Single Screen Cinema Hall Closed|| আর্থিক সংকটে কঙ্কালসার অবস্থা! সিঙ্গেল স্ক্রিন থিয়েটারের সঙ্গে হারাচ্ছে বাঙালির নস্ট্যালজিয়া
- Published by:Shubhagata Dey
- news18 bangla
Last Updated:
করোনার জেরে দীর্ঘদিন সিনামাহলগুলি বন্ধ থাকার দরুন ব্যাবসায় চরম ক্ষতি হয়েছে হল মালিকদের। বন্ধ হচ্ছে একের পর এক সিঙ্গেল স্ক্রিন সিনেমা হল।
*একসময়ের বেশ জনপ্রিয় প্রেক্ষাগৃহ ছিল উত্তর কলকাতার প্রাচী, পূরবী, ছবিঘর। লকডাউনে সব সিনেমা হলই বন্ধ। অসম্ভব চাপের মুখে রয়েছেন হল মালিকেরা। পূরবীর বিক্রি হয়ে গিয়েছে। হল বাঁচাতে প্রাচীর কর্ণধার হল প্রাঙ্গণে খুলছেন রিটেল আউটলেট, ছবিঘরের অবস্থাও ভাল নয়। এই হল গুলোর সঙ্গে কি ফুরিয়ে যাবে বাঙালির নস্ট্যালজিয়া? উত্তর খুঁজল নিউজ 18 বাংলা... তথ্যঃ অরুনিমা দে। ছবিঃ সংগৃহীত।
advertisement
*কলেজ কাট, কিংবা স্কুল কাটও হতে পারে। কোনও মতে পকেটের খুচরো পয়সা গুনে, প্রাইভেট বাসে চেপে, সোজা সিনেমা হল। সত্তর, আশি এমনকি নব্বইয়ের দশকেও এই দৃশ্য ছিল খুবই পরিচিত। তখন অভিভাবকরা সামান্যই হাত খরচ দিতেন। কেতা মারা পকেটমানির চল ছিল না। সিঙ্গেল স্ক্রিনে ছবি দেখা যেন স্বর্গ। যদি অন্ধকার প্রেক্ষাগৃহে বান্ধবীর হাত ধরে কর্নার সিট পাওয়া যায়, তাহলে তো একেবারে কেল্লা ফতে। তবে এ সব এখন প্রায় অতীত।
advertisement
*তালা পড়েছে একাধিক প্রেক্ষাগৃহের দরজায়। আবার অনেকে নিচ্ছেন অন্য পন্থা। প্রাচীর প্রেক্ষাগৃহ প্রাঙ্গণে তৈরি হচ্ছে এক জামা কাপড়ের আউটলেট। ব্যবসা বাঁচানোর জন্য কর্ণধার বিদিশা বসু নিয়ে আসছেন অন্য এক বিজনেস মডেল। ঐতিহ্য হারিয়ে কিংবা মালিকানা বদল করে নয়। নতুন করে সাজিয়ে দর্শক ধরে রাখতে চেয়েছেন এই প্রেক্ষাগৃহের কর্ণধার।
advertisement
*শিয়ালদহ চত্বরে পেরিয়ে, খানিক এগোলেই মহাত্মা গান্ধী রোড। সেখানে একসময় মাথা তুলে দাঁড়িয়ে থাকতো পূরবী সিনেমা হল। একের পর এক হিট বাংলা ছবি দেখানো হতো এই হলে। সর্বদায় ঝুলতো হাউজফুল বোর্ড। তবে প্রায় দশ বছর হয়ে গিয়েছে এই হলে ছবি দেখানো বন্ধ। ভুতুড়ে বাড়িতে পরিণত হয়েছে পূরবী। এই হলটিকে একটি শপিং মল চেনের কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন পূরবীর মালিকেরা।
advertisement
*শিয়ালদহ চত্বরেই রয়েছে ছবিঘর প্রেক্ষাগৃহ। ১৯৩৮ সালে হরিপ্রিয় পাল শুরু করেছিলেন এই হল। ছবিঘর ছাড়াও মিনার, বিজলী এই দুটো হলের মালিক তিনি। তাবুতে ছবি দেখাতেন হরি প্রিয় বাবু। সিনেমার প্রতি অসম্ভব ভালোবাসা ছিল তাঁর। সে ভালোবাসা থেকেই হল বানানো। এখন নাতি সুরঞ্জন ব্যবসা চালান। তবে অবস্থা খুবই খারাপ। কর্ণধার সুরঞ্জন পালও মনে করেন আগামী দিনে হল মালিকদের প্রাচীর মতো কোনও পন্থা নিতে হবে। না হলে বাঁচানো সম্ভব হবে না সিঙ্গেল স্ক্রিন।
advertisement
advertisement
*বাঙালি এখনও ভুলেনি সত্যজিৎ রায়ের অপুর সংসার। অপু অপর্ণার দারুণ প্রেম, প্রবল তবে নরম। সদ্য বিবাহিত আপু-অপর্ণা ছুটির দিনে সিনেমা দেখতে যায়। সে দৃশ্য যেন আজও আমাদের চোখের সামনে ভেসে ওঠে। বাঙালির কাছে প্রেক্ষাগৃহ এতটাই ব্যক্তিগত, এতটাই জরুরি। কালের নিয়মে আমরা আধুনিক হয়েছি, পেয়েছি প্রযুক্তি। তবে হারিয়েছি ছোট্ট ছোট্ট পাওয়া। হারাচ্ছে সিঙ্গেল স্ক্রিন থিয়েটার ও তার সঙ্গে জমা আবেগ।