SCO Meeting: ভারতের বিরুদ্ধে 'ষড়যন্ত্র' চিনের! রাশিয়াও এবার পাশ থেকে সরে গেল ভারতের? মিলে গেল ইঙ্গিত! কারণ কী জানেন?
- Published by:Suman Biswas
- news18 bangla
Last Updated:
SCO Meeting: বিবৃতিতে ২২ এপ্রিল জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগাঁও ঘটে যাওয়া সন্ত্রাসী হামলার উল্লেখ ছিল না, যেখানে ২৬ ভারতীয়র হত্যাকাণ্ড হয়েছিল।
এক দিন আগে বৃহস্পতিবার চিনের কিংদাওতে অনুষ্ঠিত শাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন (SCO)-এ প্রতিরক্ষা মন্ত্রীদের বৈঠকে ভারত যৌথ বিবৃতিতে স্বাক্ষর করতে অস্বীকার করেছে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং এই বিবৃতিকে খারিজ করে দিয়েছেন কারণ এটি সন্ত্রাসবাদ এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলিতে ভারতের অবস্থানকে দুর্বল করে।
advertisement
বিশেষ করে বিবৃতিতে ২২ এপ্রিল জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগাঁও ঘটে যাওয়া সন্ত্রাসী হামলার উল্লেখ ছিল না, যেখানে ২৬ ভারতীয়র হত্যাকাণ্ড হয়েছিল। কিন্তু এতে পাকিস্তানের বালুচিস্তানে উগ্রপন্থী কার্যকলাপের উল্লেখ ছিল। ভারত এটিকে পাকিস্তানের পক্ষে ঝুঁকেছে বলে মনে করেছে।
advertisement
এই ঘটনাটি কেবল চিন এবং পাকিস্তানের কৌশলকেই উন্মোচিত করেনি, বরং ভারতের পুরনো বন্ধু রাশিয়ার অবস্থানকেও প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। রাশিয়া কি এই বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছে? অথবা তারা কেন এই বিবৃতিতে ভারতের উদ্বেগ অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা করেনি?
advertisement
SCO-এর বৈঠকে ভারত স্পষ্টভাবে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে। রাজনাথ সিং বলেছেন, সন্ত্রাসবাদ এবং শান্তি একসঙ্গে চলতে পারে না। SCO সদস্যদের সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়া উচিত এবং এর পৃষ্ঠপোষকদের জবাবদিহি করতে হবে। ভারত পহেলগাঁও হামলার উল্লেখ বিবৃতিতে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানিয়েছিল, যা পাকিস্তান এবং চিন প্রত্যাখ্যান করেছিল।
advertisement
ফলস্বরূপ SCO কোনও যৌথ বিবৃতি জারি করতে পারেনি। এটি একটি অস্বাভাবিক পরিস্থিতি ছিল, কারণ SCO চার্টার অনুযায়ী সিদ্ধান্ত সর্বসম্মতভাবে নেওয়া হয়। যদি কোনও সদস্য আপত্তি তোলে, তবে বিবৃতি জারি হয় না। ভারতের আপত্তির কারণে এই বৈঠকটি যৌথ বিবৃতি ছাড়াই শেষ হয়েছিল।
advertisement
কিন্তু এই প্রসঙ্গে রাশিয়ার অবস্থান অস্পষ্ট ছিল। তথ্য অনুযায়ী, এটি স্পষ্ট নয় যে রাশিয়া এই বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছে কিনা, কারণ বৈঠকের শেষে কোনও যৌথ বিবৃতি জারি হয়নি। তবুও এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন যে রাশিয়া ভারতের উদ্বেগকে কতটা সমর্থন করেছে। রাশিয়া SCO এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং ভারতের দীর্ঘদিনের কৌশলগত অংশীদার। তারা এই বৈঠকে তাদের অবস্থান স্পষ্টভাবে প্রকাশ করেনি। এটি ভারতের জন্য উদ্বেগের বিষয়, কারণ রাশিয়া এবং ভারতের মধ্যে ঐতিহাসিকভাবে শক্তিশালী সামরিক এবং কূটনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে।
advertisement
রাশিয়ার নীরবতা বা নিরপেক্ষতাকে বিভিন্নভাবে দেখা যেতে পারে। প্রথমত, রাশিয়া বর্তমানে ইউক্রেন যুদ্ধ এবং পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার কারণে অর্থনৈতিক এবং কূটনৈতিকভাবে চিনের উপর বেশি নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। ২০২৫ সালের মে মাসে মস্কোতে রাশিয়ান প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের মধ্যে অনুষ্ঠিত শীর্ষ সম্মেলনে উভয় দেশ SCO এবং BRICS এর মতো মঞ্চের মাধ্যমে তাদের কৌশলগত জোটকে আরও গভীর করার কথা বলেছিল। এই প্রসঙ্গে রাশিয়ার জন্য চিনের সঙ্গে তাদের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দেওয়া স্বাভাবিক হতে পারে, যদিও এর অর্থ ভারতের উদ্বেগকে উপেক্ষা করা।
advertisement
দ্বিতীয়ত, রাশিয়ার নীরবতাকে ভারত-চিন উত্তেজনায় নিরপেক্ষ থাকার কৌশল হিসেবেও দেখা যেতে পারে। ভারত এবং রাশিয়ার মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকা সত্ত্বেও রাশিয়া সাম্প্রতিক বছরগুলিতে SCO এবং BRICS এর মতো মঞ্চে চিনের নেতৃত্বকে মেনে নিয়েছে। এটি সম্ভব যে রাশিয়া এই বিষয়ে ভারতের প্রকাশ্য সমর্থন থেকে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যাতে চিনের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।
advertisement
তবে, এই অবস্থানটি ভারতের জন্য একটি সংকেত হতে পারে যে রাশিয়ার অগ্রাধিকারগুলি পরিবর্তিত হচ্ছে। আগে রাশিয়া ভারতের সঙ্গে তাদের সম্পর্ককে অগ্রাধিকার দিয়েছিল, বিশেষ করে সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহ এবং কৌশলগত সহযোগিতার ক্ষেত্রে। কিন্তু ইউক্রেন যুদ্ধের পর রাশিয়ার ভূ-রাজনৈতিক অবস্থান দুর্বল হয়েছে এবং তারা চিনের সঙ্গে তাদের জোটকে আরও শক্তিশালী করছে। যদি রাশিয়া এই বিবৃতিতে স্বাক্ষর করার সমর্থন করত, তবে এটি ভারতের জন্য একটি বড় ধাক্কা হত। কারণ এটি ভারতের সন্ত্রাসবাদ বিরোধী নীতির বিরুদ্ধে যেত।
advertisement
ভারত এই বৈঠকে তার কৌশলগত স্বায়ত্তশাসন স্পষ্টভাবে প্রদর্শন করেছে। রাজনাথ সিং কেবল সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেননি, বরং তিনি বলেছেন যে ভারত সন্ত্রাসবাদের কেন্দ্রগুলিকে লক্ষ্যবস্তু করতে দ্বিধা করবে না। ভারতের এই দৃঢ়তা SCO-তে তার অবস্থানকে শক্তিশালী করে, কিন্তু রাশিয়ার অস্পষ্টতা ভারত-রাশিয়া সম্পর্কের একটি নতুন জটিলতা নির্দেশ করে।