নয়া জাতীয় শিক্ষানীতি অনুযায়ী, দেশের বাকি রাজ্যে স্নাতক স্তরের পড়াশোনা ৩ বছর থেকে বাড়িয়ে চার বছর করা হয়েছে। বদল আনা হয়েছে আরও নানা ক্ষেত্রেও। এতদিন এই শিক্ষানীতিকে তুঘলকি বলে সমালোচনা করতে দেখা গিয়েছিল রাজ্য সরকারকে। কিন্তু, সম্প্রতি জানা গিয়েছে, কেন্দ্রের শিক্ষানীতির বহু অংশই মেনে নিয়েছে রাজ্য।
ইতিমধ্যেই UGC-র নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে। আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকেই নয়া নিয়ম কার্যকর করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে রাজ্যের তরফে। শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জাতীয় শিক্ষানীতির একাধিক নিয়ম মানতে হবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে। মূলত, নতুন জাতীয় শিক্ষানীতির ক্রেডিট বেসড সিস্টেম প্রয়োগের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য শিক্ষা দফতর।
২০২০ সালে সংসদে কোনও আলোচনা ছাড়াই নয়া শিক্ষানীতি পাশ করে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। যার অন্যতম বিষয় ছিল স্নাতক স্তরের পাঠ্যক্রম তিন বছরের বদলে চার বছর করে ফেলার। গত বছর ডিসেম্বর মাসেই এই স্তরের পাঠক্রম চূড়ান্ত করেছিল ইউজিসি। তারপরেই সব রাজ্যকে তা বাস্তবায়নের জন্য অনুরোধ পাঠায়। শিক্ষা দফতরের নির্দেশের সঙ্গে ইউজিসির সেই মূল সুপারিশপত্রটিও দেওয়া হয়েছে।
আগামী জুলাই মাস থেকে কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরু হচ্ছে। সূত্রের খবর, এই শিক্ষাবর্ষ থেকেই চার বছর স্নাতকের নতুন পাঠ্যক্রম শুরু করতে চাইছে রাজ্য। ইউজিসি অবশ্য অনেক আগেই এই বিষয়ে চিঠি পাঠিয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে। এবার রাজ্যের তরফেও সেই বার্তা গেল। সূত্রের খবর, উচ্চ শিক্ষা দফতরের পক্ষ থেকে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নতুন পাঠ্যক্রম তৈরি করার জন্য। প্রসঙ্গত, স্নাতক স্তরের পড়াশোনা ৩ বছর থেকে বেড়ে ৪ বছর হওয়ার পাশাপাশি, স্নাতকোত্তর স্তরের পড়াশোনা ২ বছর থেকে কমে ১ বছর করা হয়েছে নতুন শিক্ষানীতিতে।
প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দেবজ্যোতি কোনার সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে খুব তাড়াতাড়িই নতুন পাঠ্যক্রম শুরু হতে চলেছে। প্রয়োজন মতো তৈরি হবে নতুন পরিকাঠামোও। এদিকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়েও নতুন সিলেবাস নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন সিলেবাস চালু করার বিষয়ে প্যানেল গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
চার বছরের স্নাতক কোর্স সংক্রান্ত উচ্চশিক্ষা দফতরের নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, আসন্ন শিক্ষা বর্ষ থেকেই এই নিয়ম চালু করতে হবে। এবছর উচ্চমাধ্যমিকে পাশ করে যে পড়ুয়ারা কলেজে ভর্তি হবেন, তাঁরা চার বছরের স্নাতক কোর্সে ভর্তি হবেন। আন্ডারগ্র্যাজুয়েট স্তরে পড়াশোনায় ভোকেশনাল ট্রেনিং, স্কিল ডেভেলপমেন্ট, ইন্টার্নশিপ ইত্যাদিও যুক্ত করা হচ্ছে।