কলকাতা : কলকাতা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে মোবাইলের ফ্ল্যাশ লাইট এবং টর্চ জ্বালিয়ে অস্ত্রোপচার! মঙ্গলবার এমনই ঘটনার সাক্ষী থাকল মেডিক্যাল কলেজ। অস্ত্রোপচারের পর রোগীর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে বলেই জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।এদিন বেলা তিনটে নাগাদ সুপার স্পেশালিটি ব্লকের সেকেন্ড ফ্লোরে চলছিল অস্ত্রোপচার। আচমকাই বিদ্যুৎ পরিষেবা বন্ধ করে দিতে হয়, কারণ ফাস্ট ফ্লোর এর সার্ভার রুমে আগুন লেগে গিয়েছে। আগুন যাতে কোনওভাবেই গ্রাস না করতে পারে এই বিল্ডিংয়ের বিদ্যুৎ পরিষেবা বন্ধ করে দেয় দমকল।
ঠিক সেই সময় ৪১ বছর বয়সী এক মহিলার কিডনির টিউমারের অস্ত্রোপচার করছিলেন চিকিৎসক সুনির্মল চৌধুরীর তত্ত্বাবধানে এক দল চিকিৎসক। বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় স্বাভাবিক ভাবেই অত্যন্ত সমস্যার সম্মুখীন হন চিকিৎসকরা। চিকিৎসকরা তৎক্ষণাৎ সিদ্ধান্ত নেন অস্ত্রোপচার করতে হবে মোবাইলের ফ্ল্যাশ লাইট জ্বালিয়েই। চিকিৎসক সুনির্মল চৌধুরী জানান "আমরা দুপুর ২ ট নাগাদ অপারেশন শুরু করি। কিডনি সহ টিউমার বাদ দেওয়ার অস্ত্রোপচার চলছিল। অনেকটাই করেও ফেলেছিলাম, কিন্তু আচমকা আগুন লাগার জন্য পাওয়ার কাট হয়ে যায়। রোগীকে ওই অবস্থায় তো ফেলে রাখা যায় না। তাই তড়িঘড়ি সিদ্ধান্ত নিয়ে আর্টিফিসিয়াল আলো দিয়েই বাকি ৪৫ মিনিট মত অস্ত্রোপচার করতে হয়। এরম অভিজ্ঞতা আগে হয় নি! রোগী এখন ভালো আছেন।"
প্রসঙ্গত মঙ্গলবার বেলা তিনটে নাগাদ কলকাতা মেডিকেল কলেজের সুপারস্পেশালিটি ব্লকের ফার্স্ট ফ্লোরের সার্ভার রুমে ধোঁয়া দেখতে পাওয়া যায়। ক্রমশই ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়তে থাকে সেকেন্ড ফ্লোরেও। হাসপাতালের অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থা এবং দমকলের তিনটি ইঞ্জিনে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এই ঘটনায় হতাহত কেউ হননি। ধোঁওয়ার কারণে রোগীর এবং রোগীর পরিবারের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। প্রায় ঘন্টাখানেকেরও কম সময়ের মধ্যে আগুন এবং ধোঁওয়া পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনে দমকল। তবে এদিন পূর্বপরিকল্পিত দুটি অস্ত্রোপচার বাতিল করতে বাধ্য হয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।