Hezbollah Explained: হিজবুল্লাহ কারা? লেবাননের এই গোষ্ঠীই কি তবে হামাসকে মদত জোগাচ্ছে? জানুন বিশদে
- Published by:Siddhartha Sarkar
- trending desk
Last Updated:
What is Hezbollah Group: এই গোষ্ঠী একটি ছায়া দল থেকে বড়সড় সশস্ত্র বাহিনীতে পরিণত হয়েছে। লেবানন এবং তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে এদের ব্যাপক প্রভাব রয়েছে। হিজবুল্লাহ আসলে শিয়া ইসলামিস্ট গোষ্ঠী। ইরানের ইসলামিক রিপাবলিকের নীতি অনুসরণ করে তারা।
প্রায় ছয় মাসেরও বেশি সময় ধরে গাজা যুদ্ধের সমান্তরালে লড়াই চলছে লেবাননের হিজবুল্লাহ এবং ইজরায়েলের মধ্যে। আর এই সশস্ত্র প্রতিপক্ষের মধ্যে বিস্তৃত সংঘাতের ঝুঁকি নিয়ে উদ্বেগ ক্রমেই বাড়ছে। আর আশঙ্কার উল্লেখ করে ইজরায়েল রবিবার জানিয়েছে যে, নর্দার্ন ফ্রন্ট বরাবর এক সম্ভাব্য যুদ্ধের প্রস্তুতির পরবর্তী ধাপ সম্পন্ন করা হয়েছে। কিন্তু হিজবুল্লাহর ভূমিকাটা ঠিক কী? সেই বিষয়ে বিশদে আলোচনা করে নেওয়া যাক। Photo: AP
advertisement
হিজবুল্লাহর উৎপত্তি কী?- ১৯৭৫ সাল থেকে ১১৯০ সাল পর্যন্ত চলা লেবাননের গৃহযুদ্ধের সময় ইরানের রেভলিউশনারি গার্ডস ১৯৮২ সালে হিজবুল্লাহ গঠন করে। মূলত ১৯৭৯ সালের ইসলামিক রেভলিউশন ছড়িয়ে দেওয়া এবং ১৯৮২ সালে লেবাননে অনুপ্রবেশকারী ইজরায়েলি সেনাবাহিনীর সঙ্গে লড়াই করার জন্য এটা ইরানের প্রচেষ্টার অংশ। Photo: AP
advertisement
এই গোষ্ঠী একটি ছায়া দল থেকে বড়সড় সশস্ত্র বাহিনীতে পরিণত হয়েছে। লেবানন এবং তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে এদের ব্যাপক প্রভাব রয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-সহ ওয়েস্টার্ন গভর্নমেন্টগুলি এই গোষ্ঠীকে একটি জঙ্গিগোষ্ঠীর তকমা দিয়েছে। এখানেই শেষ নয়, সৌদি আরব-সহ সুন্নি মুসলিম গালফ আরবের দেশগুলিও হিজবুল্লাহকে জঙ্গিগোষ্ঠী বলেই মনে করে। হিজবুল্লাহ আসলে শিয়া ইসলামিস্ট গোষ্ঠী। ইরানের ইসলামিক রিপাবলিকের নীতি অনুসরণ করে তারা। Photo: AP
advertisement
হিজবুল্লাহ কীভাবে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ল?- হিজবুল্লাহ হল প্রতিরোধ অক্ষ-এর একটি শক্তিশালী অংশ। পশ্চিম এশিয়ার বিস্তীর্ণ অংশ জুড়ে ইরান-সমর্থিত গোষ্ঠীগুলির একটি জোট। এর মধ্যে প্যালেস্তাইনি ইসলামিস্ট আন্দোলন হামাসও অন্তর্ভুক্ত। গত বছরের ৭ অক্টোবর ইজরায়েলের উপর হামলা করে গাজা যুদ্ধের সূচনা করেছে এই হামাস। প্যালেস্তাইনিদের সঙ্গে সংহতির কথা ঘোষণা করে গত ৮ অক্টোবর ফ্রন্টিয়ার এলাকায় ইজরায়েলি ঘাঁটিগুলিতে গুলিবর্ষণ শুরু করে হিজবুল্লাহ। Photo: AP
advertisement
এরপর থেকে প্রায় প্রতিদিনই গুলিবর্ষণ চলতে থাকে। এর পাশাপাশি হিজবুল্লাহ রকেট এবং ড্রোন উৎক্ষেপণ করছে। আবার অন্যদিকে ইজরায়েলও বিমান হামলার পাশাপাশি গোলাবর্ষণ করে চলেছে। সাম্প্রতিক কয়েক সপ্তাহে দুই পক্ষই এই হামলা আরও বাড়িয়েছে। গত ৭ অক্টোবর থেকে এখনও পর্যন্ত লেবাননে ইজরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছে প্রায় ২৪০ হিজবুল্লাহ জঙ্গি। এর পাশাপাশি সিরিয়ায় ইজরায়েলি বিমান হামলায় আরও ৩০ জন প্রাণ হারিয়েছে। Photo: AP
advertisement
advertisement
হিজবুল্লাহ কতটা শক্তিশালী?- লেবাননের গৃহযুদ্ধের পর অন্যান্য গোষ্ঠী নিরস্ত্র হয়ে গেলেও হিজবুল্লাহ ইজরায়েলি বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য তাদের অস্ত্র রেখেছিল। দেশের দক্ষিণে প্রধানত শিয়া মুসলিম অধ্যুষিত অংশ দখল করে রেখেছিল। বছরের পর বছর ধরে চলা গেরিলা যুদ্ধের কারণে ২০০০ সালে প্রত্যাহার করে ইজরায়েল। Photo: AP
advertisement
২০০৬ সালে হিজবুল্লাহ ইজরায়েলের সঙ্গে পাঁচ সপ্তাহ ধরে চলা যুদ্ধে সামরিক অগ্রগতি প্রদর্শন করে। যা ইজরায়েলে প্রবেশ করার পরে তা আরও ঘনীভূত হয়। দুই সেনাকে অপহরণ করে এবং অন্যদের হত্যা করে। সংঘাতের সময় হিজবুল্লাহ ইজরায়েলে হাজার হাজার রকেট উৎক্ষেপণ করে। যেখানে লেবাননে প্রায় ১২০০ মানুষ নিহত হন। এঁদের মধ্যে বেশিরভাগই নাগরিক। আর অন্যদিকে ১৫৮ জন ইজরায়েলিও প্রাণ হারিয়েছেন। যাঁদের মধ্যে বেশিরভাগই সেনা। Photo: AP
advertisement
হিজবুল্লাহর সেনাশক্তি ২০০৬ সালের পর আরও উন্নত হয়। ওই গোষ্ঠীর বক্তব্য, তাদের রকেট ইজরায়েলের সমস্ত অংশেই হামলা করবে। গাজা যুদ্ধের সময় সারফেস-টু-এয়ার মিসাইল ব্যবহার করে হামলার কথা ঘোষণা করে হিজবুল্লাহ। শুধু তা-ই নয়, ইজরায়েলে বিস্ফোরক ড্রোন হামলাও চালায় তারা। হিজবুল্লাহ নেতা সৈয়দ হাসান নাসরাল্লাহ বলেন, এই গোষ্ঠীতে রয়েছে প্রায় ১ লক্ষ যোদ্ধা। আবার আমেরিকান সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সির ওয়ার্ল্ড ফ্যাক্টবুক বলছে, ২০২২ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী হিজবুল্লাহর রয়েছে প্রায় ৪৫,০০০ যোদ্ধা। Photo: AP
advertisement
হিজবুল্লাহর কি আঞ্চলিক ক্ষমতা রয়েছে?- ইরাকি শিয়া সেনা-সহ গোটা অঞ্চল জুড়ে ইরান-সমর্থিত গোষ্ঠীগুলিকে অনুপ্রেরণা এবং মদত জুগিয়েছে হিজবুল্লাহ। এটি সিরিয়ার যুদ্ধে তার মিত্র প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে সাহায্য করতে একটি বড় ভূমিকা পালন করেছে, যেখানে এখনও যোদ্ধা রয়েছে। সৌদি আরবের বক্তব্য, ইয়েমেনে লড়াই করার ক্ষেত্রে ইরানের মিত্রশক্তি হুথিদের সঙ্গে মিলে লড়াই করেছিল হিজবুল্লাহ। তবে ওই গোষ্ঠী এই দাবি নাকচ করে দিয়েছে। Photo: AP
advertisement
লেবাননে হিজবুল্লাহর ভূমিকা ঠিক কী?- হিজবুল্লাহর প্রভাব তার অস্ত্রশস্ত্র এবং লেবাননের বেশ কিছু শিয়ার সমর্থন উভয়ের দ্বারা প্রভাবিত হয়। লেবাননের শিয়ারা বলেন যে, এই দলটি ইজরায়েলের হাত থেকে লেবাননকে রক্ষা করে। এতে সরকারের মন্ত্রী এবং পার্লামেন্টের আইনপ্রণেতারা রয়েছেন। লেবাননের দলগুলি আবার হিজবুল্লাহর বিরোধিতা করে। আর জানায় যে, দলটি রাষ্ট্রকে দুর্বল করে দিয়েছে এবং একতরফা ভাবে লেবাননকে যুদ্ধের ময়দানে টেনে নিয়ে গিয়েছে। Photo: AP
advertisement
১৯৯২ সালে লেবাননের রাজনীতিতে প্রবেশ করেছে তারা। নির্বাচনে লড়াই করছে। আর প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা সুন্নি রাজনীতিবিদ রফিক আল-হারিরিকে হত্যার পরে লেবানন থেকে সিরিয়া সেনা প্রত্যাহার করার পর ২০০৫ সাল থেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করতে শুরু করে হিজবুল্লাহ। ২০০৮ সালে হিজবুল্লাহ এবং লেবাননের রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে সশস্ত্র সংগ্রাম শুরু হয়। এরপরে এই গোষ্ঠীর জঙ্গিযোগের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করার অঙ্গীকার করে সরকার। হিজবুল্লাহ যোদ্ধারা বেইরুটের বিস্তীর্ণ অংশের দখল নেয়। Photo: AP
advertisement
বিভিন্ন হামলার অভিযোগ: লেবাননের আধিকারিক এবং ওয়েস্টার্ন ইন্টেলিজেন্সের বক্তব্য, হিজবুল্লাহর সঙ্গে যোগ থাকা গোষ্ঠীগুলি ওয়েস্টার্ন এম্ব্যাসিগুলিতে আত্মঘাতী হামলা চালায়। ১৯৮০ সালে পশ্চিমীদের নিশানা এবং অপহরণও করে। সেই সব হামলা এবং পণবন্দি করার প্রসঙ্গে হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নাসরাল্লাহ ২০২২ সালের একটি সাক্ষাৎকারে বলেন যে, ওই সব হামলাগুলি চালিয়েছিল ছোট ছোট গোষ্ঠীগুলি। হিজবুল্লাহর সঙ্গে যাদের কোনও যোগ নেই। Photo: AP