শৈশবের সেই মানুষগুলো আজ আর আসে না, কোথায় হারিয়ে গেল সেই শৈশব...
Last Updated:
হারিয়ে যাওয়া ছোটবেলা যেন বার বার পিছু ডাকে। অফিসের ব্যস্ত জীবন, কলেজের তাড়া, কিম্বা আজকালকার বাচ্চারাও হারিয়ে ফেলছে তাদের শৈশব। বেশ কয়েক বছর আগেও পাড়ায় আসত বুড়ির চুলওয়ালা। নানা রঙের দেখতে এই বুড়ির চুলওয়ালাকে আসতে দেখলেই ছুটে চলে যেতে ইচ্ছে করত তাঁর কাছে। মাত্র কয়েক পয়সার বিনিময়ে পাওয়া যেত সেই মিষ্টি খাবার। মুখে দিলেই গলে যেত। ঘণ্টা বাজিয়ে পাড়ায় আসতেন তিনি। আজকাল আর আসেন না তিনি। তারা সকলেই আজ পথ ভুলেছে। যেমন বাচ্চারাও আজকাল আর এই সব খাবার খেতে চায় না। তারা চায় দামি আইসক্রিম। বা শপিং মলে গিয়ে কেনা কাটা বা মোবাইলে ডুবে থাকতেই তারা ভালবাসে। তাই হারিয়ে যাচ্ছে এই ছোঁয়াগুলো। photo source collected
advertisement
মনে আছে সেই কাঠি আইসক্রিমওয়ালাকে? কাধে একটা কাঠের বাক্স নিয়ে সে পাড়ায় পাড়ায় হেকে যেত, 'কাঠি আইসক্রিম...' কিন্তু তাঁকে আর দেখা যায় না। গরমের দুপুরে তাঁর ওই ডাক শুনলেই মনের ভেতরটা কেমন যেন করে উঠত। বাবা মায়ের কাছে বায়না জুড়ে দিতেও সময় লাগত না। কখনও সেই লাল-নীল আইসক্রিম কিনে দিত মাত্র ২৫ পয়সা কী আরও কম দামে। সে যে কী আনন্দ! আর আজ হাতে ম্যাগনাম থাকলেও বোধহয় সেই আনন্দ আমরা ফিরে পাই না। বাচ্চারাও আর দেখে না সেই আইসক্রিমওয়ালাকে। কোথায় যেন হারিয়ে গেল তাঁরা সকলে। photo source collected
advertisement
হারিয়ে যাচ্ছে শৈশবের বিকেলের খেলা। এখন স্কুল থেকে ফিরেই বাচ্চাকে ছুটতে হয় নাচের ক্লাস, নয়তো সাঁতার ক্লাস, কিম্বা হয়তো টিউশনে ছুটতে হয় তাদের। তাই বাড়ি ফিরে হয় কম্পিউটারে গেম খেলে বা মোবাইলে গেম খেলে। কিন্তু কয়েক বছর আগেও বাচ্চারা মাঠে ছুটে ফুটবল, কানামাছি, লুকোচুরি, আরও কত কী খেলত। কিন্তু এখন আর তারা খেলে না। সব যেন কেমন বদলে যাচ্চে, হারিয়ে যাচ্ছে শৈশব। photo source collected
advertisement
গরমের দুপুর। ঘড় ঘড় করে চলছে পাখা। স্কুল ছুটি। মায়ের আদেশে ঘুমোতেই হবে। বিছানায় গিয়ে চোখ টিপে পড়ে থাকা। চারিদিক নিস্তব্ধ। হঠাৎ সেই নিস্তব্ধতাকে ভেঙে কানে আসত এক সুরেলা বেহালার সুর। মন ছুটে চলে যেত ওই লোকটার সুরের সঙ্গে এ গলি থেকে সে গলি। বেহালা বাজিয়ে যেত লোকটা। দশটাকাতেই পাওয়া যেত ওই বেহালা। তবে বেহালা কিনে যত বারই বাজানোর চেষ্টা করা হত কোনও দিনই বাজানো যেত না। ওই সুর যেন শুধু ওই বেহালা বাজানো লোকটাই জানত। অনেক বছর হয়ে গেছে তারা আর আসে না। পরের প্রজন্ম আর শুনবে তার সুর। photo source collected
advertisement
স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে প্রেমপত্র পাননি, এমনটা হত না বছর দশেক আগে। সাইকেল থেকে উড়ো চিঠি ছুঁড়ে দিয়ে চলে যেত ছেলেটি। মেয়েটি লুকিয়ে পড়ত সেই চিঠি। কখনও বাথরুমে গিয়ে লুকিয়ে পড়া। আবার কখনও খাতার পাতায় লুকিয়ে রেখে সেই চিঠি পড়ে মন যেন ডানা মেলে দিত যখন তখন। তারপর সেই চিঠি পড়ত বড়দের হাতে। সে এক কাণ্ড। আজকাল আর হয় না এসব। সবার হাতে মোবাইল। টুক করে একটা এসএমএস করে সব জানিয়ে ফেলা যায়। তবে সেই মজা আর কই। এখন প্রেম হচ্ছে ফোনে ভাঙছে ফোনে। তাই কবরে চলে গেছে সেই পুরনো প্রেম পত্র। photo source collected
advertisement
মাঠে খেলে গায়ে ধুলো মেখে, এক ঝাঁপে পুকুরে। সেখানে মজার সাঁতার। ডুব সাঁতার আরও কত কী। জল থেকে যেন উঠতেই ইচ্ছে করত না। বাড়ি থেকে লাঠি নিয়ে কেউ তেড়ে না এলে ওঠার নাম হত না পুকুর থেকে। কিন্তু আজকালকার বাচ্চারা পুকুরে নামে না। তারা সুইমিংপুলে যায়। সাঁতার কাটে। তারা জানে না পুকুরের মজা। হারিয়ে যাচ্ছে সব কিছুই জীবন থেকেই। photo source collected