নানা পরীক্ষা-নীরিক্ষার মধ্য দিয়ে ছেলেবেলা কাটিয়েছেন অ্যালবার্ট আইনস্টাইন। নোবেল পুরষ্কার বিজয়ী পদার্থবিজ্ঞানী মূলত ‘আপেক্ষিকতা তত্ত্ব’ আবিষ্কারের জন্য বিখ্যাত। ১৯২১ সালে পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন তিনি। তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানে তার বিশেষ অবদান এবং আলোক-তড়িৎ ক্রিয়া সম্পর্কিত গবেষণার জন্য তিনি এই পুরস্কার পান তিনি।
তার মস্তিষ্কের সেরেবেলাম অর্থাৎ মাথার একেবারে পিছনে ঘাড়ের কাছে থাকে যে অংশটি কেটে স্লাইস করা হয়েছে। এ ছাড়াও সেরেব্রাল কর্টেক্স যেটি থাকে ব্রেইনের ওপরের অংশে, সেটিও কেটে পাতলা স্লাইস করা হয়েছিল গবেষণার জন্য। অতঃপর আইনস্টাইনের মস্তিষ্ক নিয়ে গবেষণা পরিচালনা করেন ড. থমাস হার্ভে। ১৯৮৫ সালে একটি গবেষণাপত্র বের করেন তিনি। স্নায়ুবিজ্ঞানীরা মানুষের মস্তিষ্ককে মোট ৪৭ টি ভাগে চিহ্নিত করেছেন, যাকে বলে ব্রডম্যান ম্যাপ। এ ম্যাপ অনুসারে মানুষের ব্রেইনের ৯ ও ৩৯ নম্বর এরিয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
মানুষের প্ল্যানিং, স্মৃতি আর মনযোগ এর জন্য এরিয়া ৯ কাজ করে। অন্যদিকে এরিয়া ৩৯ কাজ করে ভাষা আর জটিল সমস্যা নিয়ে। ড. টমাস হার্ভের দল গবেষণা করে দেখেন, এই দুই এরিয়ার নিউরন এবং গ্লিয়াল সেল এর অনুপাত নিয়ে। তারা আইনস্টাইনের মস্তিষ্কের এই অনুপাতকে তুলনা করেছিলেন গড় বয়স ৬৫ বছরের ১১ জন মৃত ব্যক্তির ব্রেইনের সঙ্গে। দেখা যায়, আইনস্টাইনের মস্তিষ্কের একমাত্র বাম দিকের ৩৯ নম্বর এরিয়াতে একটি নিউরনের জন্য একাধিক গ্লিয়াল সেল ছিল, যা অন্য ১১ টি মস্তিষ্কে ছিল না। এই ফলাফলের ভিত্তিতে ব্যাখ্যা করা হয়- যেহেতু এরিয়া ৩৯ এ বেশি গ্লিয়াল সেল, তার মানে আইনস্টাইনের মস্কিষ্ক বেশি শক্তি ব্যয় করে।
যার কারণেই হয়তো তার চিন্তা শক্তি ও তাত্ত্বিক জ্ঞান সাধারণের চেয়ে বেশি ছিল। ২০০৬ সালে এরকমই আরেকটি গবেষণা প্রকাশিত হয়, যেখানে বলা হয়েছে আইনস্টাইনের মস্তিষ্কের গ্লিয়াল সেল এর গঠন (যেমন বড় এস্ট্রোসাইট প্রসেস) অন্যদের চেয়ে আলাদা ছিল। আরও এক গবেষণায় জানা যায়, আইনস্টাইনের মস্তিষ্কের ওজন ১ হাজার ২০০ গ্রাম। যেখানে সাধারণ মানুষের মস্তিষ্কের ওজন থাকে ১৪০০ গ্রাম। এ ছাড়াও তার মস্তিষ্কের এরিয়া ৯ অন্যদের তুলনায় পাতলা এবং নিউরনবহুল ছিল।