব্রাশ কর!', এই ধরণের খোলামেলা কথা শিশুর মধ্যে উত্তেজনা তৈরি করতে পারে।

*ঘুম থেকে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে যদি আপনি আপনার শিশুকে আলতো করে জড়িয়ে ধরেন, হাসিমুখে 'শুভ সকাল' বলুন এবং মাত্র দুই মিনিট তাদের সঙ্গে বসেন, তাহলে তাদের দিনটি ইতিবাচকভাবে শুরু হয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই আচরণে সন্তানরা নিরাপদ বোধ করে, তাদের মেজাজ স্থিতিশীল করে এবং পড়াশোনায় তাদের মনোযোগ বৃদ্ধি করে।

*স্কুল থেকে ফিরে যখন একটি শিশু স্কুল থেকে ফিরে আসে, তখন তারা অনেক কিছু নিয়ে ভাবছে। তাদের হয়তো ঝগড়া হয়েছে, পরীক্ষায় ফেল করেছে, অথবা কেবল ক্লান্ত। যদি বাবা-মা তাদের ফোনে ব্যস্ত থাকেন অথবা কেবল বলেন, 'ড্রেস চেঞ্জ করে নাও' তাহলে শিশুটি আবেগগতভাবে পিছিয়ে যেতে শুরু করে।

*মাত্র তিন মিনিটের উষ্ণ আচরণ, একটি মিষ্টি হাসি, একটি দ্রুত আলিঙ্গন এবং 'তোমার দিন কেমন গেল?'-এর মতো এক বা দুটি প্রশ্ন স্কুল থেকে ফিরে আসার সঙ্গে সঙ্গেই জিজ্ঞাসা করেন, তাহলে তা শিশুর মনে স্বস্তি দেয়। এই তিন মিনিট তাদের আত্মবিশ্বাস এবং যোগাযোগ দক্ষতা উল্লেখযোগ্যভাবে শক্তিশালী করে।

*ঘুমানোর আগে সময়ঃ রাত শিশুদের জন্য খুবই সংবেদনশীল সময়। এই সময়ে তিরস্কার, রাগ বা দূরত্ব তাদের ঘুম ব্যাহত করতে পারে এবং তাদের মনকে উদ্বেগে ভরিয়ে দিতে পারে। ঘুমানোর আগে মাত্র তিন মিনিট শান্ত পরিবেশে কাটান। উদাহরণস্বরূপ, হালকা গল্প বলা, দিনের কথা বলা, আপনার সন্তানকে ভালবাসার আলিঙ্গন দেওয়া, অথবা তার মাথায় হাত বুলানো। এই ছোট ছোট মুহূর্তগুলি আপনার সন্তানকে নিরাপত্তা, বিশ্বাস এবং ইতিবাচক চিন্তাভাবনায় ভরিয়ে দেয়। তারা শান্ত, সুখী এবং আবেগগতভাবে শক্তিশালী হয়ে ওঠে।

*এই নয় মিনিট কেন গুরুত্বপূর্ণ? এই সময়ে শিশুরা তাদের বাবা-মায়ের আবেগের প্রতি সবচেয়ে বেশি সংবেদনশীল। এই ৯ মিনিট শিশুর অবচেতনে সঞ্চিত থাকে। শিশুকে আরও নিরাপদ, আত্মবিশ্বাসী এবং খুশি বোধ করায়। শিশুদের মধ্যে বিরক্তি এবং আচরণগত সমস্যা কমায়। বাবা-মা এবং শিশুদের মধ্যে মানসিক বন্ধনের ভিত্তি শক্তিশালী করে।

*বাবা-মা কীভাবে এই টিপসগুলি গ্রহণ করতে পারেন? সকালে ঘুম থেকে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে ফোন থেকে দূরে থাকুন এবং আপনার সন্তানকে আপনার পূর্ণ মনোযোগ দিন। স্কুল থেকে ফিরে অন্য কিছু করার আগে আপনার সন্তানের দিকে তাকিয়ে হাসুন, আলিঙ্গন করুন। ঘুমানোর আগে টিভি বা মোবাইল ফোন বন্ধ করুন এবং তিন মিনিটের জন্য আপনার সন্তানের সঙ্গে সময় কাটান। আপনার সন্তানকে বাধা দেবেন না, তাদের কথোপকথন শেষ করতে দিন। এই ৯ মিনিট প্রতিদিনের রুটিনে পরিণত করার চেষ্টা করুন, এটি দীর্ঘমেয়াদে বিশাল পার্থক্য আনবে। ধীরে ধীরে আপনি লক্ষ্য করবেন আপনার সন্তান আরও সুখী, শান্ত এবং আরও সংযুক্ত বোধ করছে।